করোনাভাইরাস সচেতনা ও সর্তকতা অবলম্বনে সুরক্ষা নিশ্চিতে রাজধানীসহ সারাদেশে কাজ করছে সেনাবাহিনী। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন বাজার ও জনবহুল এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচতেন করতে হ্যান্ড মাইকের সহায়তার প্রচারণা চালান। পাশাপাশি গনজমায়েত এড়িয়ে চলার জন্য সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন। গতকাল দেশের ৬২ টি জেলায় সেনাবাহিনীর ৩০৫ টি দল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। তিন হাজারের অধিক সেনাসদস্য এ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করেছেন নৌবাহিনীর সদস্যরা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করলো নৌবাহিনী
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় রাজধানীর মিরপুর ১৪ন¤¦র, ইব্রাহিমপুর, কচুক্ষেত, ভাষানটেক ও তৎসংলগ্ন এলাকার প্রধান সড়ক, ফুটপাত, স্থানীয় বাজার, মসজিদসহ আশেপাশের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখতে নৌবাহিনীর তত্ত¡াবধানে জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। গতকাল শনিবার নৌবাহিনীর সদস্যরা দিনব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ নৌবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরে নৌসদস্যরা রাজধানীর বনানী ও গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক পানি ছেটানো কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়া ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা এবং কাপ্তাইয়ে নৌবাহিনীর দ্বায়িত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে দিনব্যাপী জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নৌবাহিনীর সদস্যরা জনসমাগম বন্ধসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং মানুষকে ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে মাইকিং করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রচারণা চালায়। সেইসাথে তারা করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরী করতে স্থানীয়দের বিভিন্ন লিফলেট বিতরণসহ স্থানীয় ঈমামদের নানা পরামর্শ প্রদান করে। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় গরীব, দুঃস্থ ও আসহায় মানুষদের মাঝে জীবাণুনাশক সাবান ও মাস্ক, চাল, ডাল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে একাত্ম হয়ে নৌবাহিনী এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নৌবাহিনীর এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আমাদের বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে স্থাণীয় প্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনীও মাঠ পর্যায়ে প্রচারণাসহ বিভিন্ন ধরনের দায়িত্বপালন করছে। এমনকি সেনাবাহিনী করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচারনাও শুরু করেছে। র্যাব-৮ বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় করোনা প্রতিরোধে প্রচারণাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কাজ করছে। সেনাবাহিনী ও র্যাব বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ গুলোর দিকেও নজর রাখছে।
আমাদের নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীতে করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে আরও সচেতন করার পদক্ষেপ হিসেবে শনিবার সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম চৌমুহনী থেকে সোনাপুর পর্য্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এলাকায় মাইকিং করছে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের দৃঢ় পদক্ষেপের কারনে জনসাধারণ সচেতন হয়ে উঠেছে। এতে করে জনমনে ভয় অনেকটা কেটে গেছে।
আমাদের সিলেট ব্যুরো জানায়, করোনা সচেতনা ও সর্তকতা অবলম্বনে সুরক্ষা নিশ্চিতে পুরো সিলেট জেলা চষে বেড়াচ্ছে সেনাবাহিনীর ১৫টি টিম । গতকাল ৮টায় সেনাবাহিনী মাঠে নামলেও তাদের টহল জোরদার করার লক্ষ্যে বিকেল ৩টায় মোট ১৫টি টিম বের হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে সিলেটের সব এলাকায় সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানে গতকাল থেকে সিলেটে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) মো. মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, সকাল ৮টা থেকেই মাঠে বেরিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।
স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি থেকে জানান, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রামক থেকে রক্ষায় রাঙামাটির বাসিন্দাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে অত্রাঞ্চলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নানামুখি কার্যক্রমে জনমনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। জেলা শহরের যারা দিন মুজুর ঘর থেকে বের হতে পারছেনা এমন অসহায় হতদরিদ্রদের মধ্যে শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, নুডুলস বিতরণ করে আসছে সেনাবাহিনী। প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে রাঙামাটি রিজিয়নের সেনা সদস্যরা দিন মুজুরদের মাঝে শুকনা খাবার পৌছিয়ে দিচ্ছেন। এদিকে, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে ওষধ দিয়ে পানি ছিটালো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাঙামাটি রিজিয়ন।
মেজর মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, সেনাবাহিনীর নিজস্ব ৩ টন একটি পানির গাড়ী ও ২টন পিকআপ দিয়ে সেনাসদস্যরা রাঙামাটি শহরের ভেদভেদি থেকে শুরু করে কলেজগেট, বনরুপা, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের আশপাশ বিøচিং পাউডারের ওষুধ দিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে।
জনসচেতনতামূলক এসব কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে সেনাবাহিনী এমন মন্তব্য করে মেজর মহিউদ্দিন আরো বলেন, রাঙামাটি রিজিয়নের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসনের সাথে প্রতিদিন মাঠে কাজ করছে রাঙামাটি রিজিয়নের সেনাসদস্যরা। সবধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণের পাশে আছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ল²ীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ল²ীপুরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীর টহলের বার্তা পেয়ে বিভিন্ন হাটবাজার ও উপজেলা অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জনসচেতনতায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জনসহ সকল জনপ্রতিনিধিরা কাজ করে যাচ্ছেন।
মংলা সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমন থেকে রক্ষায় মংলার দ্বিগরাজ এলাকায় জীবাণু নামক ঔষধ ছিটিয়েছে নৌ বাহিনী কন্টিনজেন্ট সদস্যরা । শনিবার সকাল থেকে রাস্তায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় । এসময় মংলা -খুলনা মহাসড়কে চলাচলকারী সকল যানেও ওষুধ ছিটানো হয় ।
লেফটেন্যান্ড কমান্ডার তানভির খান জানান, মংলা এলাকায় বসবাসরত ১৫০ জন হত দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন