শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হতাশ হালদার ডিম সংগ্রহকারীরা

আশানুরূপ ডিম ছাড়েনি মা মাছ পোনার মূল্য বেশি হতে পারে

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ঘোষিত বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ চট্টগ্রামের হালদা নদীতে এবার আশানরুপ ডিম না পাওয়ায় হতাশ হালদা পাড়ের কয়েকশ’ ডিম সংগ্রহকারী। পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় যথা সময়ে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টি না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করায় পুরোদমে ডিম ছাড়েনি হালদার কার্প জাতীয় মা মাছ।

গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামার পর মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যতীত ডিম সংগ্রহকারীরা ঘরে ফিরে যায়। হঠাৎ হালদা নদী উত্তর মাদার্শা এলাকার আজিমের ঘাটা ও নাপিতের ঘাটায় আবারো ডিম ছাড়ে মা মাছ। সংবাদ পেয়েই কয়েকশ’ ডিম আহরণকারী সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন। রাত বারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করে তবে নৌকা প্রতি দু-চার বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেন তারা। নমুনা ডিমগুলো ইতোমধ্যে সরকারি বা নিজস্ব হ্যাচারিতে ডিম হতে রেনু রুপান্তর করার পরির্চযা শুরু করেছে।

সরজমিন গতকাল দুপুরে গড়দুয়ারা নয়াহাট, উত্তর মাদার্শা মাছুয়াঘোনা হ্যাচারী, শাহমাদারি ও মদুনাঘাট গিয়ে দেখা গেছে হ্যাচারিতে ডিম সংগ্রহকারীরা তাদের আহরিত ডিম কুয়ায় সংরক্ষণ করে রেণু ফোটানোর কাজে ব্যস্ত। প্রতিটা হ্যাচারিতেই কয়েকটি করে কুয়া খালি পড়ে আছে। মাছুয়াঘোনা হ্যাচারিতে ১৪১ জন ডিম সংগ্রহকারীর ৯০টি নৌকায় ১১২০ কেজি, শাহমাদারিতে ১২২ জন ডিম সংগ্রহকারীর ৬১টি নৌকায় ৯০০ কেজি, মদুনাঘাটে ১৯ জন ডিম সংগ্রহকারীর গ্রুফে ৭৪টি নৌকায় ৭৭০ কেজি ও গড়দুয়ারা নয়াহাট কামাল সওদাগরের ৬টি নৌকায় নিজস্ব মাটির কুয়ায় ৮০ কেজিসহ মোট ১ হাজার ৮৭০ কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় অনেক গুন কম। জানতে চাইলে ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর ও মো. শফি জানান, পরিবেশ অনুকূলে না থাকা এবং লবনাক্ত পানি প্রবেশ করায় মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়েনি। আশা করছি সামনের জো (আগামি সপ্তাহে অমাবশ্যা) তে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ঘোলা পানি প্রবেশ করলে ডিম ছেড়ে দিবে। না হয় এবার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন ডিম সংগ্রহকারীরা।
নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন জানান, দুই কারণে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়েনি এক পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া দ্বিতীয়ত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাগরের লবনাক্ত পানি প্রবেশ করা। তবে সামনের জোতে পরিবেশ অনুকূলে থাকলে পুরোদমে ডিম ছেড়ে দিতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র এ হালদা নদী, ডিম ছাড়ার মৌসুমের তিন মাস পূর্বে কার্প জাতীয় মা মাছ দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ছেড়ে হালদার মিষ্টি পানিতে বিচরণ করতে চলে আসে। পরবর্তী ডিম দেয়ার সময় মা মাছেরা এপ্রিল-জুনের এ তিন মাসের অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার জোতে মুষলধারে বৃষ্টি, বজ্র ও পাহাড়ি ঢলে পানির স্রোতে নদীর গভীরতম স্থানে ও বাঁকে ডিম ছেড়ে দেয় হালদায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন