বাংলাদেশে মসজিদ মাদরাসায় হামলা ও ১৯ জন নিরীহ-নিরপরাধ মাদরাসা ছাত্রকে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিউইয়র্কের উলামায়ে কেরাম। তারা বলেন, ২৬শে মার্চ শুক্রবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররামে বিনা উস্কানিতে নামাজরত মুসল্লিদের উপর সরকারি পৃষ্টপোষকতায় সন্ত্রাসী হামলা প্রমাণ করে বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলমানরা নিরাপদ নন। প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও শান্তিপ্রিয় দ্বীনদার মুসলমানের উপর এমন বর্বরোচিত হামলা প্রমাণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত দেশ বিরোধী একটি অপশক্তি সিন্দাবাদের ভূতের মতো সরকারের ঘাড়ে চেপে বসে আছে। এই চক্রটি বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। দেশপ্রেমিক সকল মানুষের উচিত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, ঈমান ও ইসলামের পক্ষে মজবুতভাবে দাঁড়ানো।
গত ৩০ মার্চ মংগলবার নিউইয়রকের ব্রঙ্কস উলামা সোসাইটি নিউইয়র্ক-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ ও দোয়া মাহফিলে উলামায়ে কেরাম কথাগুলো বলেন। নিউইয়র্কের প্রবীন আলিম মাওলানা আজির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং দারুল আহনাফ নিউইয়র্কের প্রিন্সিপাল মাওলানা হামিদুর রহমান আশরাফের উপস্থাপনায় আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মাহফিলে নিউইয়র্কের অর্ধশতাধিক ইমাম ও উলামা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন দারুল উলুম নিউইয়র্কের শায়খুল হাদিস মাওলানা আজিজুর রহমান, দারুল উলুমের সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়ামিন হোসাইন, জামেয়া কুরআনিয়া একাডেমি জ্যামাইকার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, দারুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহর মুহাদ্দিস মাওলানা হাম্মাদ গাজিনগরি, আননূর কালচারাল সেন্টারের প্রিন্সিপাল মুফতি মোহাম্মাদ ইসমাঈল, আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের প্রেসিডেন্ট হাফিজ রফিকুল ইসলাম, দারুল আহনাফ নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট মাওলানা রশীদ জামীল, মাওলানা মনজুরুল করিম, মসজিদুল মুমিনিনের ইমাম খতিব মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, দারুল উলুম জ্যামাইকার উস্তাদ মাওলানা জাহেদুর রহমান, শাহজালাল ইসলামিক সেন্টার নিউ ইয়র্কের ইমাম ও খতীব মাওলানা শেখ সাজ্জাদুর রহমান, মাওলানা ফাহিম আহমদ, বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আব্দুল্লাহ কাফি, মাওলানা মনির হোসাইন খান, মাওলানা মুজিবুর রহমান, ব্রঙ্কস মুসলিম সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা রুহুল আমিন, শামসুল করিম ফয়সল, ওয়েস্ট ব্রঙ্কস মসজিদের ইমাম মাওলানা এনামুল হক, মাওলানা আহমদ হোসাইন, মাওলানা শাহেদ আহমদ, বায়তুল আমান ইসলামিক সেন্টারের সহকারী ইমাম হাফিজ তাসলিম উদ্দিন প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তাগণ আরো বলেন, বাংলাদেশের দেশ প্রেমিক মুসলমানগণ উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। মানুষের দাবি ছিল, বর্তমান বিশ্বের নাম্বার ওয়ান সাম্প্রদায়িক নেতা, হাজারো মুসলমানের রক্তে যার হাত রাঙানো, যার নেতৃত্বে বাবরী মসজিদকে মন্দিরে পরিণত করে দেড়শ কোটি মুসলমানের কলিজায় আঘাত দেয়া হয়েছে, যার পৃষ্টপোষকতায তার দেশের আদালত পবিত্র কুরআনের ২৬টি আয়াত পরিবর্তন করার দৃষ্টতাপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, সেই নরেন্দ্র মোদিকে ৯০% মুসলমানের বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে দাওয়াত করে নিয়ে আসা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির গৌরবময় একটি দিনে একজন সাম্প্রদায়িক নেতাকে দাওয়াত করে এনে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে কলংকিত করতে দেওয়া যায় না।
দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক ভাষায় নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকার জনগণের দাবিকে পাত্তা না দিয়ে উল্টো তাদের উপর পুলিশি অত্যাচার শুরু করে। সর্বশেষ ঢাকা চট্টগ্রাম ও বি: বাড়িয়ায় ১৭ জন মুসলমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সভ্য পৃথিবীর স্বাধীন একটি দেশে এমন আচরণ মোটেও কাম্য হতে পারে না।
সভায় নিহত পরিবারগুলোকে আর্থিক ক্ষতি পূরণ প্রদান, আহতদের সরকারি খরচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি ও এসংক্রান্ত সকল মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।
শহিদানের মাগফিরাত কামনা করে মুনাজাতের মাধ্যমে সভা শেষ হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা ইয়ামিন হোসাইন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন