বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম আসছে। এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে যেকোন সময় বৃষ্টি হলেই মা মাছ ডিম ছাড়বে। এজন্য হালদা পাড়ের শত শত ডিম সংগ্রহকারীরা অপেক্ষায় রয়েছেন। ডিম সংগ্রকারীরাও ইতোমধ্যে প্রায় প্রস্তুতি নিয়েছেন। নৌকা, জাল বুনন কাজও প্রায় সম্পন্ন। মা মাছ ডিম দেয়ার অনুক‚ল পরিবেশ থাকলে সময় মতো ডিম দেবে বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।
হালদা নদীর জোয়ার ভাটায় মা মাছ চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারী আশু বড়–য়া। পাশাপাশি ডিম হতে সনাতন পদ্ধতিতে পোনা উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মাটির কুয়া পর্যন্ত প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা।
গত শনিবার হালদা নদীতে ৫ কেজি ওজনের একটি বড় আইড় মৃত মাছ উদ্ধারে ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে শঙ্কা বিরাজ করছে। গত মৌসুমেও হালদা নদীতে ডিম দেয়ার আগেও বেশ কয়েকটি মা মাছ পেটে ডিম থাকা অবস্তায় হালদা থেকে উদ্ধার করেছিল স্থানীয়রা। কিন্তু ডিম দেয়ার মৌসুমের পূর্বে হালদা নদীতে মা মাছ মরে যাওয়ার কারণ এখনো কেউ বের করতে পারেনি। হাটহাজারী, রাউজান, উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. রুহুল আমিন ও মো. জুনাইদ কবির সোহাগ দুইজনের প্রচেষ্টার কোনপ্রকার কমতি নেই। চলতি বা আগামী মাসে হালদায় মা মাছ ডিম দেবে। কিন্তু এ সময় মাছ মরে যাওয়াতে যেন ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে নেমে এসেছে চরম হতাশ। হালদা পাড়ের বাসিন্দা ও প্রবীন ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর জানান, যদি এপ্রিল বা মে মাসে বৃষ্টি হয় তাহলে মা মাছ ডিম দিতে পারে। বৃষ্টি আর মেঘের গর্জন হলে ডিম দেবে মা মাছ। এখানকার ডিম সংগ্রহকারীরাও প্রস্তুত রয়েছেন।
এদিকে, হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা বশির মোহাম্মদ সিপাহীর ঘাট, মাদার্শা, মাদারিপুল, মদুনাঘাট মাছুয়া ঘোনাসহ বেশ কয়েকটি স্পটে ও রাউজান উপজেলার বেশ কয়েকটি স্পটে মা মাছ প্রতি মৌসুমে ডিম দিয়ে থাকে। যার ফরে সেসব স্পটে ডিম সংগ্রহকারীরা তাদের যাবতীয় ডিম ধরার জিনিস নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। তবে কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী জানান, হয়তো অসময়ে মা মাছ ডিম দেয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এছাড়া সরকারি হালদা পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় পোনা রুপান্তর কারার হ্যচারিগুলো এখনো মেরামত কাজ বাকী রয়েছে। প্রতি বার নানা সমস্যার কারণে সংগ্রহ করা ডিম হ্যাচারিতে রাখতে পারেন না সংগ্রহকারীরা। এ সব সরকারি হ্যাচারিগুলো দ্রত মেরামত করার দাবি জানান ডিম সংগ্রকারীরা।
হালদায় মা মাছ ডিম দেয়ার মুহূর্তে কারখানার বর্জ্য যদি হালদা নদীতে প্রবেশ করে তাহলে মহাবিপদ বলে মনে করেন অনেকেই। রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন কার্প প্রজাতির মা মাছ ডিম দেয়ার প্রতি মৌসুমের আনুমানিক ৩/৪ মাস আগেই দেশের বড় বড় নদীগুলোর লবনাক্ত পানি ছেড়ে বিভিন্ন শাখা খাল বা নদী হয়ে মা মাছ চলে আসে হালদার মিষ্টি পানিতে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি তীব্র মেঘের গর্জন আর পাহাড়ি ঢল হালদায় প্রবাহিত হলেই পানিতে মা মাছ ডিম ছাড়ে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন