হারুন-আর-রশিদ
বাংলাদেশে রাজনীতিতে হারজিতের খেলাটি দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয়েছে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী এবং স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানÑ বাংলাদেশের ইতিহাসে এ চারটি নাম যথাযথ মর্যাদার দাবিদার, যা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে হলেও ভারতীয় দুষ্টু চক্রের অসৎ পরামর্শে আওয়ামী ঘরানার একটি ব্যাপক অংশই সাবেক শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া অবশিষ্ট তিনজনকে স্বীকার করে নিতে চান না। জাতীয় ঐক্যের বিনষ্টের সূত্রপাত আওয়ামী লীগ থেকেই শুরু হয়েছে। ’৭৫-এর পরবর্তী রাজনীতি থেকে এটা জোরালো রূপ ধারণ করে এবং সেই থেকে জাতীয় ঐক্যে ধস নামতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১০ জানুয়ারি ’৭২ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। প্রত্যাবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর উচিত ছিল ১৯৭২ সালে সর্বদলীয় সরকার গঠন করা, যেটা বঙ্গবন্ধু করেছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নামে।
১৯৭২ সালে যদি তাজউদ্দীন আহমদের হাতে সমস্ত গুরুদায়িত্ব অর্পণ করে অবজারভার হিসেবে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেন তা হলে ১৯৭৫-এর বিয়োগান্তক ঘটনাটি ঘটত না বলে অনেকেই মনে করেন। স্বাধীনতার পর জাতি একটি সর্বদলীয় সরকার প্রত্যাশা করেছিলÑ সেই দলের নাম বকশাল হলেও জাতি হয়তো আপত্তি তুলত না। সেই সময় থেকেই আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়Ñ একটি তাজউদ্দীন গ্রুপ, আরেকটি মুশতাক গ্রুপ। বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনের চেয়ে বেশি মাত্রায় মুশতাক আহমেদের সিদ্ধান্ত নিতেন। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তাজউদ্দীন আহমদই প্রবাসী সরকার গঠন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সফল গুরুদায়িত্ব পালন করেছিলেন। মানুষ জানত তাজউদ্দীন আহমদ একজন মেধাবী ও সৎ মানুষ ছিলেন। নির্মোহ এ মানুষটি এত কিছু করার পরও আওয়ামী লীগের কাছে তিনি মূল্যহীন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর দেশ পরিচালনায় চালকের ভূমিকায় যদি তাজউদ্দীন আহমদ থাকতেন তাহলে সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে যে লুটপাট, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি ঘটেছিল তা ঘটত না ব্যাপক আকারে।
শেখ মুজিবুরের ভক্ত ও পরামর্শদাতা এবং অনেক দিকনির্দেশনা, অনুপ্রেরণা বঙ্গবন্ধু যার কাছ থেকে পেয়েছিলেন তার নাম সিরাজুল আলম খান। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে এই মেধাবী রাজনীতিক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র নাম দিয়ে রব-জলিলকে ফ্রন্ট লাইনে রেখে জাসদ নামে একটি দল গঠন করেন। এই দলে বহু আওয়ামী লীগের নেতার আগমন ঘটে। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং বাম ও ডান ঘেঁষা অনেক ছাত্র সংগঠন রব-জলিলের দলে ফিরতে থাকেন। নেপথ্যে ছিলেন সিরাজুল আলম খান। এভাবেই বৃহত্তর দল আওয়ামী লীগ দ্বিখ-িত হয়ে যায়। সে সময় বিএনপি নামক দলটি মাতৃগর্ভে ছিলÑ দিনের আলোটি পর্যন্ত দর্শন করেনি। যারা এখন বলছেন মুজিব হত্যায় জিয়া জড়িত, তাদের এই কনসেপ্ট ধোপে টেকে না, কোনো লজিকেও টেকে না। তখন সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল সফিউল্লাহ। তার কমান্ডেই চলত সেই সময়ের সেনাবাহিনী।
সম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে দেখলাম, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু সফিউল্লাহকে টেলিফোনে বলেছিলেন, তোমার ফোর্স পাঠাও। উত্তরটা ছিল এরকম, ণড়ঁ সধু মড় ড়ঁঃ ভৎড়স ুড়ঁৎ যড়ঁংব. তারপর তিনি রিসিভারটা রেখে দেন। বাংলাদেশের জন্মটা যেভাবে শুরু হয়েছিল শেষকালে তা একটা ভুলের জন্য ম্লান হয়ে যায়। সারেন্ডার ডকুমেন্টে মুক্তিযুদ্ধের সমর নায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানিকে স্থান দেওয়া হয়নি। তিনি ঢাকায় আসতে পারেননি। কুমিল্লায় বাধার সম্মুখীন হন। এসব ঘটনা পরবর্তী সময়ে পত্রপত্রিকায় এসেছিল। কেন জনগণের মধ্যে বিভক্তিÑ শেখ মুজিব জাতির জনক তাকে একটি দলের নেতা হিসেবে পরিচিত করিয়ে দেওয়াও ভুল সিদ্ধান্ত। সব দলের সব মানুষের নেতা যে শেখ মুজিব এ কথাটি তার দলের নেতারা মানুষকে বুঝাতে পারেননি। ইতিহাসের পাতা দিন-তারিখসহ উল্টালে সবই বুঝতে পারবেন গলদ কোথায়। দেশের পরিস্থিতি আজ এ অবস্থায় কেন। আমরা জানি এই উপমহাদেশে তিনটি দল সবচেয়ে পুরনো তা হলোÑ কংগ্রেস, মুসলিম লীগ এবং আওয়ামী লীগ। বংশানুক্রমে কংগ্রেস থেকে মুসলিম লীগের জন্ম। মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম। পরে আওয়ামী মুসলিম লীগ পরিণত হয় আওয়ামী লীগে। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবও মুসলিম লীগের কর্মী ছিলেন। তখন তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র। তার গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবও মুসলিম লীগের বড় নেতা ছিলেন। মওলানা ভাসানীও তাই ছিলেন।
আজকের বিএনপি ও জাতীয় পার্টিÑ যাদের জন্ম স্বাধীনতা-উত্তর। কিন্তু বংশানুক্রমে দল দুটির বড় মাপের নেতারা আওয়ামী লীগের জঠরস্থ সন্তান। উদাহরণস্বরূপ মরহুম মিজানুর রহমান, ওবায়দুর রহমান, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, মির্জা গোলাম হাফিজ এবং মওদুদ আহমদ, কাজী ফিরোজ রশিদসহ আরো বহু নেতা রয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগ থেকে এসে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সাথে বর্তমানে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ভিন দেশ বা কোনো গ্রহ থেকে এদের আগমন ঘটেনি। সুতরাং দল দুটির সব নেতাই নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য বড় দলে যোগদান করেন। নির্বাচন এলেই এ দৃশ্য বেশি লক্ষণীয়। যেদিকে হাওয়া সেদিকেই তারা পাল তোলেন।
এবার একটু পেছনে তাকানো যাক। ১৯১১ সালে স¤্রাট পঞ্চম জর্জ ভারতের জাতীয়তাবাদী নেতা গোখেলকে প্রশ্ন করেছিলেনÑ ইংরেজরা ভারতের অনেক উন্নতি করিয়ে দিলেও ভারতীয়রা স্বাধীনতা চায় কেন। গোখেলের ঝটপট উত্তর ছিলÑ ভারতীয়রা স্বাধীন হয়ে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। অর্থাৎ গোখেলের চিন্তা-চেতনায় স্বাধীনতা আত্মমর্যাদার প্রতীক ছিল। কবি শামসুর রাহমান না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার কবিতার একটি পঙ্ক্তি আছেÑ ‘স্বাধীনতা তুমি ফসলের মাঠে কৃষকের মুখে হাসি’। বুঝতে অসুবিধা হয় না এখানে স্বাধীনতা বলতে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বাধীনতার চেতনা একেক নেতার মুখে একেক রকম। কিন্তু গোখলে ও কবি শামসুর রাহমান স্বাধীনতার অর্থবোধক বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তির কথা হিসেবে বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু এখন মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া যায় না। ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনে একটি মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছিলÑ ‘নৈতিকভাবে এই সরকার গ্রহণযোগ্য নয়। এই নির্বাচনে ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছেন ১৫৩ জন।’ সাবেক সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান বাংলাভিশন চ্যানেলে এক টকশোতে অংশ নিয়ে এ মন্তব্যটি করেন।
অপ্রিয় শোনালেও সত্য যে, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বড় দুটি দল দেশ পরিচালনা করেছে অথচ ছাত্র রাজনীতির কেন্দ্র ভূমি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। ঢাকসু, রাখসু, চাকসু, জবিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। অথচ ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেয়া দুটো দলের সময় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন ছিল। এ কারণে ছাত্রদের মধ্যে সে সময় আজকের মতো এত অস্থিরতা, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা যায়নি। কেন সংসদীয় গণতান্ত্রিক সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিচ্ছে নাÑ এ প্রশ্ন রাখতে হয়। কারণ গণতন্ত্রেও চর্চাহীন ছাত্র সমাজের মধ্যে আজ কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো কৈফিয়ৎ তলব করা যায় না, তারা মুক্তবিহঙ্গÑলেজুড়বৃত্তিই তাদের নেশা ও পেশা; অর্থ আয় করাই মুখ্য উদ্দেশ্য। এ জন্য দায়ী ছাত্র সমাজ নয়, দায়ী শাসকবৃন্দ।
রাজনীতির হঠকারিতার ইতিহাস বড়ই বেদনাদায়ক এবং নিষ্ঠুরও বটে। ১৯৯০-এর ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানে সামরিক সরকার এরশাদের পতন হলো। নতুন নির্বাচনের দিন-তারিখ সুনির্দিষ্ট হলো। ঠিক এই সময়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের শরিকদের ভুলে সদম্ভে তখন আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছিলেনÑ আওয়ামী লীগের সমর্থকদের গণজোয়ারে বিএনপি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা ১০টি আসনও পাবে না। অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া বলেছিলেন, বিএনপির হাতেই রয়েছে স্বাধীনতার পতাকা, অন্যদের হাতে রয়েছে গোলামির জিঞ্জির। জনগণের ভোটে বিএনপিই জয়ী হবে ইনশা আল্লাহ। নির্বাচনের ফলাফলে সেটাই ঘটেছে। শেখ হাসিনা তখন বললেন, এক অদৃশ্য শক্তির গোপন আঁতাতের মাধ্যমে নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি ঘটেছে। এ নির্বাচন মানি না। তারপর আওয়ামী লীগকে ভিন্ন চেহারায় দেখা গেল। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে আন্দোলনে নামার নানা কৌশল আবিষ্কার করে এবং একপর্যায়ে দেখা গেল চিরশত্রু জামায়াত ও জাতীয় পার্টিকে দুই পাশে বসিয়ে এবং পেছন দিক থেকে ব্যাকআপ হিসেবে বামপন্থিদের নিয়ে শুরু হলো অভিনব কায়দায় নন ইস্যুকে ইস্যু হিসেবে দাঁড় করিয়ে ঐকমত্যের আন্দোলন। কি না হয়েছে তখন। লাগাতার সংসদ বর্জন, সংসদ থেকে গণপদত্যাগ, বিএনপি সরকারকে সহায়তা না দেয়ার জন্য বাইরের রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান, চট্টগ্রাম বন্দর অচল করে দেয়া, যমুনা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের দিন হরতালসহ ২৭৬ দিনের সহিংস হরতাল। যারা হরতাল সমর্থন না করে হেঁটে অফিসে যাচ্ছিলেন, বাবার বয়সী একজন সচিবকে দোয়েল চত্বরে দ্বিগম্বর করে দেয়া, পাশাপাশি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এক মঞ্চ বানিয়ে নাম দেওয়া হয় জনতার মঞ্চ। সেখানে গান-বাজনা, নাচ সবকিছুই বিরতিহীনভাবে চলছিল। তখন আ’লীগের রাজনীতির স্লোগান ছিল নৌকায় ভোট দিলে গণতন্ত্র দেব। বর্তমানে দুই টার্মে ক্ষমতায় এসে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ এর জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রায় সবকটি নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আওয়ামী লীগ তখন ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপিকে সাড়ে তিন মাসের মাথায় ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করে। রাজনীতির কূটকৌশলে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগ অনেক পরিপক্ব। তার প্রমাণ ’৯১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জাতি স্বচক্ষে তা প্রত্যক্ষ করেছে। জাতীয় ঐকমত্য একমাত্র সেনা শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনে হয়েছে। এর পর ২৬ বছরে ৫ টার্মে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং মাঝ পথে দুই বছর মেয়াদি সামরিক বাহিনীর ছত্রছায়ায় কেয়ারটেকার সরকারÑ কোনো সময়েই জাতীয় ইস্যুতে বড় দুটো দলের মধ্যে ঐকমত্য হতে দেখা যায়নি। ভবিষ্যতে হবে বলেও মনে করি না। দেশের অস্থিরতার অবসান, জঙ্গিবাদের অবসান এবং গণতন্ত্রের মূল ধারায় প্রত্যাবর্তন করাÑ এর কোনোটাই সম্ভব হবে কিনা আল্লাহই সেটা ভালো জানেন।
চলমান প্রসঙ্গ নিয়ে দু-একটি কথা বলতেই হয়। বিএনপির চিন্তাবিদরা নানা ছবক দিচ্ছেন কিন্তু তারা রাজনীতির মারপ্যাঁচ বোঝেন না বলেই ধারণা করা যায়। তারা বলছেন, জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করলে রাজনৈতিক ঐক্য সম্ভব। আমি মনে করি, জামায়াতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও আওয়ামী লীগ বিএনপির সাথে ঐক্যে আসবে না। বিগত ২৬ বছরে এর নজির নেই। বিদেশিরাও বহু চেষ্টা চালিয়ে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসিয়ে জাতীয় সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের প্রশ্নÑ জামায়াতের গায়ে যখন এত গন্ধ তাহলে এই গন্দময় দলটিকে এখনো নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না কেন। সরকার তো এখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। কারণ সংসদের শতভাগই তো তাদের দখলে কিংবা তারা এবং তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর দখলে। যদি ধরে নেই আওয়ামী লীগ একটি বিল সংসদে উপস্থাপন করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করল। জামায়াত নিষিদ্ধ হলো, কিন্তু অন্য নামে যদি জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এ নতুন দলের সাথে যে আওয়ামী লীগের জোট হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে। জামায়াত এক সময়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। এমন একটি পরিস্থিতি পুনরায় যে হবে না তার গ্যারান্টি কি বিএনপির চিন্তাবিদরা নিশ্চয়তা দিতে পারবেন?
বাংলাদেশের রাজনীতির জুয়া খেলায় বিএনপি বরাবরই মার খাচ্ছে। গত ৫ আগস্ট বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি জামায়াতকে ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। এ প্রশ্নের উত্তর বিএনপি দিতে পারেনি। অন্তত এটুকু তো বলতে পারতÑ গোলাম আযমের দোয়া নিতে কারা গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ তাদের সাথে ’৯১-৯৬ এর আন্দোলন কীভাবে করল। এরশাদের পাতানো নির্বাচনে জামায়াতকে সাথে নিয়ে কীভাবে গেল। জনগণ এসব ভুলে যায়নি। তাছাড়া, কেউ যে ধোয়া তুলসী পাতা নয়, বিষয়টি বিএনপি খোলাখুলি বলতেই-বা ভয় পাচ্ছে কেন?
য় লেখক : গ্রন্থকার, গবেষক ও কলামিস্ট
যধৎঁহৎধংযরফধৎ@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন