শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দ্বিমুখী সঙ্কটে হালদা

পয়লা ‘জো’-তে ডিম ছাড়েনি মা-মাছেরা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

হালদা নদীতে রুই কাতলা মৃগেল (কার্প) বড় জাতের মা-মাছেরা ডিম ছাড়ার পয়লা ‘জো’ গতকাল (সোমবার) পেরিয়ে গেছে। কিন্তু ছাড়েনি ডিম। গত ৬ এপ্রিল থেকে মৌসুমের প্রথম জো’র সময় এ যাবৎ বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়নি। পাহাড়ি ঢলের ঘোলা স্রোতও আসেনি। আবহাওয়া-প্রকৃতির নিজস্ব গতিতেই তেমন অনুকূল অবস্থা তৈরি হয় ডিম ছাড়ার উপযোগী।

তখন মা-মাছ নদীর বুকে ভেসে ওঠে। দলে দলে ছাড়ে মুক্তা দানার মতো ডিম। অগণিত জেলে নদীতীরে নৌকা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে ডিমের অপেক্ষা শেষে নিরাশ হয়ে ফিরে গেছেন। এশিয়ায় মিঠাপানির বড় জাতের মাছের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র হালদা। এ প্রসঙ্গে গতকাল হালদা চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হালদা নদী গবেষণাকেন্দ্রের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কীবরিয়া ইনকিলাবকে জানান, চট্টগ্রামে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি, ঢল হয়নি। তাই হালদার প্রথম ‘জো’তে মা-মাছেরা ডিম ছাড়তে ভেসে ওঠেনি এখনও।

এরপর আগামী ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল হালদায় ডিম ছাড়ার ও জেলেদের সংগ্রহহের দ্বিতীয় ‘জো’।
তবে এবার ডিম ছাড়ার ও সংগ্রহের বিষয়ে দ্বিমুখী সঙ্কটের মুখোমুখি পড়েছে হালদা। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দূষণ, বালু তোলা, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় হালদা নদীতে এবার রুই কাতলা মা-মাছের প্রচুর পরিমাণে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ কায়দায় ডিম সংগ্রহে পারদর্শী জেলেরাও সময় গুণছেন। কিন্তু সম্ভাব্য ব্যাপক হারে ডিম ছাড়া ও সংগ্রহ হলে তা নষ্ট, অপচয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ। হালদার ডিম ও রেণু-পোনা নিয়ে জেলেরা কী করবেন? তাছাড়া হালদা তীরে ডিম থেকে নির্দিষ্ট ক’দিনের ব্যবধানে রেণু-পোনা ফোটানোর জন্য নার্সারি পুকুর আছে খুবই কম। তাতে প্রচুর ডিম ফোটানোর আগেই অপমৃত্যু বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্থানীয় জেলেরা এ অবস্থায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

অধ্যাপক ড. কীবরিয়া বলেন, এবার হালদায় মাছের প্রজনন সঙ্কটের আরেক দিক হচ্ছে প্রথম ‘জো’-তে মা-মাছেরা ডিম ছাড়তে গতকাল পর্যন্ত নদীর কোনো পয়েন্টেই ভেসে উঠতে দেখা যায়নি। ডিমও ছাড়েনি। বজ্রবৃষ্টি মুখর অনুকূল আবহওয়া প্রকৃতির উপরই তা নির্ভরশীল।

আসন্ন দ্বিতীয় জো-তে (১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল) আবহাওয়া কেমন যাবে এবং ডিম ছাড়লে তা সংগ্রহ, রেণু -পোণা ফোটানো, পরিবহনসহ সমগ্র ব্যবস্থাপনা সঙ্কটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক নদী ‘মৎস্য ব্যাংক’ হালদা দ্রুত বর্ধনশীল ও ঢাউস আকারের রুই কাতলা (কার্প) জাতীয় মাছের বীজ জোগান দেয়। সারাদেশে বার্ষিক যার অর্থনৈতিক অবদান প্রায় ৮ শ’ কোটি টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
হৃদয় আমার বাংলাদেশ ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
হালদা নদীকে দূষণ মুক্ত ও খনন করতে হবে ۔۔দুই পাশে পলি পরে সরু খালের মতো হয়ে গেছে ۔۔۔۔মাছ আসবে কি করে প্রবাহ নেই নদীতে
Total Reply(0)
মশিউর ইসলাম ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
হালদা নদী বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৩ এএম says : 0
আহ, হালদা নদীর এই দশা দেখে খুবই খারাপ লাগছে। সরকারকে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
Total Reply(0)
রাজি হোসেন ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
এটা আমাদের অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদ। এটা বাঁচানো জরুরি।
Total Reply(0)
মেহেদী ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
হালদাকে দ্রুত খনন করা হোক এবং দূষণ মুক্ত করে আগের অবস্থায় নেওয়া হোক।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন