শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আড়াইহাজারের আ.লীগ নেতার ভাতিজা সেই ধর্ষক নাঈম কারাগারে

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২০, ৫:৫৫ পিএম

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নাঈম হাসান (২৮) অবশেষে আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দীনের আদালতে সে আত্মসমর্পণ করে। আপিলের শর্তে জামিন পেতে আদালতে আত্মসর্মপণ করেছিল নাঈম। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
এলাকাবাসির অভিযোগ, আওয়ামীলীগনেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা হয়ায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ধর্ষক নাঈম প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। অবশেষে থানার জনৈক কর্মকার্তার পরামর্শে গ্রেফতার এড়াতে আদালতে হাজির হয়ার জন্য বলা হয়।
দন্ডিত নাঈম হাসান আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আব্দুর রউফ ওরফে রূপ মিয়ার ছেলে ও আওয়ামীলীগ নেতা ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন।
পিপি রকিবউদ্দিন জানান, এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আাড়াইহাজারে মেধাবী এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর ধর্ষণকারী নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে আদালত। রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ আসামীকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার দুই লাখ আদায় করে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত। রায়ের ওই সময় আদালতে ধর্ষণকারী নাঈম অনুপস্থিত থাকায় ফের তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
মামলার বরাত দিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যডভোকেট কাজী আব্দুস সেলিম ও অ্যডভোকেট মাসুদ রানা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ এ নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রীকে ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে ধর্ষক নাঈম হাসান। অপহরনের পর রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে যায়। পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা দেয়। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে অপহরনসহ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নেয়াসহ যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে গোপনে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এছাড়াও জামিনে প্রতারনা আশ্রয়সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেয়। পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর এ স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন