রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যুগে যুগে ষড়যন্ত্র

মোহাম্মদ আবদুল গফুর | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

গত সোমবার দৈনিক ইনকিলাব-এর শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: ‘বাংলা বলা নিষেধ।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কলকাতা কফি হাউসে বাংলায় কথা বলা যাবে না। হিন্দিতে কথা বলতে হবে। কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের একজন কর্মী এই কথা জানিয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা এক তরুণীর পোস্টে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খবর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের।

বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কফি হাউসটির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন কয়েকজন। এতে যোগ দেয় বাংলা ভাষার প্রচার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনও। কফি হাউস কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিন এই তরুণীর বিরুদ্ধে আমহাস্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এই তরুণীর নাম ইন্দ্রানী চক্রবর্তী। তার দাবি, বুধবার বিকেলে তারা তিন বন্ধু কফি হাউসটিতে যান। মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়া নিয়ে কফি হাউসের এক কর্মীর সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। ইন্দ্রানী বলেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন কফি হাউসে যাই। আগেও কয়েকবার মোবাইলে চার্জ দিয়েছি, সমস্যা হয়নি। কিন্তু বুধবার আমাদের বলা হয় চার্জ দেওয়া যাবে না। কারণ জানতে চাইলে আমাদেরকে বলা হয়, মালিকের সাথে কথা বলুন। তিনি বলেন, আমরা জানি যে, কফি হাউসের মালিক বলে কেউ নেই। একটি সমবায় এই কফি হাউস চালায়। পরে কথিত মালিকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলে দেন, হিন্দিতে কথা বলতে হবে। কারণ তিনি বাংলা বোঝেন না।

ইন্দ্রানী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আবার হিন্দিতে চার্জ দেওয়ার অনুরোধ জানালে এই ব্যক্তি বলেন, হামনে একবার বোল দিয়া নেহি হোগা। আব নিকলো রুমছে। ইয়ে তো বঙ্গালি হায়। ইয়ে রুমমে বাংলা নেহি চলেগা।

যে কলকাতা এক সময় অবিভক্ত বাংলার রাজধানী হিসাবে বাংলা ভাষার রাজধানী বলে বিবেচিত হতো সেই কলকাতায় বাংলা ভাষার এ দুর্দশা, এটা কল্পনা করতেও খারাপ লাগে। অথচ এটাই করুণ বাস্তবতা! তবে এরও কারণ আছে। ব্রিটিশ শাসনামলের শেষ দিকে একবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা মহাত্মা গান্ধী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে লেখা এক পত্রে জানতে চেয়েছিলেন, ভারত স্বরাজ (স্বাধীনতা) লাভ করলে স্বাধীন ভারতের সাধারণ ভাষা হবে কোন্ ভাষা? অবলীলাক্রমে রবীন্দ্রনাথ জবাবে লিখেছিলেন, হিন্দী। তবে বহু ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সে সময়ে বলেছিলেন, বাংলা, হিন্দী ও উর্দু এই তিন ভাষারই যোগ্যতা রয়েছে স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হবার। বহু ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর এই বক্তব্যের বাস্তবতা ইতিহাসে প্রমাণিত হয়েছে। এখন উপমহাদেশে যে তিনটি দেশ ইতিহাসের নিরিখে স্বাধীন দেশ হিসাবে বিরাজমান, সেই বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা যথাক্রমে বাংলা, হিন্দী ও উর্দু। তবে বাংলাভাষার এই অনন্য মর্যাদা লাভের পেছনে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে, যা বিবেচনায় না আনলে বাংলা ভাষার এই মর্যাদা লাভের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনুধাবন করা যাবে না।

সকলেই জানেন, অবিভক্ত ভারতবর্ষ দীর্ঘ পৌনে দু’শ বছর সা¤্রাজ্যবাদী ব্রিটেনের শাসনাধীন ছিল। তখন ইংরেজিই ছিল শাসক শক্তির ভাষা হিসাবে এদেশের রাষ্ট্রভাষা। বাংলা, হিন্দী, উর্দু ছিল বিশেষ বিশেষ অঞ্চলের জনগণের ভাষা। এখানে উল্লেখ্য যে, পৃথিবীতে কোনো ভাষারই জন্ম হঠাৎ করে বা রাতারাতি হয় না। আর কোনো ভাষার রাষ্ট্রভাষা হওয়ার ঘটনা তো একান্তভাবে রাজনৈতিক ঘটনার উপর নির্ভরশীল।

সে নিরিখে দেখা যায়, যদি ব্রিটেনের পরাধীনতা থেকে সেকালের ভারতবর্ষ অবিভক্ত হিসাবে স্বাধীনতা লাভ করতো, তাহলে অবিভক্ত ভারতবর্ষে হিন্দী ভাষীদের বিপুল সংখ্যাধিক্যের কারণে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলই সম্ভবপর হতো না। কিন্তু ব্রিটেনের পরাধীনতা থেকে তদানীন্তন পূর্ববঙ্গ। (আজকের বাংলাদেশ) প্রথম স্বাধীনতা লাভ করে উনিশ শো সাতচল্লিশ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হিসাবে। এতে পাকিস্তান আন্দোলনের মূলভিত্তি হিসাবে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের ১৯৪০ সালের যে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবকে বিবেচনা করা হয় সেই প্রস্তাবে উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাসমূহকে নিয়ে একাধিক স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবি গৃহীত হয়।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে দুটি দলের অবস্থান ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রভাগে। এর একটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। অন্যটি নিখিল ভারত মুসলিম লীগ। এর প্রথমটি দাবি করতো তারা ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে। পক্ষান্তরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের দাবি ছিল, কংগ্রেস হিন্দু-প্রধান সংগঠন হিসাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে আর মুসলিম লীগ প্রতিনিধিত্ব করে মুসলিম জনগণের। দুই প্রধান দলের এই পরস্পর-বিরোধী দাবির কারণে ১৯৪৬ সালে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে মুসলিম লীগের দাবিই জয়যুক্ত হয়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ১৯৪০ সালের ২৩ জুন লাহোরে যে সম্মেলনে সাবেক ভারতবর্ষকে হিন্দু ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাসমূহকে নিয়ে একাধিক স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি তোলার প্রস্তাব পাশ হয় তাতে ‘পাকিস্তান’ নামের কোনো উল্লেখ ছিল না।

তবে পরদিন কোনো কোনো হিন্দু পত্রিকায় খবরটি প্রকাশিত হয় ‘পাকিস্তান প্রস্তাব গৃহীত’ এই শিরোনামে। মুসলিম লীগও পরে পরিকল্পিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে পাকিস্তান আন্দোলন হিসাবে মেনে নেয়।

১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগের এই দাবি জয়যুক্ত হওয়ায় ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসের ১৪ তারিখে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে পাকিস্তানের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। এভাবে বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু নতুন এই রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাসমূহে এবং এর মধ্যে অবস্থানে ছিল হিন্দু-প্রধান বৈরী রাষ্ট্র ভারতের।
এসময়ে বাংলার দুই মুসলিম লীগের দুই নেতা হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী ও আবুল হাশিম এবং কংগ্রেস নেতা শরৎচন্দ্র বসু (নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ভাই) মিলে ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে সার্বভৌম বাংলা হিসাবে বিশেষ একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের যে প্রস্তাব দেন, তাতে মুসলিম লীগ নেতা মুহম্মদ আলী জিন্নাহর সম্মতি থাকলেও গান্ধী, নেহরু, প্যাটেল প্রমুখ অবাঙ্গালী হিন্দু নেতা এবং বাঙ্গালী হিন্দু মহাসভা নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রবল বিরোধিতার কারণে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।

সে সময় বাঙ্গালী হিন্দু মহাসভা নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এমন বক্তব্যও দেন যে, ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে। নইলে বাঙ্গালী হিন্দুদের চিরকালের জন্য মুসলমানদের গোলামী করতে হবে। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তার পূর্বসূরীরা ১৯০৫ সালে প্রশাসনের সুবিধার জন্য এককালের বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত বিশাল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিকে বিভক্ত করে ঢাকা রাজধানীসহ পূর্ববঙ্গ-আসাম নামে একটি নতুন প্রদেশ সৃষ্টি করা হলে এর দ্বারা বাংলা মায়ের অঙ্গচ্ছেদের মতো পাপ হবে বলে কতই না মায়াকান্না করেছিলেন।

ইতিহাস গবেষকগণ মনে করেন, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে হিন্দু নেতাদের এ মায়াকান্নার ব্যাপারে নেতৃত্ব দেন কলকাতা-প্রবাসী হিন্দু জমিদারগণ। কারণ তাদের আশংকা ছিল ১৯০৫ সালের সেই বঙ্গভঙ্গের পরিণতিতে পূর্ববঙ্গে তাদের জমিদারীর উপর তাদের প্রভাব হ্রাস পাবে। তাছাড়া পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ অধিবাসী মুসলমান হওয়ায় ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের ফলে মুসলমানদের পশ্চাদপদতাও কেটে যেতে থাকবে। অর্থাৎ মুসলিম বিরোধী সম্প্রদায়িক মনোভাবই তাদের একাজে প্ররোচিত করে।

যে হিন্দু নেতৃবৃন্দ পলাশী বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা হারানোর সকল ব্যাপারে শাসক ইংরেজদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন তাদের এ আকস্মিক রুদ্রমূর্তি দেখে তারা ভয় পায়। মাত্র কয়েক বছরের মাথায়ই বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করে তাদের পুরাতন মিত্রদের শান্ত করার ব্যবস্থা করে।

এবার বাংলাভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিয়ে কিছু কথা। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাসিম ও শরৎচন্দ্র বসুর উদ্যোগে যে স্বাধীনতা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হয়, তা যদি সফল হতো তাহলে ভাষা আন্দোলন করার কোনো প্রয়োজনই হতো না। কারণ সেক্ষেত্রে বাংলাই হতো সার্বভৌম বাংলার একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই প্রচেষ্টার ব্যর্থতার পেছনে ছিল গান্ধী, নেহরু, প্যাটেল প্রমুখ অবাঙ্গালী হিন্দু নেতার সঙ্গে বাঙ্গালী হিন্দু মহাসভা নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর বিরোধিতা।

শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এই বিরোধিতার কারণ হিসাবে বলেন, সার্বভৌম বাংলা বাস্তবায়িত হলে বাঙ্গালী হিন্দুদের চিরকালের জন্য বাঙ্গালী মুসলমানের গোলাম হয়ে যেতে হবে। একই বক্তব্যের মূলেও ছিল তাঁর উগ্রসাম্প্রদায়িক মনোভাব। অথচ ১৯০৫ সালে যখন পূর্ববঙ্গ ও আসাম নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হয়েছিল, তখন এর দ্বারা বাংলা মায়ের অঙ্গহানী হবে বলে মত দিয়েছিলেন কলকাতা প্রবাসী পূর্ববঙ্গের হিন্দু জমিদাররা। এই যে একশ্রেণির হিন্দুর মুসলিম বিদ্বেষের ফলেই আজ এককালের বাংলা ভাষার রাজধানী বলে বিবেচিত কলকাতার কফি হাউসে বাংলায় কথা বলাও নিরাপদ নয়, যা ইতিপূর্বেই আমরা উল্লেখ করেছি।

আজকের এ লেখার ইতি টানার আগে আমরা আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ করতে চাই, যা অতীতে বাংলা ভাষার অগ্রগতির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পন্ডিতদের ধারণা, বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছিল এদেশে পাল রাজবংশের রাজত্বকালে। সে নিরিখে পাল আমলে বাংলা ভাষার দিন কাটছিল ভালভাবেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে অল্পদিনের মধ্যে পাল আমলের বাংলা ভাষার এ সৌভাগ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অল্পদিনের মধ্যে দাক্ষিনাত্য থেকে আসা সেন বংশের কাছে পরাজিত হন পাল শাসকরা।

বিজয়ী সেন বংশের আমলে বাংলা ভাষার চরম দুর্ভাগ্য নেমে আসে। তারা ছিলেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী। তারা সংস্কৃতকে দেবতার ভাষা বলে বিশ্বাস করতেন। সংস্কৃতকে তারা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেন। তাদের এই ভূমিকায় উৎসাহিত হয়ে এক শ্রেণির ব্রাহ্মণ পন্ডিত তখন ফতোয়াও দেন যে, যারা দেবতার ভাষা সংস্কৃতকে অগ্রাহ্য করে মনুষ্য কোনো ভাষা (যেমন বাংলাভাষা) ব্যবহার করবে তাদের রৌরব নরকে সারা জীবন শাস্তি ভোগ করতে হবে।

ভারতের যে কলকাতা মহানগরীর কফি হাউসে বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ হওয়ায় মনে হচ্ছে, সেন শাসনামলের বাংলা বিরোধী ভূমিকাই যেন তারা পালন করে চলেছে। বাংলা ভাষার সৌভাগ্য, সেন শাসনামলেই বখতিয়ার খিলজী সেনদের পরাজিত করে বাংলা জয় করেন। এরপর শুরু হয় সুদীর্ঘ মুসলমান শাসন আমল। মুসলিম শাসকরা নিজেরা বাংলাভাষী না হলেও বাংলাসহ সকল ভাষাকে স্বাধীনভাবে ব্যবহার ও উন্নয়নের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এ তথ্য আমরা জানতে পারি বিশিষ্ট গবেষক ড. দীনেশচন্দ্র সেনের কাছ থেকেও। তিনিই সর্বপ্রথম বাংলা ভাষার উন্নয়নে মুসলমানদের ঐতিহাসিক অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রস্তাব রচনা করেন। এরপর বাংলা ভাষার উন্নয়নের আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ হারিয়ে যায় পার্টিশনের প্রাক্কালে সার্বভৌম বাংলা আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণে। মুসলিম লীগের নেতা শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিম এবং কংগ্রেস নেতা শরৎচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে পরিচালিত সার্বভৌম বাংলা আন্দোলন যদি সফল হতো তা হলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার কফি হাউসে এখন বাংলায় কথা বলা নিষিদ্ধ হতো না।

১৯৪৭ সালের পার্টিশন এবং পরবর্তীতে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্ট স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়। সুতরাং বাস্তবে আজ যা আমরা দেখতে পাচ্ছি তা এই যে, এককালের বাংলাভাষার রাজধানী বলে বিবেচিত কলকাতায় এখন এমন সব লোকদের সীমাহীন আধিপত্য যারা কফি হাউসে বাঙ্গালীদেরকেও হিন্দীতে কথা বলতে বাধ্য করে। পক্ষান্তরে বাংলাভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে সফল সংগ্রাম করে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হয়ে উঠেছে বাংলা ভাষার নতুন রাজধানী।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
llp ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৪৯ এএম says : 0
Bangla alphabets are not that good. They have too many edges, corners, orientation disorder to write smoothly. It slows down writers hand.
Total Reply(2)
Yourchoice51 ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪২ এএম says : 4
সংস্কৃত অক্ষরগুলো মনে হয় খুবই সুন্দর, তাই না? তুমি একটা আস্ত বোকা।
llp ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম says : 4
Moreover Bangla alphabets take too many space, memory space, and ink, which means it consumes too many neuron in our brain. This is the reason we have too many poor students.
মজদুর জনতা ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৩৩ এএম says : 0
বাংলা ভাষার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্র্রকিত আপনার লিখনীর মাধ্যমে যতটুকু জানতে পেরেছি।ধন্যবাদ আপনাকে।।
Total Reply(0)
Yourchoice51 ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪৩ এএম says : 0
ওখানে বাংলা বলা যাবেনা; কিন্তু বাংলাদেশের সর্বত্র হিন্দি বলা যাবে; তাই নয় কি?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন