খেলোয়াড়দের মধ্যে বৈচিত্র্য বাড়াতে অনন্য এক উদ্যোগ নিয়েছে ফিনল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশন। এই খেলায় সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ যেন আগ্রহ পায়, সেটা নিশ্চিত করতে মুসলিম খেলোয়াড়দের হিজাব উপহার দিচ্ছে ফেডারেশন। বিশেষ এই উদ্যোগটি নিয়েছেন ফিনল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নারী ফুটবল উন্নয়ন বিভাগের প্রধান হেইডি পিহলাজা। তিনি জানিয়েছেন, যেসব খেলোয়াড় হিজাব পরতে আগ্রহী, তাঁদের হিজাব উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তারা। এরই মধ্যে অনেকেই এই হিজাব নিয়েছেন।
পিহলাজা জানিয়েছেন, সাংস্কৃতিক বৈসাদৃশ্য ও খরচের কারণে অনেক শিশুই ফুটবলে আগ্রহ থাকা সত্তে¡ও খেলতে পারছে না। ফিনল্যান্ডে অভিবাসীদের খেলাধুলায় আগ্রহী করাতেই এ উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পিহলাজা, ‘ফিনল্যান্ডে অভিবাসী মেয়েদের ফুটবলে আনা খুব কঠিন। ধর্ম যা-ই হোক না কেন, কিংবা স্কার্ফ পরতে চাক বা না চাক- আমরা তাই সবাইকে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যবস্থা করেছি।’
রাজধানীর হেলসিংকির ভান্তা অঞ্চলের ক্লাব ভিজেএসে খেলে নাস্রো বাহনান হালবাদে। এক বছর ধরে ফুটবল খেলছে সে। ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরী হিজাব নিয়ে উচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছে, ‘সাধারণ হিজাবের মতো বাতাসে বেশি ওড়ে না এবং এটা শার্টে ঢুকিয়ে রাখতে হয় না।’ তার সতীর্থ কামিলা নুহও বিশেষ এই স্কার্ফের প্রশংসা করেছে, ‘এটা পরে দৌড়ানো সহজ।’ দুই বছর ধরে ভিজেএসে খেলছে নুহ। মা-বাবার কাছ থেকে বিশেষ স্কার্ফ পাওয়ার খবরটা পেয়ে খুশি হয়েছে সে। পিহলাজার ধারণা, এভাবে হিজাব দিয়ে সবার মধ্যে খেলাটা ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হবে। অনেকেই এই প্রকল্পকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তবে অনেকেই সমালোচনা করছেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের নীচু করা হচ্ছে অথবা ধর্মকে খেলায় টেনে আনা হচ্ছে।’
২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে। ১৫টি দেশের মধ্যে ফিনল্যান্ডেই মুসলিমবিরোধী আচরণের তীব্রতা বেশি। এর মধ্যে এমন প্রকল্প দেশটির কড়া ডানপন্থী রাজনীতির রোষানলে পড়তে পারে। তবে পিহলাজা সমালোচনায় পাত্তা দিচ্ছেন না, ‘একজন নারী স্কার্ফ পরতে চায় কি চায় না, তার অধিকারকে আমরা সমর্থন দিই। যদি তারা সেটা ব্যবহার করতে চান, আমরা তাঁদের সাদরে গ্রহণ করতে চাই এবং মাথার স্কার্ফ কোনো বাধা নয়।’ কামিলা নুহরা ফিহলাজার এই প্রকল্পের পূর্ণ সুবিধা নিতে চায়। লিভারপুলের ভক্ত নুহ জানিয়েছে, ‘আমি ফুটবল খেলা বন্ধ করতে চাই না। আমি ওদের (নারী ফুটবলার) একজন হতে চাই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন