গোপালগঞ্জে রোগী সেজে ঘরে ঢুকে এক গ্রাম ডাক্তারকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ সদরের রঘুনাথপুর পূর্ব দক্ষিণপাড়ায় মহাজন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গ্রাম ডাক্তার সন্তোষ বিশ্বাসকে (৫৫) গুরুতর অবস্থায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই রাতে ডাক্তারের প্রতিবেশী শংকর পাটারি (২২) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
এসময় ডাক্তারকে জবাই করে হত্যা চেষ্টা কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়।
গ্রাম ডাক্তার সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে আমার ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। পাশের বাড়ির স্বপন পাটারির ছেলে শংকর পাটারি এসে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। এসময় তার এ্যাজমার ওষুধ লাগবে বলে আমাকে জানায়। আমি দরজা খুললে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শংকর পাটারি ধারালো ছুরি দিয়ে আমার গলায় পোচ দেয়। আমি ঠেকাতে গেলে ওই ছুরির আঘাতে আমার দুটি আঙ্গুল কেটে যায়।
ডাক্তারের প্রতিবেশী রঘুনাথপুর গ্রামের রনজিৎ বিশ্বাস (৪৫) বলেন, চিৎকার শুনে আমরা ডাক্তারের বাড়িতে দৌড়ে যাই। সেখানে গিয়ে ঘরের দরজার সামনে তাকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পরে তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সার্জারী বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. সোহেল উল্লাহ বলেন, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে একজন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক মোবাইল ফোনে আমাকে বিষয়ুিট জানান এবং দ্রæত আসতে বলেন। আমি তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে দেখি রোগীর গলায় ধারালে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এতে তার গলায় প্রায় ১০ সে.মি. অংশ কেটে যায়। সেখানে ২৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। অল্পের জন্য শ্বাসনালীটি কাটেনি। এছাড়াও হাত দিয়ে ঠেকানোর কারনে তার হাতের দু’টি আঙ্গুলও কেটে যায়। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি এখন শঙ্কা মুক্ত।
গোপালগঞ্জ সদর থানার উপ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ওই রাতেই শংকর পাটারিকে আটক করেছি। এছাড়া গ্রাম ডাক্তরকে জবাই করে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। ৪/৫ দিন আগে শংকর পাটারি গ্রাম ডাক্তার সন্তোষ বিশ্বাসের পুকুর পাড়ের আম গাছ থেকে আম পাড়ে। এনিয়ে সন্তোষ বিশ্বাস তাকে চড় থাপ্পড় মারেন। এতে সে ক্ষুদ্ধ হয় এবং তাকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
প্রৃসঙ্গত, প্রায় ৩ ভছর ধরে সন্তোষ বিশ্বাস একাই তার বাড়িতে থাকেন। তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে বর্তমানে ভারতে বসবাস করছেন। সে গোপালগঞ্জ সদরের রঘুনাথপুর পূর্ব দক্ষিণ পাড়ার মহাজনবাড়ির সতীশ বিশ্বাসের ছেলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন