বায়ুদূষণ এবং ধূমপান করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে গত দু’তিন দিন যাবৎ ঢাকার বায়ুদূষণ বৃদ্ধিতে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত ১৬ মে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ১৮৪ বায়ুমান সূচক নিয়ে বিশ্বে বায়ুদূষণের শহরের শীর্ষে ছিল ঢাকা। বুধবারও ১৩২ বায়ু মান নিয়ে ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। অস্বাস্থ্যকর বাতাসে সর্দি কাশি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর এতে করোনা বিস্তারের ঝুঁকিও অনেক বেশি। এ ছাড়া ধূমপানের কারণে শ্বাসতন্ত্রের নানাবিধ সংক্রমণ এবং কাশিজনিত রোগ তীব্র হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, বায়ুদূষণে সর্দি-কাশি বেড়ে যায়। আর সর্দি-কাশি হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। অন্যদিকে ধূমপানের কারণে ফুসফুস ও শ্বাসনালীতে নানা রকম সংক্রমণ হয়, সর্দি-কাশি হয়। এগুলো করোনা সংক্রমণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি।আর এসব সংক্রমণ করোনায় মৃত্যু ঝুঁকিও অনেক বেশি।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাধিক গবেষণা পর্যালোচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি জানিয়েছে, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের করোনা সংক্রমণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত অধূমপায়ীর চেয়ে ধূমপায়ীর মৃত্যুঝুঁকিও ১৪ গুণ বেশি।
তাইতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে সবধরনের তামাক কোম্পানির উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন এবং তামাকপাতা ক্রয়-বিক্রয় সাময়িকভাবে বন্ধের জন্য আবেদন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এটি বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে ১৮ মে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার কথা বলছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় সরকার করোনা মোকাবিলায় বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ক্রমবর্ধমান করোনা প্রতিরোধে, শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের তামাক কোম্পানিগুলোকে উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র প্রদান করা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় তামাক কোম্পানিকে দেয়া অনুমিত প্রত্যাহারসহ সকল তামাক কোম্পানির উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন এবং তামাকপাতা ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য চিঠির শেষ অংশে অনুরোধ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন