আজ পবিত্র আশুরায়ে মহররম। রক্তাক্ত কারবালাসহ বিভিন্ন ঘটনাবলীর সাক্ষী এই দিনটি। নফল রোজাসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় দিবসটি পালিত হয় মুসলিম বিশ্বে। তবে বৈশ্বিক মহামারি কোভিডের কারণে এবার বড় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। কোভিডের কারণে এ বছর সীমিত করা হয়েছে পবিত্র আশুরার নানা আনুষ্ঠানিকতা। শত শত বছরের ঐতিহ্য ভেঙে পবিত্র আশুরায় প্রথমবারের মত আমাদের রাজধানী ঢাকাসহ শহরজুড়ে হচ্ছে না তাজিয়া মিছিল।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমামবাড়ার ভেতরেই রাতে হয় সংক্ষিপ্ত তাজিয়া মিছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করতে হয়েছে হোসেনী দালান চত্বরেও। ইমামবাড়া ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এবার সব আনুষ্ঠানিকতা ইমামবাড়াকে ঘিরেই। শনিবার রাত থেকেই শিয়া মতার্দশীরা ইমামবাড়ায় যেতে শুরু করেন। ভোররাত পর্যন্ত তারা জিকির, মাতম ও বয়ান করেন। রোববার সকাল ১০টায় বের হয় ঐতিহাসিক তাজিয়া মিছিল। তবে তা ইমামবাড়ার ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। ঐতিহ্যবাহী আচার-আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় অনেকের মন খারাপ হলেও করোনার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তা মেনে নিয়েছেন শিয়া মতাদর্শীরা। সেই সঙ্গে আগামী বছর কোভিডের প্রাদুর্ভাব কমে গেলে জাকজমকভাবে তাজিয়া মিছিলের আশা করছেন তারা।
হোসাইনি দালান ইমামবাড়া তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, কোভিড পরিস্থিতির কারণে এবারের অনুষ্ঠান কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যতটুকু সম্ভব এর মধ্যেই আমরা সবকিছুই করব। এটা ধর্মীয় আকিদার বিষয়। তিনি বলেন, তাজিয়া মিছিল আমাদের ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। এর আগে মিছিল বন্ধ ছিল বলে আমার জানা নেই। কারফিউ ছিল, বড় বড় ঝড়-তুফান হয়েছে, কখনো আমাদের মিছিল বন্ধ ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সবার দিকে খেয়াল রেখে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার মিছিল রাস্তায় নামবে না।
আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টি, ফেরাউনের কবল থেকে মুসা (আ.)এর মুক্তিলাভ, মহাপ্লাবনে নূহ আলাইহিস সালামের নৌযাত্রাসহ বিভিন্ন ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ১০ই মহররমে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মুসলিম বিশ্বে অনেকটা প্রধান হয়ে উঠেছে কারবালার বিয়োগাত্মক ইতিহাস। হায় হোসেন ধ্বনি… ফোরাত নদীর শোক এখনও অমলিন মুসলিম হৃদয়ে। হোসনি দালানের তাজিয়া মিছিলে কালো কাপড়, হৃদয়ে শোকের মাতম হয়ে থাকে প্রতিবছরই। কিন্তু এবছরের প্রেক্ষাপট অনেকটা ভিন্ন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন