দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, সীমান্তে নজরদারি
রাজধানীর শ্যামবাজার সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়াও ময়ূর-২ নামের ওই লঞ্চের মালিক ও চালক এখনো লাপাত্তা। তবে তাদের গ্রেফতারে একাধিক অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। তবে তাদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। এছাড়াও আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সীমান্ত ও বিমানবন্দরে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। গতকাল সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, গত সোমবার সকালে বুড়িগঙ্গা নদীতে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামের একটি লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ রুটের মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তীতে ওই ঘটনায় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নৌ-পুলিশের এসআই শামছুল আলম। ওই মামলার আসামিরা হলেন- ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদ, মাস্টার আবুল বাশার, মাস্টার জাকির হোসেন, স্টাফ শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন, হৃদয় ও সুকানি নাসির মৃধা। এছাড়াও আরো ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘটনার পরপরই আসামিরা লাপাত্তা। তাদের গ্রেফতারের জন্য বেশ কয়েক জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। তবে গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘটনার পরপরই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে তাদের বাসা-বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে তাদের পাওয়া যায়নি। এছাড়াও তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাসা-বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সব ঠিকানায় অভিযান চালানো হয়েছে। তারপরও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, যদিও করোনার জন্য বিদেশ যাতায়াতে সীমাবদ্ধতা রয়েছে; তারপরও আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেই জন্য বিমানবন্দর ও সীমান্তে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই বিমানবন্দর ও সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে তাদের গ্রেফতারের ব্যাপারে বলা হয়েছে। তাই খুব শিগগিরই আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, ঘটনার পরপরই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে ওই কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য সংগ্রহ করেছেন। এমনকি লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারীর বক্তব্যও রেকর্ড করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তবে তদন্তের অগ্রগতি জানতে কমিটির প্রধান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব রফিকুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন