অবশেষে জুড়ীর ফুলতলা বটুলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত আব্দুল মুমিন বাপ্পার লাশ গ্রহন করেছে বিজিবি।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিএসএফ আবার লাশ নিয়ে আসলে বিজিবি গ্রহন করে। সময় বাংলাদেশ পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার দেলওয়ার হোসেন ও জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী। অপরদিকে ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ১৬৬ বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার সুরেন্দ্র কুমার ও ভারতের কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার। লাশ দেশে ফেরার পর স্বজন ও গ্রামবাসীরা কানায় ভেঙ্গে পরেন। দূপুরে লাশ ফেরত চেয়ে ক্ষুব্দ পূর্ব বটুলী গ্রামবাসী ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্প ঘেড়াও করে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক আব্দুল মুমিন বাপ্পা হত্যার ৩ দিনেও লাশ ফেরত না আসায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ও স্বজনরা ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্প ঘেড়াও করে। ঘটনার পর নিহত বাপ্পার বাবা আবদুল রউফ লাশ ফেরত চেয়ে বিজিবির কাছে লিখিত আবেদন করেন।
রোববার ২১ মার্চ দূপুরে ভারত সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে লাশ ফেরত নিতে বিজিবিকে চিঠি দেয় বিএসএফ। তখন বিজিবি লাশ নেওয়ার বিষয়টি পরে বিএসএফকে জানাবেন বলে পতাকা বৈঠকের সমাপ্তি করে চলে আসেন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকা ভারতের কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার জানান, বিজিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিজিবিকে লাশ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। বিজিবি লাশ নেওয়ার ব্যাপারে পরে জানাবেন বলে বৈঠকে বলেন।
সে অনুযায়ী সোমবার দূপুরে নিহত বাংলাদেশী যুবক বাপ্পার লাশ নিয়ে বিএসএফ সীমান্তে অপেক্ষা করে। পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী সীমান্তের জিরোপয়েন্ট এলাকায় বিএসএফ লাশ ফেরৎ দেয়ার বিষয়টি দেখতে পান। এর পরও বিজিবি লাশ ফেরতে কোন উদ্যেগ না নেয়ায় গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ঘেড়াও করে বিজিবি ক্যাম্প।
একটি সূত্র জানায়, ২০ মার্চ সকাল ১১ টায় লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ভারতের কদমতলা পুলিশের তত্ত¡াবধায়নে ধর্মনগর হাসপাপাতালে ময়না তদন্ত শেষে হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয় নিহত বাংলাদেশী যুবক বাপ্পার লাশ। সোমবার দূপুরে বিএসএফ একটি গাড়ীতে করে বাপ্পার লাশ সীমান্তের জিরো রেখায় নিয়ে আসে ফেরৎ দেয়ার জন্য এবং প্রায় ১ ঘন্টা অপেক্ষা করে। বাংলাদেশের পক্ষে লাশ গ্রহন না করায় লাশ ফেরৎ নিয়ে যায় বিএসএফ। লাশ ফেরৎ নেয়ার বিষয়টি দেখে নিহতের পরিবার ও গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষুভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জানতে দূপুর থেকে বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিইও) শাহ আলম সিদ্দিকীকে তাঁরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিকেলে লাশ গ্রহনের কিছু আগে সাংবাকিদের জানান লাশ গ্রহনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিলম্বের কারণ জানাননি।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চ শনিবার ভোরের দিকে উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের পূর্ব বটুলী এলাকায় বাংলাদেশি পিলার ১৮২২ এর বিপরীত পাশে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার অভ্যন্তরে ওই যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়।
এদিকে নিহত বাপ্পার মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, সন্তান সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর মধ্যে লাশের অপেক্ষায় গত ৩ দিন থেকে আহাজরী চলে।
ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মইনুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যার কিছু আগে বাপ্পার লাশ বাড়িতে পৌছায়। পরে বাদ এশা নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন