মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ব্যাংক থেকে যারা টাকা নিয়েছে সবাইকে ফেরত দিতে হবে

সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, জেলে না পাঠিয়ে টাকা আদায় করতেই খেলাপিদের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে অনেকেই ধারণা করছেন যে, ভালো-মন্দ এক হতে যাচ্ছে। কিন্তু ভালো-মন্দ কখনো এক হবে না। যারা ২ শতাংশ দেবে তারা আর ব্যবসা করতে পারবেন না। কারণ তাদের ব্যবসা করতে হলে আবার ঋণের প্রয়োজন হবে। আর যারা ভালো তাদের তো কোনো এক্সট্রা ডিপোজিট বা ঋণ লাগবে না। তবে সকলে যদি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে তাহলে সবাই দিতে পারবে। খেলাপিদের ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগে ২ শতাংশ কোনো বিষয় না। ২ শতাংশ শর্ত মেনেই তারা ঐকমত্য পোষণ করবে যে, তারা আমাদের সঙ্গে আছে। তারা এই শর্ত বাস্তবায়ন করার জন্য এগিয়ে আসবে। আমরা এক্ষেত্রে একটি কাজ করতে চাচ্ছি সেটা হলো কাউকে জেলে না পাঠিয়ে টাকা আদায় করতে। যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছে তাদের সকলকে টাকা দিতে হবে। যেভাবেই হোক এ টাকা আমরা আদায় করবই। এটা রাষ্ট্রের সকল মানুষের টাকা। তবে আমরা সময়টা একটু বাড়িয়ে দিয়েছি।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের রায়টি যখন আসবে তখন আমরা কার্যকর করব। কার্যকর করতে গেলে আমাদেরও সবাইকে একটু সময় দিতে হবে। রায়ে কিছু পরিবর্তন হবে। আমাদের কিছু বাড়তি চাহিদা আছে। আগে রায় আসুক। রায়ের আগে কিছু বলা ঠিক হবে না। বেশি জায়গা পরিবর্তন না মোটামুটিভাবে ঠিক আছে। কোর্ট আর আমাদের মাঝে কোনো রকম বিরোধ নেই। আমরা একই পক্ষ। আমরা যে কাজটি করতে যাচ্ছি সেটি দেশের মানুষের জন্য জনকল্যাণের জন্য। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব আইন আমরা করতে যাচ্ছি। এখানে অনেক ইস্যু রয়েছে তা একসাথে করে ব্যাংকিং খাতটাকে দাঁড় করানোটাই হলো আমাদের উদ্দেশ্য। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথাবার্তা হচ্ছে। আসলে আমদেরও কোথায় কোথায় ভুল আছে সেগুলো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হার ১০-এর ওপরে যাবে না। এটা ৯ দশমিক ৭৫ হবে। অর্থাৎ সিঙ্গেল ডিজিট হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারে ও বাজেটে সেটা উল্লেখ আছে। যাই হোক আমরা ব্যাংক ঋণে সিঙ্গেল ডিজিট সুদ আদায় করব। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ব্যাংক, ঋণ গ্রহীতা, সরকার ও দেশের মানুষ যেন না ঠকে। সে কাজ করতে হলে একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ সবাইকে সম্পৃক্ত করে এ কাজটি করতে হবে।

ব্যাংকগুলো এখনও কোনো কম্পাউন্ড সুদের হার করতে পারেনি এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে আমরা এখন পর্যন্ত কিছু করতে পারিনি। তবে ব্যাংকগুলো করবে। যখন আমরা রায়ের কপি হাতে পাব তখন বলা হবে কম্পাউন্ড সুদের হার করতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানবে না। এমন কোনো ব্যাংকের অস্তিত্ব বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। যদি না মানে সে জন্য আমরা আইনে পরিবর্তন নিয়ে আসছি। প্রয়োজনে মার্জার করা হবে এ ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছি। সুতরাং সরকারের সিদ্ধান্ত মানবে না এটা হতেই পারে না। তবে যারা মানবে তাদের আমাদের সাহায্য করতে হবে। এ জন্য আমাদের যে সুযোগ- সুবিধাগুলো আছে তা দিয়ে সহযোগিতা করব।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দুঃখের বিষয় হলো গত বছরই তারা ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার কথা বলেছিল। এ জন্য তারা সরকারের কাছে কিছু শর্ত দিয়েছিল। সরকার তা পূরণ করেছে। এর মধ্যে অনেকেই সিঙ্গেল ডিজিটে আসছে। আবার কেউ কেউ আসেনি। তাদেরকে আসতে হবে না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে কাওকে ছাড় দেয়া হবে না। আইন সবার জন্য সমান। তারা ব্যবসা করলে লাভ করবে কেউ কম কেউ বেশি করবে। কিন্তু রেট সকলের এক হতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এ অবস্থানে আসতে এদেশের মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের তাঁতি, শ্রমিক, কৃষক, শিক্ষক, কামার, কুমার, জেলে, সাংবাদিক সকলেরই অবদান রয়েছে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা সৌভাগ্যবান কারণ সুন্দর সময়ের মধ্যদিয়ে এগোচ্ছি। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাগুলো হচ্ছে সংস্কার। বিভিন্ন খাতে আমাদের সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন- পুঁজিবাজার, ব্যাংকিং খাত, নন-ব্যাংকিং খাত, এনবিআর, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে সংস্কার লাগবে। আমরা যদি সংস্কার না আনি তাহলে পিছিয়ে থাকব। অন্যান্য দেশ এসব কাজ ২৫ বছর আগে করেছে। আমরা কিছুতেই কোনো জায়গায় হাত দিতে পারিনি।
ব্যাংকিং কমিশনের বিষয়ে কি ভাবা হচ্ছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং কমিশন যে আমরা করব সেটা বাজেটেও বলেছি। সুতরাং আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্ডারেই ব্যাংকিং কমিশন করব। শিগগিরই করা হবে।
২৪২৯৬ কোটি টাকায় পাঁচ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আরো কার্যকর এবং সুপরিসর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিমানবন্দরটির স¤প্রসারণে মোট ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি)। এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবসহ মোট ৫টি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৪ হাজার ২৯৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৮৭ টাকা।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাপানের ওডিএ লোন এবং সরকারি অর্থায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স¤প্রসারণের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ জন্য মোট ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

বৈঠকে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ফিজিক্যাল প্রটেকশন সিস্টেম (পিপিএস) প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে ২০১৯-২০১০ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রথম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ দুই লাখ টন ইউরিয়া নিরবচ্ছিন্নভাবে আমদানির লক্ষ্যে লটভিত্তিক মূল্য ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে গেলেও, আলাদা অনুমোদনের পরিবর্তে বিশেষ বিবেচনায় এ বছরের অন্য সব লটের অনুমোদনের ক্ষমতা শিল্পমন্ত্রীকে দেয়ার একটি প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
ahammad ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:১৭ এএম says : 0
মাননীয়,মন্ত্রী মহোদয় জনাব কথায় বলে সোজাআঙ্গুলে ঘিউঠেনা।যদি ব্যাবসায়ী নামক লুটেরারা সেচ্ছায় কাটা দেওয়ার খেয়ালই থাকতো তাহলে তাহারা ঋনখেলাপি করতোানা। তাহারা যদি ব্যাবসা করে লোকসান হতো, তাহলে কিছুবিবেচনা করাযেত। কিন্তু অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে তাহারা ব্যাংক থেকে লোননিয়ে টাকা বিদেশে পাচার করে সেখানে সেকেন্ডহোন বানিয়ে সাচ্ছন্দে চলতেছে এবং ব্যাবসা করতেছ। তাই তাদের স্হাবর অস্হাবর সম্পতিক্রোক করে আইনের আওতায় এনে কঠোর সাস্তি দেওয়া দরকার। যাতেকরে দেশের টাকা এই ধরনের হরিলুট করার অন্যকেউ সাহস না পায়। এতেকরে দেশওজাতীর উন্নতি হবে।
Total Reply(0)
Zamal U Ahmed ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:২৯ এএম says : 0
Well, now it's your duty to do all the needful so that the defaulters compelled to pay back all due outstanding money.
Total Reply(0)
Masum Khan ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:২৯ এএম says : 0
হ দিবে? জমি নাই টাকা নিছে? ঐ গুলো কি করে আদায় করবেন? টাকা নিছে দেশে নাই? আপনার সাথে কথা বলার সুযোগ থাকলে প্রমাণ দিতে পারতাম কোন কোন টাকা ফেরৎ পাবেন? ব্যাংকের (33)7 দ্বারার বন্ধকি সন্পতির খবর নেন বড় বড় গল্প বন্ধ হয়ে যাবে। 60% খেলাপির কাগজ আছে জমি নাই।
Total Reply(0)
Md Hafizur Rahman ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:৩০ এএম says : 0
well said
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন