শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বাংলাদেশে ‘জঙ্গি কার্যক্রম’ পরিচালনায় ভারতীয় তরুণী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:৫৫ এএম | আপডেট : ১১:২১ এএম, ১৯ জুলাই, ২০২০

ঢাকা থেকে ধর্মান্তরিত ভারতীয় এক মুসলিম নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃত ওই নারী ভারতীয় নারী জঙ্গি ও নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির অন্যতম সদস্য বলে জানানো হয়েছে।–সাউথ এশিয়ান মনিটর

পুলিশের দেয়া তথ্য, গ্রেফতারকৃত আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫) ধর্মান্তরিত মুসলিম। আগে তার নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায় তার বাড়ি। ওমানপ্রবাসী এক বাংলাদেশির সঙ্গে বিয়ের পর আয়েশা এ দেশে এসে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সূত্রে জানা গেছে, ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক আমির হোসেন সাদ্দামকে মুঠোফোনে বিয়ের পর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আয়েশা গত বছরের অক্টোবরে চলে আসেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করছিলেন আয়েশা। নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী গ্রেফতার হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আয়েশা। তবে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভারতীয় ওই নারীর অনলাইনে ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশি আমির হোসেন সাদ্দামের সঙ্গে যোগাযোগ হয়, পরে ‘টেলিফোনে দুজনের মধ্যে’ বিয়ে হয়। তিনি বলেন, এর আগে থেকে সে নব্য জেএমবির নারী শাখার সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ রাখতো। সেখান থেকে সে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলমান হয় এবং এক পর্যায়ে নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর কমলাপুর এলাকা থেকে আসমানী খাতুন ওরফে আসমা ওরফে আমাতুল্লাহ সিটিটিসির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২৮ বছরের এই নারীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় রিমান্ড শেষে তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলাতেই ভারতীয় এই তরুণীকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

সাইফুল বলেন, এই তরুণী একাধিকবার বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন। তার এই আসা-যাওয়ার কারণ কি ছিল তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। সর্বশেষ গত অক্টোবরে স্বামী সাদ্দামের পরামর্শে তাসনিম বাংলাদেশে এসে আসমানীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। বাংলাদেশে আসার পর সে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট তৈরি করে তা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। তা দিয়ে নব্য জেএমবির সদস্যদের সহায়তায় ঢাকার কেরানীগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় চাকরি নেয়। ফেব্রুয়ারিতে আসমানী গ্রেফতার হওয়ার পর সে চাকরি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় এবং গোপনে নব্য জেএমবির নারী সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে জানান সিটিটিসির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচপত্র ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাসনিম অনলাইনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এরপর ধর্মান্তরিত হয়ে অনলাইনে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে। সেখান থেকে নব্য জেএমবির সদস্যরা তাকে দলে ভেড়ান। সিটিটিসি কর্মকর্তা সাইফুল বলেন, এরপর থেকে আসমানীর পরামর্শে সে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ ও সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তার আরও বেশ কিছু সহযোগী আছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানান, তিনি ২০১৬ সাল থেকে ভারত থেকে নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করেন। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বও পালন করেছেন। সিটিটিসি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেছেন, আয়েশার কাছ থেকে তারা বেশকিছু কাগজপত্র পেয়েছেন। ওই কাগজপত্রগুলো যাচাই বাছাইয়ের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
am iqbal ১৬ আগস্ট, ২০২০, ৮:৪৩ পিএম says : 0
It is an indian drama.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন