ভারত বিরোধিতা মানেই পাকিস্তানপ্রীতি ভারতের প্রতি নাখোশ কাশ্মীরীরা। তাহলে কি তারা পাকিস্তানের পক্ষে? এটা একটা বাইনারি। এই বাইনারির সৃষ্টি হয়েছে ব্রিটিশদের ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাক্ট-১৯৪৭ এর মাধ্যমে। সেখানে বলা আছে, ব্রিটিশ ভারতের প্রিন্সলি স্টেটগুলো দুটি ডমিনিয়নের (ভারত অথবা পাকিস্তান) যে কোনো একটিতে যেতে পারবে। সেখানে তৃতীয় বিকল্প-স্বাধীনতার কথা ছিল না। বিতর্ক ছিল, যোগদানের প্রক্রিয়া নিয়ে। কেউ বলেছে, শাসক নিজে যোগ দেবেন। কেউ বলেছে না, জনগণকে গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্তের সুযোগ দিতে হবে। তবে, সেখানেও গণভোটের ক্ষেত্রে জনগণের সামনে বিকল্প থাকবে ২টা। ভারত অথবা পাকিস্তান। স্বাধীনতার কোনো সুযোগ জনগণকে দেওয়া হয়নি ওই আইনে। পরে জাতিসংঘ অন্তত ২৭টি রেজ্যুলেশন পাস করেছে কাশ্মীর বিষয়ে। ওই সব রেজ্যুলেশনে নানাভাবে বলা হয়েছে, ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া উচিত জনগণকে। কিন্তু, সেখানে জনগণের সামনে গণভোটে কয়টি বিকল্প থাকবে? এখনও প্রায় সব বিশেষজ্ঞ মনে করেন, আইন ইতিহাস অনুযায়ী বিকল্প দুটি: ভারত বা পাকিস্তান। কিন্তু জনগণের কাছে ‘আজাদি’র চেয়ে বেশি উচ্চারিত আর কোনো শব্দ এখন কাশ্মীরে শোনা যায় না। ভারত থেকে প্রায়ই অভিযোগ ওটে, কাশ্মীরিরা আজাদির নামে পাকিস্তানের মদতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। আজাদির শ্লোগানের পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকা কতখানি তা আলোচনার আগে স্পষ্ট হওযুা দরকার পাকিস্তানের প্রতি মানুষের সমর্থন কেমন? আমার একাধিক বন্ধু বলেছিলেন, পাকিস্তান আমাদের কাছে দ্বিতীয় কাবার মতো অপেক্ষাকৃত উদারপন্থী বন্ধুরা বলত, পাকিস্তান দেশ হিসেবে নানাভাবে সংকটাপন্ন। কিন্তু, সকল সমস্যা মাথায় নিয়েও পাকিস্তানই একমাত্র দেশ, কাশ্মীরিদের অধিকারের কথা বলে আসছে সবসময়। পাকিস্তানই এখনও কাশ্মীরিদের জাতিসংঘ ঘোষিত ‘গণভোটের’ দাবি আন্তর্জাতিক ইস্যু হিসেবে বাঁচিয়ে রেখেছে। হোক না সেটা বদ উদ্দেশ্যে! যদি বিশ্বের অন্যসব দেশের মতো পাকিস্তানও কাশ্মীরিদের ভুলে যেত তাহলে কী হতো? এমনকি ভারতপন্থী রাজনৈতিক দলও পাকিস্তানকে অস্বীকার করতে পারে না। এক রাজনীতিক একবার ঠাট্টা করে বলছিলেন, ‘আমরা ভারতে থাকতে চাইলেও তিনটি বিষয়ে আমাদের পাকিস্তানের পক্ষেই থাকতে হবে। এক, ক্রিকেট, দুই. ঈদের চাঁদ এবং তিন. সারায়ে তাকবির শ্লোগান। আমরা ভারতকে বলি, এই তিন বিষয়ে আমরা পাকিস্তান। এতে তোমরা নাখোশ হয়ো না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন