বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গাজীপুরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে ডিবি পুলিশ

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ মামলার খবর জানেনা বাদী

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানির অভিযোগ করেছে মামলার বাদি ও বিবাদী পক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের সূর্য নারায়ণপুর এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন মামলার বাদি ও বিবাদী পক্ষ। মামলার বাদী মো. নাসির উদ্দিন আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেছেন তিনি কারো বিরুদ্ধে মামলা করেননি। ডিবি পুলিশ তাকে মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে বাদী জানতে পারেন তিনি নাকি পরিবহন নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিবহন শ্রমিক নেতা মামুন খন্দকার বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করে কোন রকমে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকি। সড়ক পথে মানুষের যাতায়ত ও পণ্য পরিবহনে আমাদের অবদান অনেক তার উপর সম্প্রতি নতুন করে যুক্ত হয়েছে গাজীপুর মহানগর ডিবি পুলিশের হয়রানি।
তিনি বলেন, গত ২০ জুলাই দুপুরে পরিবহন শ্রমিক আল আমিনকে (২২) নগরীর ভোগড়া বাজার এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে এবং নগরীর ইটাহাটা (কলাবাগান) এলাকার বাসিন্দা আজগর আলীকে (৪৫) নিজবাড়ি থেকে আটক করে ডিবি অফিসে নিয়া যায়।

স্বজনরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নগরীর চান্দনা চৌরাস্তার সিটি কলেজ এলাকার সেলিমের বাড়ির ভাড়াটে চান্দনা চৌরাস্তা-চন্দ্রা রুটের সিএনজি চালক নাসির উদ্দিন ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার ওই দুইজনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সিএনজি চালিত অটো রিকশা থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে নির্যাতন করে চাঁদাবাজির সাথে শ্রমিক নেতাদের নাম জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে। পরে আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়। অথচ এ মামলা সম্পর্কে কিছুই জানে না বাদী নাসির উদ্দিন। এ বিষয়ে নাসির উদ্দিন আদালতে উপস্থিত হয়ে হলফনামা দিয়ে বলেন, ডিবি পুলিশ তাকে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে তাকে সিএনজি চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়। দীর্ঘক্ষণ আটক রাখার পর সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। পরে জানতে পারেন তিনি মামলার বাদি। প্রকৃতপক্ষে তিনি মামলার বিষয়ে কিছু জানে না। আসামীরা জামিন পেলে তার কোন আপত্তি নেই জানালে আসামীরা জামিন লাভ করেন। একই ভাবে একই রকম অভিযোগে আরো দুইটি মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা হয় বাসন থানায়। যার একটির বাদি শরীফ মিয়া। এ মামলাতেও নাইম ও খোকন নামে দুইজনকে আসামি করে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। বাদী মামলা সম্পর্কে আদালতে হলফনামা দিলে তারা জামিনে মুক্তিপান। অপর মামলায় এখনো তিন শ্রমিক কারাগারে বন্দি রয়েছেন। পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, মিথ্যা মামলা, দিয়ে হয়রানির কারণে তারা আতঙ্কিত। সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর ডিবি পুলিশের জুলুম থেকে বাঁচতে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, স্বরাস্ট্র মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগিরা।

সংবাদ সম্মেলনে কারাগারে আটক পরিবহন শ্রমিকদের স্ত্রী ও স্বজনরা এবং মামলার বাদী ও বিবাদী এবং তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পুলিশের ডিসি হুমায়ূন কবীর বলেন, মামলার বাদীকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বা কোন কিছুর বিনিময়ে হলফনামা আদায় করা হয়েছে। আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশ কাউকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলার কাগজে সাক্ষর নেয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন