শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

গড়াই নদীর ভাঙনে হুমকি : দুশ্চিন্তায় ৮ গ্রামের মানুষ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২২, ১১:৫৪ এএম

নতুন করে আবারো গড়াই নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। এর ফলে জমিজমা ও ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে উপজেলার সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ৮ গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার।

নতুন করে বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছেন সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া, কৃষ্ণনগর, হাকিমপুর ইউনিয়নের মাদলা এবং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর, মাজদিয়া ও উলুবাড়িয়া গ্রাম। প্রায় দুই যুগ ধরে গড়াই নদীভাঙনের কবলে পড়ে বদলে গেছে নদীর গতিপথ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়ুরিয়া, কৃষ্ণনগর, খুলুমবাড়ি, মাদলা, কাশিনাথপুর ও লাঙ্গলবাঁধ। ভিটেবাড়ি ও সহায়-সম্বল হারিয়ে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পাউবোর প্রধান সেচ খালের কাছে।

সারুটিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের রহিম মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীভাঙন একদম আমার বাড়ির কাছে চলে এসেছে। সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি কোন সময় ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দুই মাস ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পানি কমছে আর গড়াই নদী ভয়াল রূপ নিচ্ছে। ইতোপূর্বে নদীগর্ভে ভিটেমাটি চাষাবাদের জমি ও সহায়-সম্বল হারিয়েছি আমরা। হাকিমপুর ইউনিয়নের পূর্ব মাদলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সোবহান বলেন, গড়াই নদীর ভাঙনে এলাকার অনেক বাড়িসহ ফসলি জমি যেকোনো সময় বিলীন হতে পারে। আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। শিগগিরই নদীভাঙন রুখতে না পারলে গুচ্ছগ্রাম, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর, ভিটেমাটি ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।

একই গ্রামের রেবেকা খাতুন বলেন, নদীগর্ভে সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব। নদীর ভয়াল আচরণে গত ২০ বছরে চারবার জায়গা পরিবর্তন করেছি। আবারো আমরা ভাঙনের হুমকির মুখে। আমার স্বামী মারা গেছে, এক ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ভিটা আঁকড়ে ধরে আছি। বর্তমানে খুব কষ্টে দিন পার করছি। আমরা যে কষ্টে আছি এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বাররা খোঁজ নেয় না। এই ভাঙন রোধে আগাম কোনো ব্যবস্থা নিলে হয়ত এতো ভয়ানক রূপ নিতো না সর্বনাশা গড়াই। ৬ নং সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন ও ৮ নং ধলরাহচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিশ্বাস বলেন, নদীভাঙন রোধে ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলীর এসব এলাকা পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি তা না করে দায়িত্ব অবহেলা করেছেন। যদি আগাম ব্যবস্থা নিতেন তাহলে ভাঙন এমন রূপ নিতো না। শিগগিরই ভাঙনরোধে পদক্ষেপ না নিলে পরিবারগুলো সব হারিয়ে একদম নিঃস্ব হয়ে যাবে।

শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বনি আমিন বলেন, আমি সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। বেশ ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে সেখানকার লোকজন। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুতই বরাদ্দ আসবে। তখন কাজ শুরু হবে। ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করছি। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন