শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সংঘাতে বাড়ছে উত্তাপ

উন্নয়নের প্রতীক নৌকা : রেজাউল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

গণতন্ত্রের পক্ষে ধানের শীষ : শাহাদাত


চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় উত্তাপ বেড়েই চলেছে। ভোটের প্রচারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দেড় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ১০জনকে। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হানা দিয়ে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি

হুমকি এবং উস্কানিতেও ভোটের মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার অঙ্গীকার করছেন বিএনপির নেতারা। এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি পালিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজছে। ধানের শীষের কর্মীদের বাসাবাড়িতে হানা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। রিটার্নিং কর্মকর্তা দাবি করেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ রয়েছে। ভোটের বাকি আর মাত্র চারদিন। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে সংঘাত-সহিংসতা। এ অবস্থায় শান্তিপূর্ণ ভোট নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটারেরা।
বুধবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকেলে নগরীর বাকলিয়া বলিরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রাতে নাসিমন ভবনস্থ নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই দলের কর্মীরা। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, নৌকার সমর্থনে তাদের মিছিল ওই এলাকা অতিক্রমকালে নাসিমন ভবন থেকে হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় নৌকার একটি নির্বাচনী ক্যাম্প। অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে দলীয় অফিসে হামলা হয়েছে। ভাঙচুর হয়েছে ধানের শীষের প্রার্থীর গাড়ি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের অদূরে রাতের এ সংঘাতে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিএনপির ৪৫ নেতাকর্মীকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বাকলিয়ার বলিরহাটের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সময় জোর করে সেখানে ঢুকে হামলার অভিযোগে ৮১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মামলার পর পুলিশ এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

নির্বাচনের প্রচারের সময়ও ফুরিয়ে আসছে। ভোটের প্রচার চলবে আর মাত্র তিনদিন। এ কম সময়ে বেশি ভোটারের কাছে যেতে মরিয়া বড় দুই দলের মেয়র প্রার্থীসহ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রার্থীদের মাইকিংয়ে ভোটারের কান জ্বালাপালা। জনপ্রিয় সব গানের প্যারোডি বানিয়ে ভোটের প্রচার চলছে। অলিগলি থেকে রাজপথ ছেঁয়ে গেছে পোস্টার, ব্যানারে। অনলাইনে চলছে ব্যাপক প্রচার। মেয়র ও কাউন্সিলরদের গণসংযোগ ও পথসভা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন। দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেও ভোটের প্রচারে সরগরম বন্দরনগরী।

নৌকার মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম গতকাল নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, উন্নয়নের শত্রæরা মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও স্বাধীনতার শত্রæদের সাথে যাদের সখ্যতা, তারা কখনো জনগণের কল্যাণ চায়না। তারা গুজব, দাঙ্গা হাঙ্গামা ও অরাজকতার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। জাগ্রত প্রজন্মের প্রতিরোধে তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও প্রজন্ম সজাগ থাকবে, অন্ধগলির রাজাদের নজরদারিতে রাখবে। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানান। এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা তার সাথে ছিলেন।

নগরীর হালিশহরে গণসংযোগ করেন ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে বিজয়ী হতে চায়। কিন্তু জনগণ তাদের পক্ষে নেই। চট্টগ্রামবাসী গণতন্ত্রের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে। তিনি ২৭ জানুয়ারি হুমকি-ধমকি ও ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার এ প্রচেষ্টায় সবাইকে সামিল হতে হবে। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম এখনো অবহেলিত। মেয়র নির্বাচিত হলে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। এ সময় বিএনপির নেতারা তার সাথে ছিলেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন