স্টাফ রিপোর্টার : তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ, সিটিসেল গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন এবং বায়োমেট্রিকের জালিয়াতি বন্ধের দাবি জানিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল (রোববার) প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে তাদের পড়ালেখা যেমন নষ্ট হচ্ছে আবার অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে পরিচয় হচ্ছে। তাই বর্তমানে জঙ্গিদের চাহিদা এসব প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মেধাবী ও ইংরেজি মাধ্যমে পড়–য়া ছেলেমেয়েরা। এসব তরুণ প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তি, বিভিন্ন সাইট, অ্যাপ, পেজ খুলতে সক্ষম। সরকার যখন প্রযুক্তি খাতে বিলিয়ন ডলার আয়ের সম্ভবনার কথা বলছে ঠিক সেই সময় এই বিপথগামী তরুণরা আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। মহিউদ্দীন আহমেদ সম্প্রতি ইন্টারনেট বন্ধে বিটিআরসির বিশেষ মহড়ার সমালোচনা করে বলেন, ডিজিটাল বিশ্বে ও আকাশ সংস্কৃতির যুগে ইন্টারনেট বন্ধ করা কোনো ভালো কাজ নয়। বিটিআরসি কেন আগ থেকেই অন্যের সহযোগিতা ছাড়াই নিজ সক্ষমতায় ঐ সব সাইট, অ্যাপ বা ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারছে না? কারণ আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডবিøউ) তার নিজের মধ্যে না রেখে মধ্যস্বত্বভোগী প্রায় ৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদান করেছে। আর এসব লাইসেন্সধারীদের কারণেই ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশনে ক্যাবলের জঞ্জালে আবদ্ধ হয়েছে।
হঠাৎ করে সিটিসেল বন্ধ এবং গ্রাহকদের ভিন্ন অপারেটর গ্রহণে বিটিআরসির বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রাহকদের কথা বিবেচনা না করে, তাদের কোনো কথা না শুনে বা তাদের কোনো প্রতিনিধির সাথে পরামর্শ না করেই বিটিআরসি এ ধরনের নির্দেশনা দিতে পারে কি না? কারণ প্রতিটি গ্রাহক এ অপারেটরের পেছনে বিনিয়োগ করেছে (হ্যান্ডসেট, রিম এবং মোডেম)। এগুলো অন্য কোনো অপারেটর ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কাজে আসবে না। অন্য অপারেটরে গেলে প্রায় ৭ লাখ ১০ হাজার গ্রাহক বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই অর্থ কে পরিশোধ করবে তা বিটিআরসিকে ঘোষণা প্রদান করতে হবে। বর্তমান নিবন্ধিত গ্রাহকদের হিসাব অনুযায়ী এই ক্ষতির পরিমাণ ১৪২ কোটি টাকা। এছাড়া মডেম ব্যবহারকারীর ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি ও সামাজিক সুরক্ষা তহবিলের টাকা ৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ মোট ক্ষতির ১৮০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। বিটিসিএল ও টেলিটকের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে মুঠোফোন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, বিটিসিএল ও টেলিটক ভয়েস ক্যারিয়ার, আইজিডবিøউ, আইসিএক্স, আইআইজি, পিএসটিএন, আইএসটি, এনবিবিএন-এর মতো ৭টি লাইসেন্স রয়েছে, যা কি না মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তারপরও বিটিআরসি এই সরকারি দুই প্রতিষ্ঠানের নিকট পাওনা ৩ হাজার ২শ’ কোটি টাকা। তারপরও তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে সরকার দ্বৈতনীতির অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া বাজারে বিপুল পরিমাণ প্রি-অ্যাক্টিভ সিম বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়, যা গ্রাহকদের জন্য হুমকিস্বরূপ। সংবাদ সম্মেলনে ১২ দফা সুপারিশও তুলে ধরা হয়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইসরাত হাসান, আইটি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ঈমাম ফিরোজ, আইটি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী মো: সাইফুল্লাহ, যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি হারুন অর রশীদ খান, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবির চৌধুরী তন্ময়, আওয়ামী ন্যাপ ভাসানীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো: ইব্রাহিম, সংগঠনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন