সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস ক্রিকেটে অংশ নিতে ১ ডিসেম্বর দুপুরে কাঠমান্ডু পৌছায় বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। ওইদিনের পুরো সময়টাই পর বিশ্রামে ছিলেন সৌম্য সরকার-নাজমুল হোসেনরা। তবে হোটেলে জিম এবং সুইমিং করে সময় পার করেছেন তারা। নেপালে পৌঁছার একদিন পর গতকাল মাঠের অনুশীলনে নামেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ত্রিভূবন ইউনিভার্সিটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথমদিনের অনুশীলন সারেন তারা। বুধবার মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের এসএ গেমসের ক্রিকেট মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ের আগে উইকেট নিয়ে বেশ চিন্তিত বাংলাদেশ টিম ম্যানেজার এবং জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। মঙ্গলবার আলাপকালে টিম হোটেলে বসে নিজের দুশ্চিন্তার কথা মিডিয়াকে জানান তিনি। সুমন বলেন,‘এখানে রাতে অনেক ঠান্ডা। তবে দিনের বেলায় মনে হয় না খেলার সময় কোনো সমস্যা হবে। ঠান্ডা কিংবা উচ্চতা নিয়ে নয়, আমাদের বড় দুশ্চিন্তা উইকেট নিয়ে। এরকম ঠান্ডায় আমরা অনেক খেলেছি। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আসলে নেপালের উইকেটটা কেমন হয়, তা নিয়েই আমাদের যত ভাবনা।’ তিনি যোগ করেন,‘ যেহেতু এসএ গেমসে টি-টোয়েন্টি খেলা, আর টানা কয়েকটি ম্যাচ খেলতে হবে আমাদেরকে। ভাল উইকেট পাব কিনা সেটা নিয়েই একটু চিন্তিত আমরা। যখন উইকেট ভাল থাকে না তখন বড়-ছোট দলের মধ্যে পার্থ্যকটা কমে যায়। উইকেট ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা নেই আমাদের।’
নেপাল এসএ গেমসে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে মোকাবেলার পর একদিনের বিশ্রাম পাবে বাংলাদেশ। এরপর টানা তিনদিন খেলতে হবে যথাক্রমে ভুটান, স্বাগতিক নেপাল ও শ্রীলংকার বিপক্ষে। প্রচন্ড ঠান্ডায় টানা ম্যাচ খেললে ক্রিকেটারদের কিছুটা সমস্যা হওয়ার কথা এটা মানেন না সুমন। এছাড়া ফুটবলের সূচি নিয়ে অংশগ্রহনকারী দলগুলো আপত্তি তুললেও ক্রিকেট সূচি নিয়ে অভিযোগ নেই তার,‘টানা ম্যাচ খেলা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কারণ আমাদের বিপিএলে টানা ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। হয়তো টানা ম্যাচ খেলাটা ঠিক নয়। একদিন বিরতি থাকা ভাল। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা অভিযোগ করছি না। গেমসে অংশগ্রহন করতে পারায় আমরা সবাই রোমাঞ্চিত। আমি আবারও বলছি উইকেট নিয়েই আমরা বেশি চিন্তিত। কারণ একই ভেন্যুতে টানা ১০ দিন খেলা হবে। আর টানা খেলার কারণে উইকেট ভাল থাকবে না। ক্রিকেটে উইকেটটা তো খুবই গুরুত্বপূর্ন। ফুটবলে মাঠ একটু এলোমেলো হলেও খেলা যায়; কিন্তু ক্রিকেটে সমস্যা হয়।’
এসএ গেমস ক্রিকেটে ২০১০ সালে ঘরের মাঠে স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারের আসরে ভারত-পাকিস্তান নেই বলে পদক ধরে রাখাটা সহজ বলেই মনে করছেন ক্রীড়াবোদ্ধারা। তবে সুমন তা মনে করছেন না। তার কথায়,‘ভারত পাকিস্তান নেই বলে যে স্বণৃ জেতা সহজ তা ঠিক নয়। আসলে ক্রিকেটে সহজ বলতে কিছু নেই। শ্রীলঙ্কা ভাল দল নিয়ে আসছে। নেপাল তাদের ঘরের মাঠে খেলবে। কাজেই আমরা কাউকে সহজভাবে নিতে পারছি না। এটা ঠিক ভারত-পাকিস্তান থাকলে খেলাটা আরো আকর্ষনীয় হতো। যখন এসএ গেমসে নিশ্চিত হয়েছে যে বাংলাদেশ দল যাবে,তখন থেকেই একটাই চিন্তা কাজ করেছিল যে কে খেলবে বা না খেলবে তা নয়। আমরা স্বর্ণ জিততে চাই। ২০১০ সালে জিতেছি, এবার তার পূনরাবৃত্তি চাই। বলা যায় স্বর্ণ ধরে রাখতে চাই। কারণ ২০১৬ এসএ গেমসে পুরুষ ক্রিকেট ছিল না।’
সর্বশেষ ইমার্জিং এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। সেই আলোকে এসএ গেমসে লংকানরা বড় কোনো বাঁধা নয়। তবে হাবিবুল বাশার সুমনের চোখে সেটা ছিল ভিন্ন ফরম্যাট। তিনি বলেন,‘সেটা ছিল পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ এটা বিশ ওভারের। যদি সবকিছু চিন্তা করি, তাহলে আমাদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। টি-টোয়েন্টি খেলা আর ফাইনালের চাপ তো আছেই। আমরা আসছি কিন্তু প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়ে। সবকিছু ওভারকাম করেই স্বর্ণ জিতে দেশে ফিরতে চাই।’
উইকেটের কথা মাথায় রেখেই তিন স্পিনারকে নিয়ে নেপালে এসেছে বাংলাদেশ দল। সুমন বলেন,‘আমরা মেহেদিকে নিয়ে আসছি। সে ইমার্জিং কাপে ভাল বল করেছে। ইনজুরির কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে বিপ্লব আসতে পারেনি,তার জায়গায় আমরা নিয়েছি মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদিকে। লেগ স্পিনার তানভীর আছেন দলে। আমি মনে করি তিনজন স্পিনার ভাল করছেন। তিনজনের প্রতিই আমার আস্থা আছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন