শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঈদের আগে অপ্রয়োজনীয় বিশেষ সার্ভিস

কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের জন্য বিআইডব্লিউটিসির কোন সার্ভিস থাকছে না

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৯, ৬:৩৩ পিএম

এবারো ঈদ উল ফিতরের আগে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি গন্তব্যে ‘বিশেষ সার্ভিস’ পরিচালনা করে ঈদ পরবর্তি কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের জন্য হাত গুটিয়ে রাখছে রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থা-বিআইডবিব্লউটিসি। এমনকি এবারো সংস্থাটি চট্টগ্রাম-বরিশাল রুটে কোন যাত্রীবাহী নৌযান পরিচালনা করছে না। নৌযানের কারিগরি ত্র“টির কথা বলে ২০১১-এর মধ্যভাগ থেকে সার্ভিসটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অথচ এ রুটের জন্য ২০০৯ সালে দুটি নৌযান আধুনিকায়ন ও পূণর্বাসন করা হয়। ২০০২ সালে নতুন আরো একটি নৌযান সংগ্রহ করা হয়েছিল। এমনকি এবারের ঈদে বরিশালÑলক্ষ্মীপুর রুটে সংস্থাটির কোন সীÑট্রাক সার্ভিসও থাকছে না। অথচ গত ২০বছরে সরকারী অর্থে নতুন ১২টি সী-ট্রাক সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। উপরন্তু উপক’লীয় নৌপথের জন্য সরকার এ সংস্থাটিকে প্রতি বছর নগদ ৫০ লাখ টাকা ভতর্’কিও প্রদান করে আসছে।
তবে এবার রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা-বিমান বাংলাদেশ ঢাকা-বরিশাল সেক্টরে আগামী ৩ জুন একটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ফলে ২ জুন থেকে ঈদের পরের দিন ৭ জুন পর্যন্ত বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট থাকছে বিমান-এর। বেসরকারী দুটি এয়ারলাইন্সও পুরো সপ্তাহ যুড়ে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে ৮ জুন বিমান-এর আরো একটি বিশেষ ফ্লাইট চালানোর দাবী রয়েছে যাত্রী সাধারনের পক্ষ থেকে। বিষয়টি নিয়ে সদর দপ্তরে চাহিদা দেয়া হয়েছে বলে জনিয়েছে বরিশাল বিমান অফিসের দায়িত্বশীল সূত্র।
এবার ঈদের আগে ও পড়ে অন্তত ১০ লাখ মানুষ রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করবে। বিআইডব্লিউটিসি ৩০ মে থেকে ঢাকা থেকে বিশেষ স্টিমার সার্ভিস পরিচালন-এর কথা জানিয়েছে। যদিও ঈদ পূর্ববর্তি মূল ভীড় শুরু হচ্ছে ২ জুন। বেসরকারী নৌযান মালিকগন ২ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিনই ডবল ট্রিপে অন্তত ২০টি যাত্রীবাহী নৌযান শুধু ঢাকাÑবরিশাল রুটে পরিচালনা করবে। এছাড়াও ভোলা ও পটুয়াখালী সহ দক্ষিণাঞ্চলের আরো বিভিন্ন রুটগুলোতেও ২ জুন থেকে বিশেষ সার্ভিসে বাড়তি নৌযান নিয়োজিত থাকছে। অনুরূপভাবে ঈদ পরবর্তিকালে ৮ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিশেষ নৌযান পরিচালনা করবে বেসরকারী নৌযান কতৃপক্ষ। এ সময়কালে শুধুমাত্র বরিশাল নদী বন্দর থেকেই প্রতিদিন অন্তত ২০টি করে বেসরকারী নৌযান ঢাকার উদ্যেশ্যে ছেড়ে যাবে। পুরো সপ্তাহ যুড়েই প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করবে বেসরকারী নৌযানগুলো।
কিন্তু রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠান ৮, ৯ ও ১০ জুন তিনটি বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করেই হাত গোটাচ্ছে। অথচ ঈদের দিন অপ্রয়োজনীয়ভাবেই সংস্থাটি বিশেষ সার্ভিস চালু রাখছে। সংস্থাটির হাতে থাকা নতুন পুরনো ৭টি যাত্রীবাহী নৌযানের দুটি বেসরকারী খাতে বিনা দরপত্রে ইজারা দেয়া হয়েছে। পিএস মাহসুদ নামের অপর একটি নির্ভরযোগ্য ও যাত্রীদের কাছে অধিক গ্রহনযোগ্য নৌযান সারা বছর পরে রোজার আগে মেরামতে পাঠান হয়েছে। নৌযানটি ঈদের পরে ৭ জুন যাত্রী পরিবহনে ফেরার কথা বলা হয়েছে। অবশিষ্ট দুটি প্যাডেল জাহাজের সাথে বছর পাঁচেক আগে সংগ্রহ করা আড়াইগুন বেশী জ্বালানী ব্যয়ের দুটি স্ক্রু-হুইল নৌযান দিয়ে নিয়মিত ও ঈদের বিশেষ সার্ভিস পরিচালন-এর কথা ঘোষনা করেছে সংস্থাটি।
কিন্তু ৩০ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত নিয়মিত সার্ভিসের সাথে কয়েকটি বিশেষ সার্ভিস পরিচালন-এর পরে হাত গোটাচ্ছে সংস্থাটি। যেখানে ১৫ জুন পর্যন্ত ঈদ পরবর্তি কর্মস্থল মুখি যাত্রীতে ঠাশা থাকবে চাঁদপুর সহ রাজধানী মুখি সব নৌযান ও নদী বন্দরগুলো। সেখানে রাষ্ট্রীয় এ সেবা (?) প্রতিষ্ঠানটি ৮ জুনের পরে ৯ ও ১০ জুনের পরে আর কোন বিশেষ নৌযান পরিচালনা করছে না। অথচ ৮ জুন বরিশালÑঢাকা নৌপথে তেমন কোন ভীড় না হলেও সংস্থাটি ঐদিন নিয়মিত সার্ভিসের অতিরিক্ত একটি নৌযান বিশেষ সার্ভিস পরিচালন-এর কথা ঘোষনা করেছে। অপরদিকে বিআইডব্লিউটিসির নিয়মিত ও বমেস নৌযানগুলো ঢাকা ও বরিশাল থেকে ছাড়া সময় রয়েছে যথাক্রমে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা ও ৭টা। কিনতু ঐ সময়ে বেশীরভাগ যাত্রীই ঘাটে পৌছতে পারেনা। ফলে সংস্থার প্রায় সব নৌযানই ধারন ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রীও না পেয়ে পরিচালন ব্যয় তুলতে পারেনা। অথচ বেসরকারী নৌযানগুলো ঈদের আগে পরে তিনগুন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করে থাকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন