দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের আদালত চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। চেয়ার ভাঙচুর থেকে মারামারিতে অন্তত ৬ জন আইনজীবী আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালত চত্বরে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ভিতরেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনের মাধ্যমে এক বছর মেয়াদী কমিটি গত বছরের ২৬ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করে। দায়িত্বভার গ্রহণের পর-পরই সাবেক কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ তছরুরেপর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। অডিট কমিটির মাধ্যমে প্রায় এক কোটি টাকা তছরুপের কথা বলছে বর্তমান কমিটি। তবে সাবেক কমিটি বলছে আইনজীবী সমিতির নতুন ভবন নির্মাণসহ সকল কার্যক্রম উপ-কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। অর্থ তছরুপের বক্তব্য মনগড়া ছাড়া আর কিছু নয়্ এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হলেও নিয়মিত কোন মামলা হয়নি। অর্থ তছরুপসহ আরো বিবিধ বিষয় নিয়ে বর্তমান কমিটি দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই মূলত আইনজীবীরা বিভক্ত হয়ে পড়ে। ইতোপূর্বে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে উচ্চ মহল থেকে উভয়পক্ষকে শান্তিবস্থা বিরাজের পরামর্শ দেয়া হয়।
গত ৩ মার্চ বর্তমান কমিটি বিবিধসহ মোট ১০টি এজেন্ডা দিয়ে সাধারণ সভা আহবান করে। কিন্তু একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর মৃত্যুর কারণে সাধারণ সভা বাতিল হয়ে যায়। পরদিন অর্থাৎ গত বুধবার বর্ধিত সভা আহবান করে। সদ্য বিদায়ী সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন গঠনতন্ত্র মোতাবেক সভা শুরু অর্থাৎ কোরাম পূর্ণ না হলে পরবর্তীতে নোটিশ দিয়ে নির্ধারিত সময়ে সভা আহবান করতে হবে। এছাড়া সভায় ২ নং এজেন্ডা নিয়ে বিরোধী পক্ষ দৃঢ় অবস্থান নেয়।
সূত্রটির মতে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ একবছর। কিন্তুসভায় ২ নং এজেন্ডায় কমিটির মেয়াদ বিষয় রাখার মাধ্যমে কমিটির মেয়াদ নির্বাচন ছাড়াই বৃদ্ধির অপচেষ্টা বলেই অভিহিত করছেন বিরোধীতাকারীরা। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বক্তব্য হচ্ছে বিরোধিতা থাকতেই পারে। তা হবে ফোরামে। সভায় এসে তা আলোচনা করতে হবে। কিন্তু বিরোধী পক্ষ হটকারিমূলকভাবে ফোরামে না এসে আদালত চত্বরে ব্যানার ফেস্টুন মাইক লাগিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। এরই এক পর্যায়ে সংঘর্ষের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। মাথায় আঘাত পেয়ে এডভোকেট সারোয়ার আহম্মেদ বাবু ও আনম হাবিবুল্লা আহত হলে তাদের এম্বুল্যান্সে হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যান্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। বর্তমানে আদালত পাড়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন