মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় মমধুমতি নদীর তীব্র ভাঙ্গনে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হতে চলেছে।নদী ভাঙ্গনের তীব্রতায় উপজেলার মানচিত্র থেকে কয়েকটি গ্রামের শতশত একর জমি,ঘরবাড়ী, বৃক্ষ সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে। নদী তীরবর্তি মানুষের বুকফাটা হাহাকার আর আর্তনাদে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশের নিচে। উপজেলার চর পাতুড়িয়া,কাশিপুর,ধুলঝুড়ি, গোপাল নগর হেরকৃষ্ণপুর গ্রামে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশী। চর পাতুড়িয়া গ্রামের সহায় সম্বল হারানো নেপুর শেখ বলেন, নদী তাদের সহায় সম্বল সব কেড়ে নিয়েছে। কোথায় যাব থাকব কোথায় তা জানা নেই। ক্ষতিগ্রস্থ সামাদ শেখ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে নদী ভাঙ্গননসহ আগত মানুষের দিকে। অপর ক্ষতিগ্রস্থ মুজিবর মোল্যা বলেন, গাঙ্গের কুলে জন্ম, গাঙ্গে একবার নয় কয়েকবার বাড়ীঘর বিলীন করেছে। এখন আর পারছিনা নতুন করে বাড়ীঘর তৈরী করতে। কাশীপুর গ্রামের কুতুব উদ্দীন বলেন,নদীর মধ্যে বাড়ীর অর্ধেক জমি বিলীন হয়েছে। বাকিটুকু যেকোন সময় ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হবে। তখন কি হবে ভেবে পাচ্ছিনা। হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের অনেকেই জানান,গত বছর অনেকেই সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছে। কিছু অংশ জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় কম। অতিশিগ্র জিও ব্যাগ দেয়া নাহলে অনেক পরিবার ভিটেহারা হবে। বসবে পথে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্নবাসন করাহবে বলে শান্তনা দিঢেছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুলাহেল কাফি জনগনকে সতর্ক থাকতে বলে জানান, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে আবার নতুন করে মহম্মদপুরে মধুমতি নদীর তীরবর্তী রায় পাশা ও চরপাচুড়িয়া গ্রামে নদী ভাঙ্গনে জনগনের ঘরবাড়ি চলাচলে রাস্তা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ দেখার কেউ নেই। গাছপালা আবাদী জমিও রেহাই পাচ্ছেনা।নদীর ভাঙন আর স্রোতে দিশেহারা সেখানকার তীরবর্তী গ্রামের অসংখ্য পরিবার।
অভিযোগ ওঠে, নদীটির বিভিন্ন অংশ ভাঙতে ভাঙতে এই অবস্থায় পৌঁছালেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনও উদ্যোগ নেয়নি। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ও গ্রামের অসংখ্য মানুষকে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনেক দিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই নদী ভাঙনের কথা শুনেছে, কিন্তু এখনো কেউ এগিয়ে আসেনি। বর্ষা এলেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে কিন্তু বাস্তবে কোনও কাজের প্রতিফলন ঘটেনি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান জানানন বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
গ্রামের লোকজনের চলাচল এখন প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কৃষি জমির পাশ দিয়ে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে শিশুসহ বৃদ্ধরা চলাচল করছে। রায়পাশা থেকে চরপাচুড়িয়া যাতায়াতের একমাএ রাস্তারও বেহাল অবস্থা। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরম দূর্ভোগে জনগন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন