বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামে স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শুক্রবার দুপুরে ২ সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর তার স্বামীর বিরুদ্ধে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের মন্নান মোল্লার মেয়ে শিল্পী বেগমের সাথে ২০০৯ সালে চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মিজানুরকে শিল্পীর বাবা মন্নান মোল্লা মিজানুরকে ২টি গরু, ১ ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন, মেয়ের কানের দুল, নগদ ২০ হাজার টাকা ও সংসারের যাবতীয় মালামাল দিয়ে দেন। বিয়ের পর শিল্পীর কোল জুরে আসে ২টি সন্তান। বড় ছেলে সিয়াম (১০) ও মেয়ে সুমনা (৭)। ২ সন্তান জন্মের পর থেকেই অসৎ চরিত্রের মিজানুর রহমান বিভিন্ন মেয়েদের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে। শিল্পী মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে তখন তার বাবার নিকট থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। টাকা এনে দিলে কিছুদিন শান্ত থাকত মিজানুর। পরবর্তীতে পরকীয়ায় বাধা এবং মিজানুরের চাহিদা মত টাকা না এনে দিলেই আবার শিল্পীর উপর চলত নির্যাতন। এভাবে শিল্পী তার বাবার নিকট থেকে অনেক বার স্বামীর মন রক্ষার জন্য টাকা এনে দিয়েছে। নির্যাতনের এ বিষয় নিয়ে গ্রামে একাধিক বার সালিস বৈঠকও হয়েছে। ঘটনার দিন শুক্রবার সকালে স্বামী মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে শিল্পীর উপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন। তাকে কিল ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে বেধরক মারধর করে। মিজানুরের মারধরে অজ্ঞান হয়ে পরে শিল্পী। এক পর্যায়ে মিজানুর তার পথের কাটা সরিয়ে দেওয়ার জন্য শিল্পীকে হত্যার জন্য তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এ অবস্থায় শিল্পীকে তার স্বামী মিজানুর মৃত ভেবে টেনে হেচরে নিয়ে বাড়ির সামনের সড়কের পাশে ফেলে রাখে। এঘটনায় ছেলেকে সহযোগিতা করে মিজানুরের মা রিজিয়া বেগম। প্রতিবেশীদের মাধমে এঘটনার খবর পেয়ে শিল্পীর ভাই আলামিন ছুটে এসে তার বোন শিল্পীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমতলী হাসপাতালে আনার পর শিল্পীর অবস্থা মুমুর্ষ হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. হিমাদ্রী রায় জানান, শিল্পীর শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এবং বিষের প্রভাবে তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল।
শিল্পীর ভাই আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, মিজানুর অসৎ চরিত্রের এবং পরকীয়ায় আসক্ত একজন যৌতুক লোভী লোক। আমার বোন মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে যৌতুক চাইত। টাকা দিলে কিছু দিন শান্ত থাকত। আবার নির্যাতন করত। শুক্রবার আমার বোন মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে বেধরক মারধর করে এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার মুখে বিষ ঢেলে হত্যা চেষ্টা চালায়।
আমতলী থানার এসআই মো. সোহেল জানান, মিজানুরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, ঘটনা জানার পর পুলিশ পাঠিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন