সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ইতিহাসে তিনটি আসরে খেললেও দেশকে একটিও স্বর্ণপদক উপহার দিতে পানেনি বাংলাদেশের সেরা পুরুষ সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর। এবার নেপাল এসএ গেমসে তাকে নিয়ে প্রত্যাশা থাকলেও তিনি একশ’ মিটার ফ্রিস্টাইলে ব্রোঞ্জ জিতে সবাইকে হতাশ করেন। আর এ হতাশা তাকেও পেয়ে বসে। ফলে কাঠমান্ডুতে বসেই সাগর সিদ্ধান্ত নেন আন্তর্জাতিক আসরে আর খেলবেন না তিনি। গতকাল তিনি বলেন,‘তিনটি এসএ গেমস খেলা হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। কিন্তু এ আসর থেকে দেশকে একটি স্বর্ণও এনে দিতে পারিনি আমি। এটা খুব আক্ষেপের বিষয়। তাই আর আন্তর্জাতিক আসরে পুলে নামতে চাই না। তবে ঘরোয়া আসরে খেলবো নিয়মিতই নৌবাহিনীর হয়েই। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই সাঁতারুর প্রত্যাশা ছিল কাঠমান্ডুতে এসএ গেমস ক্যারিয়ারে সেরা সাফল্যটি তুলে নেবেন। কিন্তু তার স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেল। সাগরের কথা, ‘একটি সোনা জেতার আক্ষেপ আমার বহুদিনের। তা পারিনি। তাই সেই আক্ষেপ থেকেই এবার আন্তর্জাতিক আসর থেকে বিদায় নিচ্ছি।’
সাগরের বাবা আজিজুর রহমান কাবাডি খেলোয়াড় ছিলেন। তবে ছেলেকে কাবাডির ম্যাটে নয়, সুইমিং পুলেই যেতে উৎসাহ যোগান তিনি। ২০০০ সালে পুলে সাঁতার কাটা শুরু করেন সাগর। পরের বছর ভর্তি হন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) পাবনা সদর উপজেলার দ্বীপচরের এই সন্তান ২০০৫ সাল থেকে জাতীয় চাম্পিয়নশিপে খেলা শুরু করে নিয়মিতই পুলে ঝড় তুলেন। মুঠো মুঠো সোনাও জিতেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক আসর থেকে একটি সোনাও আনতে পারেননি সাগর। এ ব্যর্থতায় নিজেকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। সেই অপরাধবোধ থেকেই আন্তর্জাতিক আসরকে না বলে দিলেন দেশসেরা এই সাঁতারু।
নিজের প্রিয় ইভেন্ট ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল হলেও ক্যারিয়ারে বিভিন্ন ইভেন্টে খেলেছেন সাগর। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে লাল সবুজ পতাকা বহন করেন। মিরপুরস্থ সুইমিং কমপ্লেক্সের পুলে ঝড় তুলে ঘরোয়া আসর থেকে ইতোমধ্যে ৬০টি স্বর্ণপদক জিতেছেন তিনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক আসর বা গেমসে কাক্সিক্ষত সাফল্য পাননি। ২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে পরিচিত পুলে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল ও ৪ গুনিতক একশ’ মিটার ইন্ডিভিজুয়াল মিডলেতে রুপা জেতেন। ব্রোঞ্জ জেতেন ৫০ মিটার ফ্রিস্টালে। ২০১৬ গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এবার নেপালে একটি মাত্র ব্রোঞ্জ!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন