নদীতে পলিমাটি জমার কারণ ও উৎস উদ্ঘাটনে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের আর্থিক সহযোগিতায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গবেষণার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনে (বিআইডব্লিউটিসি) শূন্য পদের সংখ্যা এক হাজার ৮৭৭টি।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, মাহফুজুর রহমান ও মো. আছলাম হোসেন সওদাগর।
বৈঠকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল ২০২১ এর ওপর প্রস্তুতকৃত রিপোর্ট নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক রিপোর্ট দিতে কমিটিতে প্রেরিত মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল, ২০২১ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সংযোজন, সংশোধন ও পরিমার্জনের পর বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের উদ্দেশে সংশোধিত আকারে সংসদে রিপোর্ট দিতে কমিটি সুপারিশ করে।
বিআইডব্লিউটিসির আয়-ব্যয়ের বার্ষিক বিবরণী পৃথকভাবে আগামী বৈঠকে উপস্থাপন এবং যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে, নিরাপদে এবং দ্রুততম সময়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সুপারিশ করে কমিটি। এসব শূন্য পদে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংস্থাটিতে বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণির চার হাজার ৭৮০টি পদের বিপরীতে দুই হাজার ৯০৩ জন কর্মরত আছেন।
কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, সংস্থাটিতে প্রথম শ্রেণির ১৭০টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩১ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ৪৩৮টি পদের মধ্যে কর্মরত ২৪০ জন এবং শূন্য আছে ১৯৮টি। তৃতীয় শ্রেণির দুই হাজার ২৯২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন এক হাজার ৩৭৬ জন, খালি আছে ৯১৬টি। চতুর্থ শ্রেণির এক হাজার ৮৮০টি পদের মধ্যে কর্মরত এক হাজার ১৫৬ জন এবং শূন্য আছে ৭২৪টি পদ। বৈঠকে সংস্থাটির গত ৫ অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাবও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২০ কোটি ৩৭ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২১ কোটি ৮০ লাখ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯ কোটি ৯৭ লাখ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ কোটি ৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। তবে কমিটি এই হিসাবকে অসম্পূর্ণ উল্লেখ করে পরবর্তী বৈঠকে আয়-ব্যয়ের বার্ষিক বিবরণী খাতভিত্তিক পৃথকভাবে উপস্থাপনের সুপারিশ করেছে। এই বিষয়ে কমিটির সদস্য মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিআইডব্লিউটিসি আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কোন খাতে কত ব্যয় হয়েছে, কোন নৌযান কত দামে কেনা হয়েছে তা তাদের প্রতিবেদন থেকে জানার সুযোগ নেই। এজন্য আমরা পরবর্তী বৈঠকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলেছি।
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসির পরিকল্পনায় ঘাটতি রযেছে। তারা ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচলের জন্য দুটো জাহাজ কিনছে। কিন্তু এটা কতটা কার্যকর হবে তা চিন্তা করা হয়নি। পদ্মা ব্রিজ হওয়ার পরে খুলনা যেতে ৪-৫ ঘণ্টা সময়ও লাগবে না। সেখানে মানুষ নৌপথে ১৪/১৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে যাবে কিনা সেটা ভাবা দরকার ছিল।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন