শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শেষ মুহূর্তেও প্রচারে সমানে সমান

জনসমর্থন হারিয়ে প্রলাপ বকছে বিএনপি : রেজাউল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে আসুন : শাহাদাত

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ হলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচার। গতকাল সোমবার শেষ দিনে তুঙ্গে ছিল ভোটের প্রচার। পতেঙ্গা থেকে জালালাবাদ, হালিশহর থেকে বাকলিয়া, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে জমজমাট প্রচার চালিয়েছেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও ধানের শীষের ডা. শাহাদাত হোসেনসহ মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা। হরেক স্লোগান, গান-বাজনা, নানান প্যারোডি, মাইকিং, পথসভা ও গণসংযোগে মুখরিত হয় গোটা নগরী। টানা ১৮ দিনের মত শেষ মুহূর্তেও মহানগরী জুড়ে প্রচারে সমানে সমান ছিলেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী।
গতকাল প্রধান এ দুই প্রার্থীর পক্ষে মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। দল সমর্থিত সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও প্রচারে সামিল হন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে ভোটের প্রচার। রেজাউল করিম চৌধুরী এবং ডা. শাহাদাত হোসেন আজ মঙ্গলবার ব্যস্ত থাকবেন কেন্দ্র কমিটির নেতাদের সাথে মতবিনিময় ও সমন্বয় সভা নিয়ে। পোলিং এজেন্টদের নানা দিক-নির্দেশনা দেবেন তারা। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সাড়ে সাত শতাধিক ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক কমিটি গঠন নিয়েও সরকারি দলে কলহ-বিরোধ রয়েছে। শেষ মুহূর্তে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করা হবে। ধরপাকড়ের মধ্যেও দলীয় পোলিং এজেন্টরা যাতে সক্রিয় থাকেন সেটি নিশ্চিতে কাজ করছেন বিএনপির প্রার্থী।
শেষ দিনের ভোটের প্রচারে বড় দুই দলের প্রার্থী নানা প্রতিশ্রুতি দেয়ার পাশাপাশি একে অপরকে দোষারোপও করেছেন। নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম অভিযোগ করেন, বিএনপি জনসমর্থন হারিয়ে প্রলাপ বকছে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। অন্যদিকে ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাতের অভিযোগ, ধানের শীষের জোয়ার ঠেকাতে সরকারি দল প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। তিনি ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নগরবাসীকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল নগরীতে গণসংযোগ, পথসভা এবং বিভিন্ন সংগঠন, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল তার সাথে ছিলেন।
ডা. শাহাদাতের নির্বাচনী এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। আমরা কাদের এজেন্ট হিসেবে মনোনীত করেছি তা যেমন কোন মিডিয়ায় প্রকাশ করিনি, তেমনি বিএনপিও প্রচার করেনি। সুতরাং তাদের এজেন্টদের হয়রানি করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে যদি কারো বিরুদ্ধে মামলা থাকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করবে। নগরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের এ কাজে কারো আপত্তি থাকার কথা না। এখানে আমার কোন হাত নেই। বিএনপি মূলত জনসমর্থন হারিয়ে, প্রত্যাখ্যাত হয়ে এমন অভিযোগ করছে। আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিএনপি আসলেই কোন এজেন্ট দিচ্ছেন কিনা কিংবা আদৌ নির্বাচন করতে চায় কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়।
এদিকে বিএনপির প্রার্থী ডা: শাহাদাত হোসেন নগরীর জামালখান, এনায়েত বাজার, আলকরণসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ও জনপ্রিয় দল। জনগণের প্রতি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধতা থেকে চসিক নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। চট্টগ্রামের জনগণের প্রত্যাশা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। বিএনপিরও প্রত্যাশা সুষ্ঠু প্রতিদ্ব›িদ্বতার মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতা, মন্ত্রী-এমপিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রচারে আমি যে এলাকায় গিয়েছি, বিএনপির প্রতি, ধানের শীষের প্রতি সাধারণ মানুষের জোয়ার দেখেছি। সেই জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী-এমপিদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় দলবাজ, অতি উৎসাহী কর্মকর্তা এবং নিজেদের দলের গুন্ডা-মাস্তানদের লেলিয়ে দিয়েছে। এ সময় তার সাথে ছিলেন বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান শামীম, এ এম নাজিম উদ্দীন, আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ান, একরামুল করিম প্রমুখ।
প্রচারে মারামারি ছাত্রলীগ নেতাকে ছুরিকাঘাত
নগরীর আগ্রাবাদ-বেপারী পাড়ায় কাউন্সিলর প্রার্থী এইচএম সোহেলের প্রচারের সময় দুই পক্ষের মারামারিতে ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগের এক নেতাসহ দুইজন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন- মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য জালাল আহমদ রানা, অ্যাডভোকেট রমজান আলী। স্থানীয়রা জানান, বেপারী পাড়া সিটি সেন্টারের সামনে এক পক্ষ হঠাৎ করে প্রচারে হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ডবলমুরিং থানার ওসি মহসিন জানান, মারামারির ঘটনা শুনেছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
পারভেজ ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:০০ এএম says : 0
এখন দেশে কি মানুষের ভোটাধিকার আছে ?
Total Reply(0)
ডালিম ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:০০ এএম says : 0
এগুলো সব লোক দেখানো। গত এক দশক ধরে কোন ভোট দিতে পারছি না
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন