ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দু’টি গ্রুপের মধ্যে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটনা ঘটতে পারে। পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রোববার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় ইট ও পাথরের আঘাতে কমপক্ষে সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এছাড়া সরোয়ার নামে বিদ্রোহী প্রার্থীর এক কর্মীকে মুমুর্ষ অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আওয়ামীলীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী কাজী আশরাফুল আজম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী পৌর আওয়ামীলগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক তৈয়বুর রহমানের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী তৈয়বুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি নির্বাচনে জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দীতা করছে। রোববার (৩ জানুয়ারী) দুপুরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারন সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু স্বাক্ষরিত চিঠিতে তৈয়বুর রহমানকে বহিস্কারের তথ্য জানানো হয়।
যদিও উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী কাজী আশরাফুল আজম ও বহিস্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান একে অপরকে দুষছেন। আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী কাজী আশরাফুল আজমের দাবি, রোববার বিকালে আমার কর্মীরা সমর্থকরা নৌকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় দলের বিদ্রাহী প্রার্থীর সমর্থকরা আমার মিছিলে হামলা চালায়। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান বলেন, নৌকা মার্কার মিছিল থেকে তার নির্বাচনী অফিসে হামলা চালানো হয়। এ সময় সরোয়ার নামে তার এক কর্মী গুরুতর আহত হয়।
তবে স্থানীয়রা বলছে, রোববার সন্ধ্যার একটু আগে নৌকা মার্কার একটি মিছিল শহরের চৌরাস্থা হয়ে সরকারী ডিগ্রী কলেজ রোড দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তৈয়বুর রহমানের অফিস অতিক্রমের সময় উভয় মেয়র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১২ রাউন্ড ফাকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় ইটের আঘাতে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয় বলে পুলিশ দাবি করছে।
এ ঘটনার পর শৈলকুপা থানার তদন্ত ওসি মহসিন হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৬ জানুয়ারী তৃতীয় ধাপে শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজনের মধ্যে বিএনপি থেকে সাবেক মেয়র খলিলুর রহমান ধানের শীষ ও জাতীয় পার্টি থেকে আবু জাফর লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩৬ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। নির্বাচনে পৌর এলাকার ৯ ওয়ার্ডের ২৮৬৩২ জন ভোটার ১৫ কেন্দ্রের ৯২ কক্ষের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন