খুলনায় টানা চার দিনের প্রবল বর্ষণে কৃষকের ধান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিছালিতেও পঁচন শুরু হয়েছে। ফলে একদিকে, কৃষক পরিবার ও গবাদি পশুর খাবারেও সঙ্কটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে আশা-নিরাশার দোলাচলে চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেছে খুলনার চাষিরা।
জানা যায়, খুলনা অঞ্চলের মাঠে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি বোরো ধান কাটার উৎসব চলছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে গৃহবন্দী থাকায় রয়েছে কৃষি শ্রমিক সঙ্কট। তার মধ্যে বাঁধ সেঁধেছে বৈশাখের বৈরী আবহাওয়া। অধিকাংশ কৃষকই ধান ঘরে তুলতে পারেন নি। কিন্তু এরই মধ্যে গত ৪/৫ দিনের প্রবল বর্ষণে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ধানও ভাসতে শুরু করেছে। এতে কাঁদা মিশে ধান ঝরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত খড়-কুটোও (বিছালি) পঁচতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অতিবর্ষণে খুলনার শস্য ভান্ডার খ্যাত ডুমুরিয়া উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে পানি জমে গেছে। এতে এ উপজেলার অধিকাংশ কৃষকই ক্ষতির শঙ্কায় ক্ষণ গুণছেন। বিশেষ করে এ উপজেলার সিংগাইর (সিঙ্গেরবিল), বানিয়াখালি বিল, খলশির বিল, বামনদিয়ার বিল ও গোনালির বিলসহ অধিকাংশ বিলই পানিতে থৈ থৈ করছে। বৃষ্টির এ পানিতে কৃষকের স্বপ্নও ভাসছে।
উপজেলার টিপনা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. জামাল গাজী বলেন, ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ১ একর ২০ শতক জমিতে বোরো রোপন করেছিলাম। ফলনও হয়েছিল ভালো। গত বৃহস্পতিবার ৮-১০জন শ্রমিক নিয়ে জমির ধান কেটে জমিতে রেখে দেই। দু’দিন রোদ পেলে একটু রস টানলে ঘরে তোলার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিতে গাছসহ ধান ভেসে উঠেছে। এতে ধান ও বিছালি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে তুলতে না পারলে এ ধান আর গোলায় উঠানো সম্ভব হবে না।
খুলনা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার বলেন, খুলনায় ৫৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত বছর ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদন হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন