রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা একই সঙ্গে গভীর উদ্বেগজনক ও নজিরবিহীন। সাম্প্রতিককালে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা- বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশী নাগরিকসহ অধ্যাপক, প্রকাশক, ব্লগার এবং বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এসব হামলা ও হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। তাদের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এই হামলা ও হত্যাকা-গুলোর ধরণ, প্রকৃতি, প্রক্রিয়া ইত্যাদি প্রায় একই রকমের। গত শুক্রবার রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারী এন্ড রেস্টুরেন্টে যে হামলা হয়, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। প্রতিবেশী ভারত-পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে যেভাবে হোটেল-রেস্তোরাঁয় কিংবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থান-এলাকা স্থাপনার ওপরে-ভেতরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, এখানেও ঘটে তেমনি। ৮-১০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রেস্তোরাঁটির অভ্যন্তরে বীরদর্পে প্রবেশ করে, গুলি চালায় এবং ওই সময় সেখানে দেশী-বিদেশী যারা ছিল তাদের জিম্মি করে। ১০-১১ ঘণ্টা পর এক রক্তাক্ত অভিযানের মধ্য দিয়ে এ ঘটনার ইতি ঘটে। আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। আইএসপিআর-এর প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, অভিযান শেষে অকুস্থলে ২০ জনের লাশ পাওয়া গেছে। ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ৬ জন হামলাকারী নিহত হয়েছে। সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত অপারেশন থান্ডার বোল্ট নামের এ অভিযানে সেনা কমান্ডো, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা অংশ নেন। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কথাবার্তা ও আলোচনার ভিত্তিতে সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি কাম্য হলেও শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। শক্তি প্রয়োগের কঠোর পথই বেছে নিতে হয়েছে। হয়তো বা এ কারণে হতাহতের সংখ্যা কিছু বেড়ে গিয়েও থাকতে পারে। এর বিকল্পও ছিল না। আইএসপিআর-এর তরফে দাবী করা হয়েছে, নিহতদের সবাইকে গত রাতেই সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। তাঁদের অনেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, সন্ত্রাসীরা ওই রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় একদল পুলিশ তাদের রুখে দাঁড়ায় এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। এই গোলাগুলিতে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের দলটির হয়তো ধারণা ছিল না সন্ত্রাসীদের হাতে ওই রকম অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে এবং তারা অতটা বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলাও জিম্মি করার ঘটনা মোকাবিলায় তাদের অভিজ্ঞতা কম থাকার কারণে হতাহতের সংখ্যা বেশী হয়ে থাকতে পারে। আমরা তাদের সাহস, দেশপ্রীতি, মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করি। স্বীকার করতেই হবে, ঘটনা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত র্যাব-পুলিশের ভূমিকা ও তৎপরতা মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করেছে। দায়িত্বশীলরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অকুণ্ঠ ধন্যবাদভাজন হয়েছেন। অপারেশন থান্ডার বোল্ট পরিচালনায় যে সক্ষমতা, পারঙ্গমতা প্রদর্শিত হয়েছে তা সঙ্গতকারণেই ব্যাপক প্রশংসা দাবি করে। মাত্র ১৩ মিনিটে এ অভিযান শেষ হয়। এই নজিরে এ জাতীয় ঘটনা মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতারও একটা যাচাই হয়ে গেছে।
রাজধানীর এই গুলশানেই সন্ত্রাসী হামলায় জাপানী নাগরিক নিহত হওয়ার পর থেকে দেশে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা- ঘটে চলেছে। এ সব হামলা ও হত্যাকা-ের অধিকাংশের দায় স্বীকার করেছে আইএস। কয়েকটি ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আল কায়েদা। গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার দায়ও আইএস স্বীকার করেছে। শুরুতেই হত্যাকা- ও দায় স্বীকারের প্রেক্ষিতে দেশে আইএস আছে কি নেই, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়, যার অবসান এখনো হয়নি। সরকার এক সময় আইএস’র সদস্য কিংবা অনুগত বলে অনেককে গ্রেফতার করে জানান দেয় দেশে আইএস’র অস্তিত্ব আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের তরফে যখন আইএস’র অস্তিত্ব ও তৎপরতার কথা বলা হয়, তখন সরকার সম্পূর্ণ ইউটার্ন করে জানায়, আইএস কিংবা এই ধরনের কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের অস্তিত্ব এখানে নেই। আমরা এবং দেশের মানুষও বিশ্বাস করতে চায়, দেশে আইএস নেই, আল কায়দা নেই। কিন্তু এও তো অস্বীকার করা যাবে না, একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা- অব্যাহত রয়েছে। এসব হামলা ও হত্যাকা- পরিকল্পিত। কারা এগুলো করছে বা ঘটাচ্ছে, আইন-শৃংখলা বাহিনী এখনো তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি। প্রকৃত হামলাকারী ও ঘাতকদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি। সন্দেহভাজন বলে কিছু লোককে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। আগের সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনার সঙ্গে গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনার সুনির্দিষ্ট পার্থক্য লক্ষ্যযোগ্য। আগের ঘটনাগুলোতে সন্ত্রাসীরা হামলা ও হত্যাকা- ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে। গুলশানের রেস্তোরাঁর ঘটনায় সন্ত্রাসীরা পালাতে চায় নি। আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই তারা হামলা ও হত্যাকা- ঘটিয়েছে এবং তারা নিহত হয়েছে। এই প্রথম ঘটনা, যাতে বুঝা গেলো সন্ত্রাসীরা সুইসাইডাল একশনে গেছে। এটা দেশের জন্য যে কোনো বিবেচনায় অতীব উৎকণ্ঠার বিষয়। হামলা ও হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের প্রকৃত পরিচয় এখনো পরিষ্কার হয়নি। তারা প্রায় সবাই নিহত হওয়ার পর তাদের পরিচয় জানা আদৌ সম্ভব হবে কিনা, বলার উপায় নেই। যাকে ধরা হয়েছে সে ‘সন্দেহভাজন’। সন্ত্রাসী হতেও পারে, নাও হতে পারে। দেশে-বিদেশে এ ধরনের প্রায় প্রতিটি হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনায় হামলাকারীরা হয় নিহত হয়েছে, না হয় হত্যা করা হয়েছে। ফলে এসব ঘটনার কারণ ও পেছনের কথা, কারা জড়িত বা মদদদাতাÑ এসবের কিছুই জানা সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রেও তেমন আশংকা উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। আবার বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনা যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ করতে পারেনি তেমনি তা মোকাবিলায় যথাযথ সক্ষমতার পরিচয়ও দিতে পারেনি। নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অক্ষমতা ও ব্যর্থতা কোনো অজুহাতেই বরদাশতযোগ্য হতে পারে না। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, গুলশানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই কূটনৈতিক এলাকায় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কিভাবে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে ও হামলা চালাতে পারল? আগে থেকেই এলাকাটি নিরাপত্তার চাদরে আবৃত। বিশেষ করে জাপানি নাগরিক হত্যার পর গুলশানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রাস্তায় রাস্তায় চেকপোস্ট বসানো হয়, সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়, মাইক্রোবাস ও মোটরবাইক চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এমন একটি নিরাপত্তাবলয় ভেঙে ভেঙে সন্ত্রাসীরা যখন হামলা ও হত্যাকা- ঘটাতে পারে তখন বুঝতে হবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ নয় কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট দক্ষ ও পারঙ্গম অবস্থায় নেই। এ ঘটনা থেকে দেশের সর্বত্র নাগরিক নিরাপত্তার বেহাল অবস্থাটিও অনুধাবন করা যায়।
টার্গেট কিলিং চলছে। সরকার প্রথম দিকে সংঘটিত হত্যাকা-গুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দিলেও পরে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে বিচ্ছিন্ন নয়। সরকারসহ সব মহলই এখন কবুল করে নিয়েছে। এসব হত্যাকা- খুবই সুপরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিসারী। সর্বশেষ হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনাও যে সুচিন্তিত, সুপরিকল্পিত এবং একই ধারার ঘটনা তাতে সন্দেহ নেই। এই ‘অপারেশনে’ সন্ত্রাসীদের অনেক চিন্তাভাবনা করতে হয়েছে, মাথা খাটাতে হয়েছে, দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করতে হয়েছে এবং নিজেদের নিরাপদে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে যেহেতু এই ঘটনার সাজুয্য বা মিল রয়েছে, সুতরাং সহজেই ধারণা করা যায়, এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক কানেকশনও থাকতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বাপরই দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের পেছনে দেশী-বিদেশী কুচক্রী মহল জড়িত, যার লক্ষ্য সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা, দেশকে অস্থিতিশীল করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করা এবং দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করা। আরও দাবি করা হয়েছে, এই সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে বিদেশীরা বাংলাদেশের ওপর ‘হামলে’ পড়তে চায়। পরোক্ষভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সেসব দেশ এই সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত, যারা এদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চায়। সরকারের দিক থেকে এ ধরনের বক্তব্য রাখার পাশাপাশি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াতের প্রতিও আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারাও এর সঙ্গে জড়িত। দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, নানা ক্ষেত্রে এই দুই রাজনৈতিক পক্ষ একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। এই প্রবণতা বা ব্লেম গেম কখনোই সুফল দেয়নি, দেয় না। সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের দায় যখন বিরোধী দলের ওপর চাপানো হয়, কিংবা চাপানো হয় সরকারের ওপর, তখন সন্ত্রাসীরাই ষোলোআনা সুফল ও সুবিধা লাভ করে। আর আন্তর্জাতিক ‘ষড়যন্ত্রকারীরা’ তখন মুচকি হাসে। কাজেই ব্লেম গেম বন্ধ করতে হবে। সন্দেহ নেই, দেশ এখন ঘোরতর এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। দেশের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত, অর্থনীতি অবনতিশীল, আইন-শৃঙ্খলা হুমকিতে, নাগরিক নিরাপত্তা অস্থিতিপূর্ণ। এ অবস্থায় দেশের ওপর সন্ত্রাসী দেশের তকমা অঙ্কিত হলে সবকিছুই তছনছ হয়ে যাবে। দেশ একসময় মডারেট মুসলিম দেশ হিসাবে খ্যাতি ও প্রশংসা পেয়েছে। এখন সেই ইমেজে প্রচ- ঘা পড়েছে। যদি দেশের নাম সন্ত্রাসী বা জঙ্গি দেশের তালিকায় ওঠে তাহলে যে অপূরণীয় ক্ষতি হবে, কোনো কিছু দিয়েই তা পূরণ করা যাবে না। এ মুহূর্তে অর্থনীতির ব্যতিক্রম বাদে সব সূচকই অবনতিশীল। অতঃপর যদি বিনিয়োগযোগ্য পরিবেশে গড়ে না ওঠে, আইন-শৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তার উন্নতি না হয়, উৎপাদন রফতানি আরও তলানিতে নামে এবং সন্ত্রাস দমনে আমরা বিফল হই, তাহলে বিপর্যয়ের কোনো শেষ থাকবে না। সবদিক দিয়েই দেশ বসে যাবে। অতএব, যে কোনো মূল্যে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে। এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐকমত্য। সরকার ও বিরোধী দলকে এ ব্যাপারে একাট্টা হতে হবে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মত, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা, আইনের শাসন ও সুবিচারের নিশ্চয়তা না থাকায় সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদের উত্থান ও প্রসার ঘটছে। এ অভিমত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলকে গভীরভাবে ভাবতে হবে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সুবিচারের নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিশেষে বলতে চাই, আলোচ্য সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের ঘটনার তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারকে অবশ্যই সত্যাশ্রয়ী হতে হবে। সঠিক তথ্য জনগণকে জানাতে হবে। অন্যদিকে, যদি এমন হয়, সন্ত্রাস দমন এবং সন্ত্রাসীদের হামলা ও হত্যাকা- প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পেরে উঠছে না, সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরামর্শমূলক সহায়তা নেয়া যেতে পারে। এ ধরনের মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক ও প্রাণহানিকর ঘটনা আর না ঘটুক, এটা আমাদের একান্ত প্রত্যাশা। আমরা সন্ত্রাসীদের হাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। তাদের আত্মীয়-স্বজনের প্রতি জানাই আন্তরিক সমবেদনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন