করোনার প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি যে কী পরিমাণ ক্ষতি ও ধ্বংসের হুমকির মুখে তা এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে মানুষ টের পাবে। মানব সভ্যতার সকল স্পন্দন থেমে যাচ্ছে প্রায়। ভয়ে কাঁপছে গোটা মানববিশ্ব। কাঁদছে মানুষ। তারা বড়ই অসহায়।
চেষ্টা থেমে নেই, কিন্তু কিছু দৃশ্য বড়ই মর্মান্তিক। একজন ফ্রেঞ্চ ও একজন ইটালিয়ান তাদের বিদায়ী বার্তায় যে অসহায়ত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন, তা বিশ্ববাসীর জন্য কষ্টের পয়গাম বয়ে এনেছে। এশিয়ায় যেমন তেমন, ইউরোপে এর প্রভাব বেশি পড়ছে। আমেরিকা দীর্ঘ সংকট মোকাবেলার আগাম বার্তা প্রচার করেছে। নেতৃবৃন্দ অনেকেই আক্রান্ত কিংবা আক্রমণের শঙ্কায়। তারা বিশেষ সুরক্ষা নিয়েছেন। বহু ধনকুবের বিনোদন কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ দ্বীপে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। নিজস্ব বিমান নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় তারা ছুটে বেড়াচ্ছেন। খুঁজছেন এমন জায়গা, যেখানে করোনা ভাইরাস পৌঁছেনি। কিন্তু নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না। বহু প্রমোদতরী এ ভাইরাসের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও চিকিৎসাসেবায় আদর্শ মহানগরেও করোনার দাপট। তুলনামূলক অনুন্নত এলাকা বাদ দিয়ে এটি অভাবনীয় জায়গাতে পৌঁছে যাচ্ছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এ ভাইরাস এ লেখা তৈরী করা পর্যন্ত প্রায় তিনশতবার নিজের জিন ও চরিত্র বদল করেছে। বারবার আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে সে আক্রমণ করছে।
এটি কৃত্রিম উপায়ে তৈরি বা দুই শত্রæ দেশ পরস্পরকে ঘায়েল করার জন্য বানিয়েছে, এ ধরণের কথা বলাবলি হলেও বিষয়টি যে, মানবজাতির জন্য হুমকির এতে কারও সন্দেহ নেই। নিঃসন্দেহে মানুষের অক্ষমতা ও চরম দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে এ ভাইরাসের আক্রমণে। কানাডার নেতা জাস্টিন ট্রুডো জাতির উদ্দেশে যে মানবিক ও কল্যাণমুখী ভাষণ দিয়েছেন, তা বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেছে। কাতারের আমীর, ওমানের বাদশাহ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাতির জন্য যে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছেন সেসবও অনুসরণীয়।
এ পর্যায়ে এমন অপরিচিত রোগ যাকে দুনিয়ার মানুষ সর্বসম্মতিক্রমে মহামারী আখ্যা দিয়েছে, এতে আক্রান্ত হওয়ার আগে আল্লাহতায়ালার কাছে প্রত্যেকে নিজ নিজ অন্যায়, পাপ ও গুনাহ থেকে তওবা করা কর্তব্য। নবী করিম (সা.) বিশেষভাবে দোয়া করেছেন এবং উম্মতকে শিখিয়েছেন। ‘হে আল্লাহ আপনি আমাদের পানাহ দিন, শ্বেতী, মানসিক বিকার, কুষ্ঠ এবং সবধরণের মারাত্মক ব্যাধি থেকে।’ তিনি বলেছেন, কেউ যদি এই দোয়াটি করে, তাহলে সৃষ্টির কিছুই তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। ‘আল্লাহর নাম নিচ্ছি, যার নাম নিলে আসমান ও জমিনের কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না। নিশ্চয় আল্লাহ সব শোনেন ও জানেন।’
এরপর সকাল সন্ধ্যা ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠসহ ‘সূরায়ে ফাতেহা’ ও ‘চার কুল’ বিশেষ করে ‘ফালাক ও নাস’ পড়ে নিলে বান্দাহ নিরাপদ হয়ে যায়। এ দোয়া সূরা পড়ে হাতে ফুক দিয়ে নিজের সারা শরীরে মাসেহ করা এবং নিজের শিশুদের দেহে ফুক দেয়া ইসলামী পদ্ধতিতে রয়েছে। এছাড়াও আল্লাহর নবী বলেছেন, যে ব্যক্তি সঠিক সময়ে ফজর পড়ে সারাদিন সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে। যে এশা পড়ে সে সারা রাত আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহ আমাদের সব ধরণের আসমানী জমিনী বালা থেকে হেফাজত করুন। গোটা মানবজাতিকে ঈমান, তওবা ও উত্তম জিন্দেগী দান করুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন