শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিজয় দিবসে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বিজয় দিবসের ছুটিতে লাখো পর্যটকে এখন সরব দেশের পর্যটন রাজধানী সৈকত নগরী কক্সবাজার। দেশি বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সৈকত, অলিগলি ও পর্যটন স্পটগুলো। সমুদ্র সৈকতসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে নতুন করে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে। রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। একদিকে যানজট, অপরদিকে মিলছে না যানবাহন। খালি নেই চার শতাধিক হোটেলের কোনো কক্ষ। বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়ে কোথাও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে হয়রানির অভিযোগও।

ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনায় বেশ জমজমাট থাকবে কক্সবাজার। খবর নিয়ে জানা গেছে, শহরের চার শতাধিক হোটেলের প্রায় কক্ষ কয়েকভাগে আগাম বুকড হয়ে গেছে। ১২ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর ও ২৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর এবং ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আগাম বুকড হয়ে গেছে। এখন অন্য দিনগুলোরও চলছে বুকিং। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাশেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে বিশেষ দিনগুলোতে অস্বাভাবিক পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজােের।

ওদিকে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের কোন জাহাজেই খালি সিট মিলছে না। সব জাহাজের টিকেট অগ্রীম বিক্রি হয়ে গেছে। এবার শুক্র, শনিবার ও রোববার ১৬ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি হওয়ায় অনেকেই একদিনের বাড়তি ছুটি নিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশে আসেন কক্সবাজারে । প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবসের ছুটির মাধ্যমে নতুন বছরের প্রথম দশদিন পর্যটকের ভিড়ে ডুবে যায় কক্সবাজার। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিপুলসংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছেন পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সৈকতে। পাশাপাশি সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ পর্যটন এলাকাগুলো বিপুল পর্যটক সমাগমে যেন পর্যটনে সুদিন ফিরেছে। কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরেও পর্যটক আনাগোনা প্রচুর। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে।

পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারী ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এর আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বর (থার্টিফাস্ট নাইট) পর্যন্ত তাদের জাহাজে টিকেট সঙ্কট রয়েছে। এতদিন ভ্রমণপিয়াসি লোকজন বের হতে পারেননি নানা কারণে। এখন প্রতিদিন যাত্রী ও পর্যটকরা টিকেটের জন্য ভিড় করছেন।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ মাসের শুরু থেকে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজার। হোটেল মোটেলে যেন ঠাঁই নেই অবস্থা। সেন্টমার্টিনগামি জাহাজ সমূহের টিকেটও আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন, এ মাসে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন। ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা এক সাংবাদিক দম্পতি জানান, গত দু’বছর আসা হয়নি। তাই এবার ছুটিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম। অনেক ভালো লাগছে বেড়াতে এসে। দেখলাম ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারি পুলিশ ও সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ বেশ সক্রিয় রয়েছে। এটি ভালো হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে চার শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস ভরপুর থাকবে পর্যটকে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজার সৈকতে। শুক্রবার, শনিবার বিকালে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত লাখো পর্যটকের উপস্থিতি ছিল দেখার মত। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণ নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন