সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শরীয়তপুরের বিস্তীর্ণ জনপদ পদ্মায় বিলীন

মো. হাবিবুর রহমান হাবীব, শরীয়তপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৫২ এএম

পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমে আসলেও চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের উত্তর কেদারপুর গ্রামের রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটারসহ প্রায় ২৮০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

গত বছর এ এলাকার প্রায় দেড় হাজার পরিবার তাদের ভিটামাটি হারিয়ে গৃহহীন। মুলফৎগঞ্জ হাসপাতালসহ মুলফৎগঞ্জ বন্দর, নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়ক পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন পদ্মা নদী শান্ত থাকলেও নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে নতুন করে ভাঙন আতংক দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসী।

জেলার নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের উত্তর কেদারপুর গ্রামের তারা মিয়া বেপারী জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ সন্ধ্যায় তার বাড়ি বেশ কিছু জায়গাসহ একটি দুইতলা ভবনের একাংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পরপরই মঙ্গল বেপারীর একটি ঘরসহ বাড়ির কিছু অংশ পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়।

একই রাতে উত্তর কেদারপুর এলাকার দারুস সালাম জামে মসজিদ, মক্তব ঘর, দারুস সালাম জামে মসজিদের ইমামের ঘর, তারা মিয়া বেপারীর দুইতলা একটি বিল্ডিং ঘর, বাদশা মুন্সীর দুইটি ঘর, মঞ্জু বেপারীর একটি ঘর, মঙ্গল বেপারী একটি ঘর, বাদশা বেপারীর একটি ঘর, রতন বেপারীর চায়ের দোকান, মতি বেপারীর ঘরসহ একটি ইটের রাস্তা হঠাৎ নদী গর্ভে তলিয়ে হয়ে যায়। এছাড়াও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো শতাধিক বাড়িঘর।

ছুরিরচর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বছর তার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলা পাকা ভবনসহ সকল জমিজমা পদ্মা নদীর তলে হারিয়ে গেছে। সেখান থেকে তারা অনেকটা দূরে এসে নতুন স্কুল গড়লেও নদী ভাঙার কারণে তার ছাত্র-ছাত্রীরা কোথায় চলে গেছেন নিজেও জানেন না।

গত বছরের ভাঙনে ছুরিরচর বকাউল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বকাউল কান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ভাঙনের শিকার ছুনু খলিফা স্ত্রী হাজেরা খাতুন জানান, এ পর্যন্ত তারা ভাঙনের কারণে আমরা তিনবার লড়া দিয়েছি। আমাদের ভিটামাটি সব যাওয়ার পর এখন টুকু বেপারীর ভাড়া জমিতে ঘর করেছিলাম। এবছর আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। যেকোন সময় আমাদেরকে এখান থেকেও চলে যেতে হবে।

উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী ইউনুস সরকার বলেন, পদ্মার ভাঙনে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহত ইউনিয়নটি দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে।

গত বছর ভাঙনে বিলীন হয়েছে তারাবুনিয়া স্টেশন বাজার, ছুরিরচর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এসডিএস আশ্রয় কেন্দ্রসহ উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নে ২, ৩, ৪ ও ৭ নং ওয়ার্ডের আরো ২/৩শ পরিবার। এবছর ভাঙন আতংকে আছে নতুন স্টেশন বাজার, শাহাবুদ্দি মোল্যার কান্দি, এমএ ঢালী কান্দি, কাননগো সাহেবের কান্দি, টুকু বেপারীর কান্দি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নদীর গতি প্রকৃতি বিচিত্র। আমাদের নির্মিত বাঁধ এলাকায় এবছর যে সামান্য ভাঙন দেখা দিয়েছিল তা আমরা জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন রোধ করতে সক্ষম হয়েছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন