শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সাম্প্রতিককালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার সাথে উত্তরের হাওয়ায় কাঁপছে দক্ষিণাঞ্চল

কয়েক দফার অকাল বর্ষনের পরে চলমান শৈত্য প্রবাহ কৃষি অর্থনীতির সর্বনাশ করছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২০, ২:১৮ পিএম

মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রায় কাঁপছে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল। স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রার পারদ ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসেরও বেশী নিচে নেমে যাবার সাথে উত্তরের হাওয়ায় জনজীবনের সাথে কৃষি ব্যবস্থাও যথেষ্ঠ বিপর্যস্ত। এবার লাগাতর মৃদু থেকে মাঝারী শৈত্য প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে ঠান্ডাজনিত রোগ ব্যধীর প্রকোপ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশী। ইতোমধ্যে বরিশালে মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে গেছে। যা সম্প্রতিককালের সর্বনি¤œ। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা হৃাসের সাথে উত্তরের হাওয়ায় জনজীবন আরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। সাথে শেষরাত থকে মাঝারী কুয়াশা অনেক বেলা অবধী সূর্যকে আড়াল করে রাখছে। ফলে শীতের অনুভুতি আরো বাড়ছে।

এবার ডিসেম্বরের শেষ দিকে বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে হৃাস পেলও গত দুদিন তা এক অংকে নেমে এসেছে। শণিবার বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে রবিবার সকাল ৬ টায় তাপমাত্রা পারদ দশমিক ১ ডিগ্রী বেড়ে ৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে স্থির হয়। গত বুধবার বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৯.৭ডিগ্রী সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার তা ১২.২ ডিগ্রী। শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ১২ ডিগ্রীর ওপরে থাকলেও শণিবার তা প্রায় ৩ ডিগ্রী হৃাস পেয়ে ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে স্থির হয়। রবিবার সকালে তাপমাত্রা দশমিক ১ ডিগ্রী বৃদ্ধি পেয়েছে।
অথচ আবহাওয়া বিভাগের মতে জানুয়ারী মাসে বরিশালে সর্বনি¤œ তপামাত্রা থাকার কথা ১১.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সোমবার থেকে বরিশাল ও ভোলা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শৈত্য প্রবাহ কিছুটা বিদুরিত হতে পাড়ে বলে জানিয়ে রবিবার সকালের পরবর্তি ৭২ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে গুড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে।
তবে এবার শীতে আবহাওয়ার বৈরী আচরনে দক্ষিণাঞ্চলে জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি কৃষি ব্যবস্থায়ও যথেষ্ঠ বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইতোমধ্যে ঠান্ডাজনিত নানা রোগব্যধী নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ১০ সহশ্রাধীক মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়াও শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে আরো প্রায় দশ হাজার মানুষ। যদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশী। তবে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডাক্তারদের চেম্বারে এধরনের আরো অন্তত দ্বিগুন মানুষ চিকিৎসার জন্য এসছে বলে দাবী ওয়াকিবাহল মহলের।
তাপমাত্রার পারদ অত্যাধীক নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো বীজতলা যেমনি ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হচ্ছে, তেমনি গোল আলুর জমিও ‘লেট ব্লাইট’ নামে এক ধরনের ছত্রাকবাহী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দফায় দফায় শৈত্য প্রবাহে শীতকালীন সবজির গুনগত মানও বিনষ্ট হচ্ছে।
গত ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’এর বয়ে আনা ভয়াবহ প্রবল বর্ষনের পরে ডিসেম্বরের শেষ দিকে আরো প্রায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের আমন ও রবি ফসল সহ শীতকালীন শাক-সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ছে। নিকট অতীতের ঐসব প্রকৃতিক বিপর্যুয়ের পরে চলমান শৈত্য প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে কৃষক ও কৃষি অর্থনীতির দুরবস্থা চুড়ান্ত পর্যায়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন