শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাজধানীতে আসা-যাওয়া: চেকপোস্টে কড়াকড়ি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

রাজধানীর সড়কে গতকাল মঙ্গলবার ছিল তীব্র যানজট। বিশেষ করে রাজধানীর প্রবেশে ও বহির্গমনমুখে যানজট ছিল মারাত্মক। রাজধানীতে আসা যাওয়ায় পুলিশের কড়াকড়ির কারনে এই যানজট মারাত্মক রূপ ধারণ করে। ঢাকা শহরে আসা যাওয়ার পথে পুলিশের কড়াকড়ির কারনে শহরতলী এলাকা টঙ্গী, আমিনবাজার, কেরানীগঞ্জ, ডেমরা, রূপগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের বিপুল সংখ্যক মানুষ দূর্ভেগে পড়েন।

পল্টনের আমির স্টোরের মালিক আমির হোসেন বলেন, তারা দুই বন্ধু পরিবারসহ সোমবার মধ্যরাতে প্রাইভেটকারযোগে চাঁদপুরে রওয়ানা হন। মেঘনা টোল প্লাজার কাছ থেকে পুলিশ তাদের গাড়ি ফিড়িয়ে দেয়। ফলে বাসায় ফিরে আসতে বাধ্য হন।
গতকাল আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রতিবছর ঈদে ঘরফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘœ করতে পুলিশ তৎপর থাকলেও এবার পুলিশ তার উল্টো কাজটি করছে। মনে রাখতে হবে বেঁচে থাকলে আরও অনেকবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা যাবে। কিন্তু মারা গেলে কিংবা করোনা আক্রান্ত হলে এখানেই শেষ।

এরই মধ্যে ঢাকা শহরে প্রবেশ ও বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সক্রিয় হয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা চলাকালে গত রোববার থেকেই ঢাকা থেকে ঘরে ফিরতে উদগ্রীব মানুষ, যা গত সোমবার থেকে আরও বেড়ে যায়। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় রাজধানী থেকে বের হওয়া পণ্যবাহী ফিরতি ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার, এমনকি মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে দেখা যায় মানুষকে।

রাজধানীর গাবতলী, আমিনবাজার ব্রিজে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে চেকপোস্টে গিয়ে দেখা গেছে, গাবতলী বাস টার্মিনালের কাছে আমিনবাজার ব্রিজে পুলিশ ঢাকা থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ঢাকা থেকে সাভারে যারা অফিস করার উদ্দেশে বেরিয়েছেন তারা আটকা পড়েছেন। আমিনবাজার ব্রিজ থেকে টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত যানজট। এর মধ্যেও ঘরমুখী মানুষ দলে দলে পায়ে হেঁটে ঢাকা ছাড়ছেন। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে চেকপোস্ট পেরিয়ে অন্যান্য যানবাহনে ঢাকা ছাড়ছেন।

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের সহকারী কমিশনার কে এম শহীদুল ইসলাম বলেন, জরুরি সেবায় নিয়োজিত পরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনকে গাবতলী হয়ে বের হতে কিংবা ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। অত্যন্ত জরুরি কারণ ছাড়া ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হচ্ছে না। চেকপোস্টে কড়াকড়ির কারণে এলাকার সড়কে গাড়ি চলাচল সীমিত হলেও চাপ বেড়েছে। একই অবস্থা উত্তরা, টঙ্গী ও আব্দুল্লহপুর সড়কেও। যানবাহন না থাকায় কাঁধে ব্যাগ নিয়ে হেঁটে পুলিশের চেকপোস্ট পার হচ্ছে মানুষ। বগুড়ার মোহাম্মদ আলী তাদেরই একজন। তিনি বলেন, কীভাবে যাব জানি না। কিন্তু যেতে হবে। ঢাকায় থাকলে হয় করোনায় নয়তো না খেয়ে মরতে হবে।

টঙ্গী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গী সেতু দিয়ে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা গাজীপুর আসছেন। আবার ঢাকায় ফিরছেন। এই পোশাক শ্রমিকদের ভিড়ের মধ্যে গ্রামমুখী মানুষ মিশে গিয়ে টঙ্গী ব্রিজ পার হয়ে ঢাকা ছেড়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ। পুলিশ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন থামিয়ে মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। যদিও নানা অজুহাতে অনেকেই পেরিয়ে যাচ্ছেন চেকপোস্ট।

ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীবাহী যানবাহন ঢাকার দিকে প্রবেশে ও ঢাকা থেকে বাইরে বাধা দেয়া হচ্ছে। তবে জরুরি প্রয়োজনের কাজে ব্যবহারের যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যবাহী যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন আওতামুক্ত থাকবে। ওই সূত্র আরো জানায়, ঢাকা থেকেই বাইরে যাওয়ার উত্তরা, গাবতলি ও ডেমরাসহ সবগুলো পয়েন্টে সক্রিয় রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। নিদিষ্ট কারন ছাড়া যানবাহন নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গত কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ অনেকটা কম রয়েছে। তবে ঢাকা থেকে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য বিপুল পরিমাণ যানবাহন বের হয়ে যাচ্ছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন