বৃহত্তর নোয়াখালী ছাড়িয়ে সুবর্ণচরের সবজি এখন দেশের রাজধানীসহ প্রায় প্রতিটি জেলায় যাচ্ছে। সুবর্ণচর স্থান করে নিয়েছে দেশের প্রতিটি গণমাধ্যমে। কৃষিতে এমন বিপ্লবের পেছনে রয়েছে এ অঞ্চলের চাষিদের কঠোর পরিশ্রম আর সরকারি ও বেসরকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা। নবগঠিত এ অঞ্চলে কৃষিতে রয়েছে সাফল্যের গল্প।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন নারী চাষির সাথে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সোলেমান বাজার এলাকার আমেনা বেগম জানান তার সফলতার কথা। স্থানীয় এক সংস্থা থেকে বিনামূল্যে বীজ সংগ্রহ করে এক একর জমিতে টমেটো চাষের উদ্যোগ নেন।
বিজলী-১১ জাতের এ টমেটো চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। কোনো কিটনাশক ব্যাবহার ছাড়াই টমেটো চাষ করেছেন তিনি। বাজার দর ভালো থাকলে আশা করছেন টমেটো বিক্রি করে কমপক্ষে তিন লাখ টাকার বেশি পাবেন।
একই এলাকার আরেক টমেটো চাষি জোসনা বেগম জানান, এক একর জমিতে টমেটো চাষে তিনি খরচ করেছেন ৫০ হাজার টাকা। সংস্থার পরামর্শে ফেরোমন ফাঁদ আর হলুদ ফাঁদ ব্যাবহার করায় কোনো কিটনাশকের প্রয়োজন হয়নি। প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঘরে আসবে কমবেশি তিন লাখ টাকা। উপজেলার ভূঁঞার হাট এলাকার টমেটো চাষি মো. হেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সরকারি কোন সহযোগিতা ছাড়াই টমেটো চাষ শুরু করেন। দুই একর জমিতে টমেটো চাষ করতে তার খরচ করতে হয়েছে এক লাখ টাকার কাছাকাছি। ভালো পরিবেশ আর ন্যায্য দাম পেলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন।
এ বিষয়ে সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কৃষি কর্মকর্তা শিবব্রত ভৌমিক ইনকিলাবকে জানান, সংস্থা গ্রামীণ পর্যায়ে কৃষকদের বিনামূল্যে উন্নত বীজ প্রদান এবং কিটনাশকমুক্ত ভালো ফলন উৎপাদনে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে। এতে কৃষকরা ভালো ফলন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি আরো জানান, সুবর্ণচরের কৃষকরা কঠোর পরিশ্রমী। নিয়মিত সঠিক পরামর্শ পেলে সুবর্ণচরের কৃষকরা কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে কৃষি পণ্যের চাহিদা অনেকটা পূরণে সক্ষম হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, উপজেলার কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জমিতে কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে সেসব বিষয়ে নিয়মিত কৃষি অফিস উপজেলার কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন