সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলায় ৫২টি হাওরের দুই লাখ ২৩ হাজার ৩০০ হেক্টর বোরো জমির ফসল রক্ষায় ৬১২ কিলোমিটার বাঁধ সংষ্কার কাজ নিয়ে চলছে অনিয়ম ও দুর্নীতি। এ প্রকল্পের ২ মাস পেরিয়ে গেলেও জেলার ১১ উপজেলার বিশ্বম্ভপুর, সদর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে কাজ শুরু হলেও রয়েছে ধীর গতি। অন্যদিকে ধর্মশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধের অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।
১১ উপজেলায় ৫২টি হাওরের দুই লাখ ২৩ হাজার ৩০০ হেক্টর বোরো জমির ফসল রক্ষায় ৬১২ কিলোমিটার বাঁধ সংষ্কার ও মেরামতে ১৬২ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ৭৮৭ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) বাঁধের কাজ করবে। যার অনুকূলে প্রাথমিক ভাবে ৬২ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে বাউবোর কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) অনুযায়ী জমির মালিক ও প্রকৃত কৃষকদের দিয়ে পিআইসির মাধ্যমে বাঁধের কাজ করা হলে ৬১২ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হবে।
কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী গত ৩০ নভেম্বর মধ্যে বাঁধের কাজের জরিপ পিআইসি গঠন করে এবং ১৫ ডিসেম্বর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু এবং আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা। গত ১৫ ডিসেম্বর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হলেও বাঁধের অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।
শনির হাওর পাড়ের কৃষক মাসুক মিয়া বলেন, এলাকার প্রকৃত কৃষককে বাদ দিয়ে প্রভাবশালীদের দিয়ে পিআইসি গঠন করা হয়েছে। অথচ বাঁধের কাজে এমন ধীর গতিতে কৃষকের ফসল নিয়ে শঙ্কার শেষ নেই। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই দ্রুত সময়ে সকল হাওর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় জানান, বাঁধের বরাদ্দের টাকা লুট চলছে। পানি ও আগাম বন্যা আসার আগে বাঁধের কাজ শেষ হবে না। তিনি আর বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে প্রকৃত জমির মালিক ও কৃষকদের দিয়ে পিআইসি গঠন করা হয়নি। বাঁধের কাজে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। গত বছরের অপ্রয়োজনীয় বাঁধের কারণে হাওরের পানি সময়মতো নিষ্কাশন না হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জেলাসহ প্রতিটি উপজেলায় এক যোগে ফসল রক্ষা বাঁধে নির্মাণে ধীর গতি, অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে।
এদিকে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিবুর রহমান জানান, ৫০০টির অধিক পিআইসির কাজ চলমান রয়েছে। বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় পিআইসি গঠন ও বাঁধের কাজে কিছু বিলম্ব হয়েছে। তবে আশা করছি আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব। পিআইসি গঠনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন