বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নান্দনিক হবে আদি বুড়িগঙ্গা

পুনরুদ্ধারে উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরুর পর প্রশস্ততা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে : ডিএসসিসি মেয়র

একলাছ হক | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নান্দনিক রূপ নিবে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল। আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের দুই পাড়ের বিভিন্ন অংশে ছিলো একাধিক বহুতল ভবন। ছিলো নানা প্রতিষ্ঠান, ফ্যাক্টরি। ইতোমধ্যে এসব ব্যক্তি মালিকানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই উচ্ছেদ অভিযান রয়েছে এখনো চলমান। বুড়িগঙ্গা নদীর সেই আদি চ্যানেল উদ্ধারে টানা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নদীতে পানিপ্রবাহ সৃষ্টি করতে খনন কাজও চলমান। সিটি করপোরেশনের এমন উদ্যোগে সন্তুষ্ট স্থানীয় বাসিন্দারা। উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলে এবং বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা হলে প্রাণ ফিরে পাবে বুড়িগঙ্গার এই চ্যানেলটি আশা সংশ্লিষ্টদের।

স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে করে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে। আর কেউ ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়। নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসর ব্যবস্থা করা যাতে করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন। আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
ডিএসসিসি সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ থেকে রায়েরবাজার পর্যন্ত। প্রায় সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই চ্যানেলের অনেক অংশ ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানোর পাশাপাশি চ্যানেলটির খননকাজও শুরু হয়েছে। বুড়িগঙ্গা খননের কাজ শুরুর পর আদি চ্যানেল এখন দৃশ্যমান। দখল-দূষণে মৃতপ্রায় চ্যানেলটিতে এখন পানির প্রবাহ ফিরেছে।

লালবাগ এলাকার আবু সাইদ জানান, বর্ষা মৌসুমে এই চ্যানেলে পানি থাকতো। দুই পাড়ের মানুষ নদীর পানিতে গোসল করতো। কালের বিবর্তনে আদি চ্যানেল তার প্রাণ হারায়। তবে ডিএসসিসির কার্যক্রমে আশার আলো দেখছেন তারা। এলাকার স্থানীয়রা মনে করছেন উচ্ছেদ অভিযান শেষ করে আদি চ্যানেলের ময়লা পরিস্কার করা হলে প্রাণ পাবে এটি। স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধা বাড়বে।

এবিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে সীমানা নির্ধারণ ছাড়াও দখলদার উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরুর পর এই চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বুধবার বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলে চলমান উচ্ছেদ, পরিষ্কার ও খনন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

মেয়র তাপস বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা দীর্ঘ ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে শুধুমাত্র ভরাট হয়েছে। ময়লা-বর্জ্য দিয়ে এটা সয়লাব করা হয়েছে। এই প্রথম আমরা আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কার্যক্রমটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং দুরূহ। চারপাশ দিয়ে দখল করে এই চ্যানেলকে সংকীর্ণ করে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, যে পাশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি- সেটার মাঝামাঝি জায়গায় এখন সরু পানি প্রবাহের যে জায়গাটা দেখা যাচ্ছে, (কার্যক্রম শুরুর পূর্বে) নদীটা ততটুকু বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এখন আমরা এটার প্রশস্ততা প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে।
দখলদারদের নানা বাধা উপেক্ষা করেই বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এখানে অনেক বাধা ছিল। অনেকগুলো মামলাও করা হয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। সেটার আওতায় আমরা কাজ আরম্ভ করেছি। এছাড়াও এরই মাঝে আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি এবং নতুন করে প্রকল্প প্রাক্কলনের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো পূর্ণভাবেই নদীটাকে পুনরুদ্ধার করা। স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে করে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে। আর কেউ ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়। নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসর ব্যবস্থা করা যাতে করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন। আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন