শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঈদে ঘরমুখি জনস্রোত শুরু হলেও বিআইডব্লিউটিসি’র নৌযান চলছে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৯, ৬:৫৮ পিএম

ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখি জনস্রোত শুরু হলেও রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থার নৌযানে যাত্রী নেই। এবার ঈদের আগে-পড়ে অন্তত দশ লাখ যাত্রী নৌপথে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করবে বলে আশা করছে দায়িত্বশীল মহল।
গত ৩০মে থেকে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে বিআইডব্লিউটিসি বাড়তি নৌযানে ‘বিশেষ সার্ভিস’ চালু করলেও ‘যাত্রীবান্ধব সময়সূচী’র অভাবে ঐসব নৌযান চলছে অনেকটা ফাঁকা অবস্থায়। ফলে এসব নৌযান যাত্রীদের তেমন কোন উপকারে আসছে না, তেমনি সংস্থাটির লোকশানের পাল্লা ও ভারী হচ্ছে। অথচ বেসরকারি নৌযানগুলো চলছে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশী যাত্রী নিয়ে। শুধুমাত্র ‘যাত্রী বান্ধব সময়সূচী’ অনুযায়ী চলাচল না করায় সরকারী সংস্থাটির নৌযান ঢাকা ও বরিশাল থেকে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে বলে অভিযোগ ওয়য়াকিবাহল মহলের।

গত ৩০মে বিআইডব্লিউটসি’র ‘পিএস টার্ণ’ জাহাজটি নিয়মিত রকেট স্টিমার সার্ভিসে ঢাকা থেকে সন্ধা সাড়ে ৬টায় ধারন ক্ষমতার অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরÑবরিশাল-মোড়েলগঞ্জের উদ্যেশ্যে যাত্রী করে। চাঁদপুর থেকে আরো শ দুয়েক যাত্রী নৌযানটিতে আরোহন করলেও বরিশাল বন্দরে অর্ধেকেরও বেশী ফাঁকা হয়ে যায়। ঐদিনই সন্ধা ৭টায় ‘এমভি মধুমতি’ নামের একটি স্ক্র-হুইল নৌযান বিশেষ সার্ভিসে চাঁদপুর-বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের হুরারহাটের উদ্যেশ্যে যাত্রা করে। সাড়ে ৭শ যাত্রী বহনক্ষম আড়ইগুনেরও বেশী জ্বালানী ব্যায়ের ঐ নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ২শরও কম। অথচ ঐদিনই রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে বেসরকারী অন্তত ১০টি নৌযান বরিশালের উদ্যেশ্যে ধারন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুন যাত্রী নিয়ে ঢাকা বন্দর ত্যাগ করে।
মূলত বিঅইডব্লিউটিসি’র নৌযানগুলো যে সময়ে ঢাকা থেকে ছাড়ছে, তখন বেশীরভাগ যাত্রীর পক্ষেই সদর ঘাটে পৌছান সম্ভব হয়না। ফলে এসব নৌযানে ভ্রমনে যাত্রীদের তেমন কোন আগ্রহও থাকছেন। যাত্রী সাধারনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যাবতই সংস্থাটির নিয়মিত রকেট সার্ভিসের নৌযানগুলো ঢাকা থেকে সন্ধা ৭টা এবং ঈদের বিশেষ সার্ভিসের নৌযানসমুহ রাত সাড়ে ৮টার পরে যাত্রা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

কিন্তু কখনোই সংস্থার দায়িত্বশীল মহল এসব বিষয় আমলে নেননি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ফলে বেসরকারী নৌযানগুলো ঈদের আগে-পড়ে যেখানে ধারন ক্ষমতার তিনগুন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলতে বাধ্য হয়, সেখানে বিআইডব্লিউটিসি’র নৌযান অনুমোদিত ক্ষমতার যাত্রীও পায়না। ফলে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ঈদের আগে-পড়ে বিরুল মুনফা করলেও সরকারী সংস্থাটির যাত্রীবাহী সেক্টরে এসময়ে লোকশানের বোঝা আরো স্ফিত হয়। এবারো তার অন্যথা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির একাধীক সূত্র।
তবে এব্যাপারে শণিবার বিকেলে বিআইডব্লিউটসি’র যাত্রী সেবা ইউনিট প্রধান খালেদ নেওয়াজের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘রবিবার থেকে বিশেষ সার্ভিস-এর স্টিমারগুলো সন্ধা ৭টার পরিবর্তে রাত ৯টায় ঢাকা বন্দর ত্যাগ করবে’। তার মতে, ঢাকার সদর ঘাটে সংস্থার নৌযানগুলোকে মূল টার্মিনালে ভিড়তে দেয়া হচ্ছে না। এ কারেনও যাত্রী হচ্ছেনা।
এদিকে এবারো বিআইডিব্লিটিসি ঈদের আগে ৩০মে থেকে অপ্রেয়োজনীভাবে বিশেষ সার্ভিস চালু করলেও ঈদ পারবর্তি কর্মস্থলমুখি যাত্রীদের জন্য বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চল থেকে প্রয়োজনীয় স্টিমার রাখছেনা। যেখানে আগামী ১৬জুন যাত্রী পর্যন্ত কর্মস্থলমুখি জনশ্রোত অব্যাহত থাকবে, সেখানে ১১জুনের পরে সংস্থাটির কোন বিশেষ স্টিমার সার্ভিস থাকছে না। সংস্থাটির বরিশাল অফিস থেকেও ১৬জুন পর্যন্ত অন্তত বরিশালÑচাঁদপুর রুটে একটি বিশেষ স্টিমার সার্ভিস পরিচালন-এর চাহিদার কথা জানান হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে বরিশাল থেকে লক্ষীপুর রুটের জন্য সংস্থাটি ‘এসটি-খিজির-৮’ নামের একটি সীÑট্রাক বেসরকারী খাতে ইজারা দিলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে সে নৌযানটি ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষীপুর রুটে চলাচল করছে। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মরত যাত্রীদের এবার বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলেল বিভিন্ন গন্তব্যে পৌছতে চরম দূর্ভোগের পাশাপাশি ঝুকিতেও পড়তে হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন