ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও গোমতী সেতুর অসমাপ্ত কাজ স্থায়ীভাবে করার কারণে সেতু দিয়ে এক লেনে বাস চলাচলের ফলে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ফলে মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
গত রোববার থেকে সেতুর অসমাপ্ত কাজ শুরু হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগে আছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতকাল সোমবারও ছিল যানজট। এই যানজট গোমতী সেতু থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত রয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানজটের মাত্রাও বেড়েই চলছে। ফলে গতকাল সোমবার ভোর ৬টায় কুমিল্লা থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোও ৮/৯ ঘন্টা ধরে মেঘনা সেতুর কাছে আটকে থাকে। দীর্ঘক্ষণ আটকিয়ে থাকায় কারণে অনেকেই হতাশা হয়ে আবার কুমিল্লাই ফিরে এসেছেন। সোমবার সকাল থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
লাকসাম থেকে ঢাকাগামী তিশা পরিবহনের বাসের চালক রফিকুল ইসলাম ও হিমাচল বাসের চালক আক্তার হোসেন দৈনিক ইনকিলাকে বলেন, তীব্র যানজটে আটকা পড়ে তিন কিলোমিটার পথ পেরোতে তিন ঘণ্টা লাগছে। কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী সিল্ক লাইন পরিবহনের বাসের চালক নুরুল আলম গতকাল সকাল সাড়ে আটটায় মহাসড়কের ভবেরচর এসে যানজটে আটকা পড়ে চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। কখন ঢাকায় পৌঁছতে পারব জানা নেই। যানজটে আটকে অনেকেই পড়েছেন বিপাকে।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নবাবপুরের পিকআপচালক আবদুল কায়ইম বলেন, নরসিংদী থেকে পোলট্টি মুরগি নিয়ে রওনা দিয়ে রাত আটটায় ঢাকার কাঁচপুরে যানজটে আটকা পড়ি। এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে সময় লেগেছে ১২ ঘণ্টা। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে না পারায় গাড়িতে ২০টি মুরগি মারা গেছে।
কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী বাসের চালক সোহাগ মিয়া দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দুপুর ১২ টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে দুপুর ৪ টা পর্যন্ত মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজায় যানজটে আটকে আছেন। অথচ যানজট না হলে চার ঘণ্টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পৌঁছানোর কথা। ব্যস্ততম এই সড়কের গতকাল সোমবার যানজটে পড়ে ভিআইপি যাত্রীসহ বিদেশ গমনের যাত্রীরা যানজটে আটকা পরে ঘন্টার পর ঘন্টা একই স্থানে বসে থাকতে দেখা গেছে। নোয়াখালী গামী বাচ্চু মিয়া ও আবদুল মতিন বলেন, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং নিয়ম না মেনে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাড়ি চালাবার কারণে যানজট লেগে থাকে। দীর্ঘ যানজটের কারণে ভবেরচর এলাকা পর্যন্ত ১০/১২ কিলোমিটার রাস্তা বহু যাত্রী ছোট ছোট শিশু, ভারী ব্যাগ নিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা থেকে গত রবিবার ঢাকা যেতে কিংবা ফিরে আসতে সময় লাগছে এখন কমপক্ষে ৭/৮ ঘন্টা। সেই চিত্র আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে গতকাল সোমবার ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের ভবেরচর থেকে কাচঁপুর ব্রিজ পর্যন্ত মহাসড়ক অচলাবস্থায় তৈরি হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সেতুর অসাপ্ত কাজ করার কারণে সৃষ্টি হওয়া যানজট এখনো চলছে। ভবেরচর থেকে যানজট প্রকট আকারে ধারন করেছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে হাইওয়ে পুলিশ রাত-দিন চেষ্টা চালাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন