শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পেনশন-বেতন জটিলতা

কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করা নিয়ে অর্থ বিভাগের দুটি সার্কুলার বাতিলের দাবি জানিয়েছে গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক ও অসংগতিপূর্ণ মতামত ও ব্যাখ্যা প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনিক আদেশ জারি না করায় সারাদেশে কর্মচারীদের ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে।

গতকাল বুধবার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে স্মারকলিপির অনুলিপি দেওয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশন মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এসব কর্মচারীর দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে, ওই দুটি সার্কুলারের কারণে শত শত অবসরমুখী ও পেনশনগামী কর্মচারীদের পেনশন তুলতে না পেরে দুর্ভোগের শেষ নেই। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরগুলো পেনশন কেইসগুলো ছাড় করছে না। নিষ্পত্তিও করছে না। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকেও পেনশন আটকে দিচ্ছে। চাহিদামতো ঘুষ দিলে কেউ কেউ পেনশন উত্তোলন করতে পারছে আবার কেউ কেউ পারছে না। অর্থ বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতির কারণে কর্মচারীদের পেনশন কর্তন করে নিচ্ছে। সরকারের বিধিমালা মানা হচ্ছে না।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের ৯ এপ্রিল থেকে ১৯৯৭ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শুরু হওয়া উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সহজ ও সরলীকরণ নীতি ও পদ্ধতি অনুসারে রাজস্ব খাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থানান্তর করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০০৫ সালের ২০ জুন জারিকৃত উন্নয়ন প্রকল্প হইতে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের নিয়মিতকরণ ও জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ বিধিমালাতে বলা হয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে নিয়মিত হওয়া কর্মচারীদের চাকরিকাল গণনার ক্ষেত্রে নিয়মিতকৃত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর উন্নয়ন প্রকল্পে চাকরিকাল তার বেতন, ছুটি, পেনশন ও আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি নির্ধারণে ক্ষেত্রে গণনা করা হইবে। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের প্রকল্পের চাকরিকাল গণনা করে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড দেওয়ার অবকাশ নেই জানিয়ে ২০০৮ সালের ২৪ মার্চ জনগ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে মতামত দেয় অর্থ বিভাগ। এরপর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার সঙ্গে অর্থ বিভাগের মতামত সাংঘর্ষিক ও পরস্পরবিরোধী জানিয়ে এর সমাধানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ধর্না দেন। এ অবস্থায় বিষয়টি স্পষ্ট করে অর্থ বিভাগ ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানায়, ২০০৮ সালের ২৪ মার্চ অর্থ বিভাগ যে মতামত দিয়েছিল তা এ সংক্রান্ত বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অসঙ্গতিপূর্ণ নয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, অর্থ বিভাগের ১৯৮৪ সালের ১ ডিসেম্বরের অফিস স্মারক অনুযায়ী, আত্তীকৃত বা দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কর্মরতদের চাকরিকাল অনুসারে অর্থাৎ চাকরির ৮, ১২ ও ১৫ বছর পূর্তিতে পর পর তিনটি উচ্চতর স্কেল দেওয়ার বিধান রয়েছে। কর্মচারীরা জানান, ১৯৭২ সালের ৯ এপ্রিল থেকে ১৯৯৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উচ্চতর স্কেল সুবিধা ভোগ করছিলেন। অর্থ বিভাগের ওই মতামত ও ব্যাখ্যার ফলে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে নিয়মিত হওয়া শত শত অবসরমুখী ও পেনশনগামীদের পেনশন তোলায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সে কারণে বন্ধ করা সংক্রান্ত অর্থ বিভাগের দুটি সার্কুলার বাতিলের জন্য দাবি জানানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন