শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

নবজাতক শিশুর প্রাণ বাঁচাতে অসহায় পরিবারের পাশে কুমিল্লা জেলা পুলিশ

কামাল আতার্তুক মিসেল | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতককে বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে রেখে উধাও হয়ে যাওয়া সেই নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নজরে আসে এই পুলিশ সুপারের। এরপরই শিশুর সার্বিক ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন তিনি। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়ায় শিশুটি এখানো ঝুঁকিমুক্ত নয়। 

গত বুধবার জমজ কন্যা সন্তান হয় মিজানুর রহমান ও শিরিন আক্তার দম্পতির। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়ায় এক শিশু মারা যায়। অপর সস্তানকে বাঁচাতে নগরীর ঝাউতলা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসার খরচের পরিমাণ শুনে শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে চলে যান বাবা-মা।
৩ দিন পরে হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির মা শিরিন আক্তার জানান, টাকার অভাবে চিকিৎসার খরচ দিতে পারছেন না তারা। পরবর্তীতে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নজরে আসে পুলিশের। পরে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম নবজাতকের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মানবিকতার এমন খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন শিশুটির বাবা-মা ও স্বজনরা। এরআগে কুমিল্লা নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের এনআইসিইউতে নবজাতককে ভর্তি করে উধাও হয়ে যান বাবা। লক্ষাধিক টাকা বিল পরিশোধের ভয়ে হাসপাতালে নবজাতক সন্তানকে দেখতে আসেননি শিশুটির বাবা-মাসহ স্বজনদের কেউ। এতে অভিভাবকহীন এ শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার সদর উপজেলার আড়াইওরা গ্রামের হতদরিদ্র মিজানুর রহমানের স্ত্রী শিরীন আক্তার জমজ সস্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর একটি শিশু মারা যায় এবং অপর মেয়ে শিশুটির জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে ওঠে শিশুটির চিকিৎসা বাবদ খরচ আসে ১ লাখ ৩০ হাজার ১০৭ টাকা।
শিশুটির বাবা মিজানুর রহমান বলেন, আমার টাকা দেয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না, তাই ফোন রিসিভ করিনি এবং হাসপাতালে আসিনি। শিশুটির মা শিরিন আক্তার জানান, সন্তানকে ভর্তির পর টাকার জন্য হাসপাতালে আসতে পারছি না, এর চেয়ে লজ্জা আর কী হতে পারে। এ কারণে আমার স্বামী হাসপাতালে আসতে পারেননি। আমার অসুস্থতা সত্তে¡ও হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য অনেকের কাছে টাকার জন্য ছুটে গিয়েছি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি, আমাদের পাশে কেউ এসে দাঁড়ায়নি।
এদিকে অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়ায় শিশুটির অবস্থা ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইমরান।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে ইনকিলাবকে বলেন, এই কয়েকদিনে যে বিল এসেছে, হতদরিদ্র এ দম্পতির সেটা পরিশোধের সামর্থ্য নেই। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিশুটি সুস্থ হওয়া পর্যন্ত আমরা চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠলে আমাদের মানবিক সেবার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন