বাংলা সিনেমায় ভিলেন হিসেবে পরিচিত মুখ আশরাফুল হক ডন। খলনায়কের ভূমিকায় নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন বরাবরই। প্রতিভার সাক্ষর রেখে বাংলা সিনেমাতে বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। নেতিবাচক চরিত্রে থাকলেও তার অভিনয় দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ খুব কমই আছে। এই চলচ্চিত্রে খলনায়ক হওয়ার আগে মসজিদে আযান দিতেন তিনি। মসজিদের মুয়াজ্জিনের ভুমিকা পালন করতেন। ডন নিজেই জানিয়েছেন এ তথ্য।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান তার ‘ডন’ হয়ে ওঠার গল্প। অভিনেতার বাইরে তিনি একজন সম্পূর্ন সাধারণ মানুষ, মসজিদে নিয়মিত আজান দেয়ার পাশাপাশি নামাজও পড়াতেন। সিনেমায় যে ডনকে সবাই চিনেন বাস্তবের ডন আসলে একবারেই আলাদা। খুবই আড্ডা প্রিয়। যার মধ্যে সিনেমার অভিনেতার কোন বালাই নেই। এমনটাও জানিয়েছেন এই অভিনেতা।
১৯৭১ সালে বগুড়ায় জন্ম নেয়া ডন ঢাকায় আসার পর পরিচিত হন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের সাথে। মূলত সেখান থেকেই তার চলচিত্র জগতে আসা। সোহানুর রহমানই তাকে প্রথম সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেন। ডন অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। যে সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় ছিলেন সালমান শাহ। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ এর সাথে এরপরই বন্ধুত্ব শুরু। যার প্রমাণ পাওয়া যায় সালমান শাহ অভিনীত ২৭টি সিনেমা থেকে ২৪টিতেই খলনায়কের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
ডন অভিনীত হিট সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘বিক্ষোভ’, ‘এ জীবন তোমার আমার’, ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘তোমাকে চাই’, ‘ফুলের মত বউ’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘মিলন হবে কত দিনে’, এবং ‘বিয়ের ফুল’।
ডন অভিনীত ছবির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬শ’ । চলচ্চিত্র ছাড়াও বেশ কয়েকটি টিভি নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। কৌশিক হোসেন তাপস পরিচালিত ‘কত ভালোবাসি তোমাকে’ টেলিফিল্মে নায়িকা জনার বিপরীতে নায়কও ছিলেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি ‘এক জনমের ভালোবাসা’ নামে একটি চলচ্চিত্রও প্রযোজনা করেন। গড়ে তুলেছেন ব্যান্ড দল ‘আর্কাইভ’। জড়িত আছেন নানা রকম সামাজিক কর্মকাণ্ডে। এক সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। পর্দার নেতিবাচক মুখোশের বাইরে ডন যে একজন ইতিবাচক চরিত্র সেটা তার কর্মকাণ্ডেই প্রমাণ পাওয়া যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন