বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কমিটি, ঢাবির নোয়াখালী ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা

বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:১৩ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যয়নরত নোয়াখালী জেলার ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন "নোয়াখালী ছাত্র কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (নিঝুম)" এ গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে 'অযোগ্য'দের পদায়ন করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাবির "উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (কারাস)" অডিটোরিয়ামে "নবীন বরং ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায়" নতুন কমিটি ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান বর্জন করে অডিটোরিয়াম ত্যাগ করে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বছরের জন্য সংগঠনটির কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও অনুগতদের পদ দিতে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় 'পরিচালনা পরিষদ'।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির সদ্য সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন। কমিটির ঘোষণার সাথে সাথেই এর প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পুরো অনুষ্ঠানস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

নতুন কমিটিতে ঢাবি মাস্টার দা' সূর্যসেন হলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এইচ পারভেজকে সভাপতি ও ঢাবি ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তামজিদ হোসেন তামীমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঘোষিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কেউই ঢাবির নিয়মিত শিক্ষার্থী না। পারভেজ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত তিন বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসলেও দৃশ্যমান কোন কাজ করেননি। আর তামজিদ সংগঠনে অনিয়মিত এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাকেই চেনেনই না, হঠাৎ করেই তাকে পদায়ন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, "গত তিন বছরে দায়িত্ব পালনকালে পারভেজ সংগঠনের নাম 'বিক্রি করে' টাকা 'আত্মসাৎ' করেছেন। সংগঠনের ম্যাগাজিন করার জন্য টাকা সংগ্রহ করেও ম্যাগাজিন বের করেননি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি সংগঠনের অন্য সদস্যদের সাথে দুঃব্যবহার করেছেন। আর তামজিদ কখনোই এই সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল না । হঠাৎ করেই তাকে পদায়ন করা হয় "।
অভিযোগের বিষয়ে এম এইচ পারভেজ বলেন, "যারা পদ পাবে আশা করে পদ পায়নি তারা এখন সংগঠনকে বিতর্কিত করার জন্য এসব ছড়াচ্ছে। ম্যাগাজিনগুলো ছাপানোর জন্য আমি নিজে ঋণ করে কাজ করেছি কিন্তু পরে ছাপানো হয়নি, যারা বিজ্ঞাপন দেয় তারা ছাপানোর পর টাকা দেয়। ম্যাগাজিনই ছাপানো হয়নি এখানে টাকা মারার প্রশ্ন আসেনা। আমাদের অন্যান্য প্রোগ্রামগুলোর জন্য যা খরচ করা হয় তা দাতারাই খরচ করেন। আর সংগঠনের জন্য আমি অনেক কাজ করেছি এবং এটাকে দাঁড় করাতে আমার আরও অনেক প্লান আছে। মূলত আমাকে নিয়ে কথা উঠেনি তারা হয়তো সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।"

তবে সংগঠনটির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীরা বলছেন পারভেজের উল্টো কথা। তাঁদের অভিযোগ, 'ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ১ বছরের জন্য গঠন করা হলেও বিগত কমিটি তিন বছর সময় অতিবাহিত করে। এসময় তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ না করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে অধিক মনোযোগ দিতে দেখা যায়। এমনকি ৩ বছরে বার্ষিক নিয়মিত মৌলিক পোগ্রামগুলো বাস্তবায়নেও বিগত কমিটি ব্যর্থ হয়। ফলে সংগঠনে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কমে যায় এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।'

নতুন কমিটিতে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হলে সংগঠন আবার প্রাণ ফিরে পাবে এমন আশা ছিলো এরসাথে সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু প্রথম থেকে এরসাথে কাজ করা যোগ্য শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে পূর্বের মত 'স্বার্থান্বেষীদের' দিয়ে এ কমিটি অব্যাহত রাখলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এরসাথে যুক্ত হবেননা। তাই অবিলম্বে কমিটি বাতিল করে পুনর্বিবেচনার দাবি তাদের।

এ বিষয়ে কথা বলতে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো নাজিম উদ্দীনকে কল দেয়া হলেও তিনি কল ধরেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন