বাংলাদেশী খাদ্যের উৎসব। তাও খোদ নিউইয়র্কে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মত আয়োজিত এধরনের ইভেন্টে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশীর পাশাপাশি আমেরিকার রাজনীতিবিদ এবং আমেরিকায় জন্ম নেয়া নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীরা অংশগ্রহন করেন। ফ্রেস ফুড এন্ড বেভারেজ এর আয়োজনে খাদ্য উৎসবের মূল আকর্ষন ছিলেন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সেফ টমি মিয়া। যুক্তরাজ্য প্রবাসী এ সেফ দু’দিন আগেই লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে এসে পৌঁছান। রোববার নিউইয়র্কের ওয়াল্ড ফেয়ার মেরিনায় আয়োজিত এ খাদ্য উৎসবে টমি মিয়া উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে সরাসরি ‘চিকেন টিক্কা মশলা’ তৈরি এবং পরিবেশন করেন। এতে অভিভূত হন উপস্থিতিরা। খাদ্য উৎসবে টমি মিয়া’র আরেক পরিবেশনায় ছিল কাটাবিহীন ইলিশ মাছের আইটেম। এটা খেয়ে উপস্থিত আমেরিকানরা ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। টমি মিয়াকে সার্বিক সহযোগিতা করেন নিউইয়র্কের আলোচিত সেফ খলিল বিরিয়ানীর স্বত্বাধিকারি মো:খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠানটির টাইটেল স্পন্সর ছিল উৎসব গ্রপ।
এর আগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশী ফ্রেস এবং হালাল খাদ্য সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করার ওপর জোর দিয়েছেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম,সিনেটর জন লু, উৎসব গ্রপের সিইও রায়হান জামান,নির্বাচিত জজ সোমা সাঈদ, টমি মিয়া, মো: খলিলুর রহমান, এমরান ভূঁইয়া, জন ফাহিম, ইসমাইল আহমেদ, মিসবাহ আবেদীন,মোহাম্মদ চৌধুরী,টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাদ্যের ওপর একটি প্রামান্য চিত্র উপস্থাপন করেন ডা. প্রফেসর জিয়াউদ্দিন আহমেদ। টমি মিয়ার জীবনী’র উপর প্রদর্শীত হয় একটি প্রামান্যচিত্র। অনুষ্ঠানের মাঝখানে কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করে এ প্রজন্মের শিশু কাব্য।এছাড়া অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজক ফ্রেস ফুড এন্ড বেভারেজ এর স্বত্বাধিকারি আল আমিন রাসেল শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী খাদ্যের পরিচিতি তুলে ধরার জন্যই তিনি এ আয়োজন করেছেন। আর এটাই এ অঞ্চলে প্রথমবারের মত আয়োজন করা হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশী খাদ্যকে বিদেশীদের কাছে পরিচিতি করতে আগামী বছর বেশ কয়েকটি ইভেন্ট করার পরিকল্পণা নেয়া হয়েছে।
কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশী খাদ্য পরিচিতি তুলে ধরার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। বাংলাদেশী খাদ্যকে বিশ্বে তুলে ধরাতে টমি মিয়া যে প্রয়াস চালাচ্ছেন তা জানলাম। টমি মিয়ার মত এখানে (যুক্তরাষ্ট্র)ও অনেকে আছেন। বাংলাদেশী খাদ্য ও কালচারের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় করতে পারি। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের ৫০ বছর উদযাপন চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজন এতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
আগামী বছর নিউইয়র্কে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করা হবে উল্লেখ করে টমি মিয়া জানান, তিন দিন ব্যাপি এ অনুষ্ঠানে পান্তা-ইলিশ সহ বাংলাদেশী বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হবে। তিনি জানান, তার অন্যতম আইটেম ফ্রাইড চিকেন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শুধু লন্ডন নয়, বাংলাদেশের ঢাকা ও সিলেট সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে এ ফ্রাইড চিকেন। যুক্তরাষ্ট্রেও এ আইটেমের চাহিদা রয়েছে উলেখ করে তিনি বিনিয়োগকারিদের প্রতি আহব্বান জানিয়ে বলেন, ব্যবসায় রিটার্ন এর হারও অনেক ভাল। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহব্বান জানান টমি মিয়া।
মো: খলিলুর রহমান জানান, বিরিয়ানী সহ বাংলাদেশী বিভিন্ন খাদ্য প্রমোট করতে তিনি নিউইয়র্কে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যের ওপর ডিপ্লোমা করা খলিল বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন ইন্সটিটিউট স্থাপন করা হয়নি। এ ব্যাপারে সরকারকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন