শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিলাসবহুল গাড়িতে শুল্ক কমালে অধিক রাজস্ব আয় সম্ভব

‘কার মার্কেট ইন বাংলাদেশ : চ্যালেঞ্জেস এন্ড প্রসপেক্টস’ শীর্ষক ওয়েবিনারে : সালমান এফ রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৮ এএম

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, উচ্চ সিসির গাড়িতে আমদানি শুল্ক কমানো হলে রাজস্ব আয় বাড়বে। বর্তমানে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ১২৮ শতাংশ থেকে ৮২৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কাঠামো রয়েছে, যা অত্যন্ত বেশি। শুল্ক কাঠামো কমানো হলে দেশের আরও বেশি সংখ্যক লোক বিলাসবহুল গাড়ি কিনবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে যে ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়ন করা হচ্ছে তাতে সড়ক এবং যানবাহন ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভূক্ত করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সড়কের ধারণ ক্ষমতার সাথে গাড়ি চলাচলের বিষয়টি সম্পর্কযুক্ত। পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) গতকাল ‘কার মার্কেট ইন বাংলাদেশ : চ্যালেঞ্জেস এন্ড প্রসপেক্টস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ওয়েবিনারে যুক্ত ছিলেন। বিশ্ব ব্যাংক, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ওয়েবিনারটির সমন্বয়ক ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর।

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আনোয়ারুল আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স এন্ড ডিলার্স এসোসিয়েশনের (বারভিডা) প্রেসিডেন্ট আবদুল হক এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর এম রিয়াজ।

পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর তাঁর মূল প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশে সৌর এবং জ্বালানিভিত্তিক মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করতে হবে। এদেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্পকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমরা নতুন প্রযুক্তির গাড়ি নির্মাণের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।

ড. মনসুর বলেন, পাকিস্তানের নিজেদের তুলা ও সুতা থাকা সত্তে¡ও পুরনো যন্ত্রপাতির কারণে তারা গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে ভাল করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ নিজেদের সুতা না থাকা সত্তে¡ও নতুন প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতির কারনে গার্মেন্টস শিল্পে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। একইভাবে দেশে যদি বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ শিল্প গড়ে ওঠে তাহলে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারে।

ড. আহসান মনসুর বলেন, নতুন গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও প্রস্তাবিত অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি বন্ধ করা উচিত হবে না। এ বিষয়ে ভারতের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। তাছাড়া বাংলাদেশে বিক্রিত মোট গাড়ির ৭০ শতাংশ হচ্ছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি যেগুলোর ৮০ শতাংশই জাপান থেকে আমদানি করা এবং স্বল্পব্যবহৃত। দেশে যেন কোন স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প স্থাপন না করা হয় নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ওয়েবিনারের সমন্বয়ক বিশ্ব ব্যাংক, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ক্রেতারা যাতে দক্ষ, নিরাপদ এবং পরিবেশ বান্ধব গাড়ি পান সে বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স এন্ড ডিলার্স এসোসিয়েশনের (বারভিডা) প্রেসিডেন্ট আবদুল হক বলেন, সরকারকে দেশ এবং আঞ্চলিক ও বৈশি^ক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে হবে। জার্মানি, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলো যেহেতু বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তাই আমাদেরকেও উচ্চ প্রযুক্তির পথে এগুতে হবে। উদারহণস্বরূপ তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ২০ বছরেও গাড়ি নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, এবং মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬০ টি গাড়ি নির্মাণ শিল্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬০ বছরে গাড়ি নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। তাই সরকারকে বিদ্যমান বিনিয়োগ, লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান এবং পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন প্রযুক্তি গ্রহনের মাধ্যমে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

এনবিআর’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, স্থানীয় বাজার ও রফতানি বাজার এবং ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ টার্গেট করে যদি নতুন বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায় তবে দেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

এনবিআর’র সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, বর্তমানে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ১২৮ শতাংশ থেকে ৮২৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কাঠামো রয়েছে, যা অত্যন্ত বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সিকেডি এবং সিবিইউ’র উপর বিদ্যমান শুল্ক পুণর্বিবেচনা করা হতে পারে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আনোয়ারুল আলম বলেন, সরকার প্রস্তাবিত নীতিমালাটি চূড়ান্ত করার আগে সকল ঝুঁকিগ্রহীতাদের মতামত গ্রহণ করবে। এছাড়া এ নীতিটি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Eva Khan ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৪ এএম says : 0
আমি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাহেবের সাথে একমত
Total Reply(0)
ডালিম ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৫ এএম says : 0
আমার কাছে বিষয়টি উল্টো মনে হচ্ছে
Total Reply(0)
কাওসার ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
দেশের জন্য যেটা ভালো হবে, সেটাই করা উচিত
Total Reply(0)
নিয়ামুল ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
দেশে উচ্চ সিসির গাড়ি উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া দরকার
Total Reply(0)
সঞ্জয় ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
আমরা সব কিছুতেই আমদানি নির্ভর হয়ে যাচ্ছি
Total Reply(0)
আবদুল হাই ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৪০ পিএম says : 0
নতুন গাডী আমদানী করলে বেশী,ঋন পাবে। আর ধনীরা ঋন নিলে ফেরত দেওয়া লাগবে না। তাই তারাতারি গাডী আমদানী ঋন নিয়ে গাডী কিনতে পারবে। খালি উন্নতি হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন