কুষ্টিয়ার বাজারে টাকা দিয়েও মিলছে না মোটা চাল। দেশের বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৪০ টাকায় উঠেছে। কয়েক বছরের মধ্যে এটিই মোটা চালের সর্বোচ্চ দাম। মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে এই মোকামে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। বর্তমানে ৩০ টাকার স্বর্ণা ও পাইজাম জাতের ধানের চাল মিলগেটে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
কুষ্টিয়া পৌর বাজারে অধিকাংশ দোকানেই ছিল না মোটা চাল। দু-একটি দোকানে কাজললতা ও পাইজাম ৪৮ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে। দেশের নিম্নআয়ের মানুষ এসব চালের প্রধান ক্রেতা।
কুষ্টিয়া জেলা অটো ও হাসকিং চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ও স্বর্ণা রাইস মিলের মালিক আব্দুস সামাদ বলেন, চাল দিতে পারছি এটাই বড় কথা, দাম দেখে লাভ নেই। বর্তমানে বাজারে মোটা জাতের কোনো ধান নেই। এই দামে বিক্রি করেও আমাদের লোকসান হচ্ছে। মিলে কোনো মোটা চাল মজুদ নেই। দুইদিন আগে ৪০ টাকা কেজিদরে পাইজাম চাল বিক্রি করেছিলাম। এই চাল ১০ দিন আগে কত দামে বিক্রি করেছিলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ১০ দিন আগে আমার মিলে কোনো চাল ছিল না।
আলিফ-মীম হাসকিং রাইস মিলের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসকিং মিল মালিকদের কোনো পুঁজি নেই। কোনো রকম ধুকে ধুকে চলছে মিলগুলো। তাই ধান অথবা চাল মজুদ করার কোনো ক্ষমতা নেই। ধান কিনে চাল উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাজারে বিক্রি করতে হয়। তা না হলে পরের চালানে ধান কেনা সম্ভব হয় না।
একাধিক মিল মালিক জানান, স্বর্ণা ও সুবর্ণা অটো রাইস মিলে এক হাজার টনের উপরে মোটা চাল মজুদ ছিল। কিছুদিন আগেও তারা মিলগেটে মোটা স্বর্ণা চাল ৩০ টাকা ও মাঝারি পাইজাম ৩৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে সেই চাল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি করছেন। তাও সবার কাছে চাল বিক্রি করছেন না। বলছেন মোটা চালের মজুদ নেই।
কুষ্টিয়ার পৌর বাজারের বড় চাল বিক্রেতা স্বপন বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও তারা মোটা চাল ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে সেই সব চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। এসব দামেও মোটা চাল পাওয়া যাচ্ছে না। আমার দোকানেও মোটা কোনো চাল নেই। বাজারের অধিকাংশ দোকানেই মোটা চাল নেই।
একই বাজারের ব্যবসায়ী আব্বাস বলেন, চাল চাইলে মিল মালিকেরা বলেন, মোটা চাল নেই। এ কারণেই বাজারে মোটা চালের সংকট দেখা দিয়েছে এবং দামও বেড়েছে।
এদিকে সাধারণ এসব নিম্নআয়ের মানুষের দাবি অসাধু মিল মালিকরা এসব চালের সঙ্কট দেখিয়ে দাম বাড়ায়। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি বলে দাবি করছেন সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন