আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আগামীকাল থেকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের লাখ লাখ ঘরমুখো মানুষ নৌপথে ছুটতে শুরু করলেও আবহাওয়া খুব একটা অনুকুল না থাকার স¤া¢বনা রয়েছে। পাশাপাশি নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে বেসরকারী নৌযানগুলোর সাথে সরকারী নৌযানের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না। এমনকি যেসব নৌযানের সিডিউল করা হয়েছে, তাও যাত্রী বান্ধব হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে এবারের ঈদেও রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষরে জন্য লক্ষনীয় কোন উপকার করতে পারছে না। অথচ বর্ষা মওশুমে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ সরকারী নৌযানকে নিরাপদ ভেবে তাতে ভ্রমণে আগ্রহী হয়। আবহাওয়া বিভাগের মতে আজ সকালের পরবর্তি ৪৮ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লীয় এরাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবনতা বদ্ধির কথা বলা হয়েছ। পাশাপাশি ঢাকা থেকে শুররুর করে দক্ষিণাঞ্চলে ঘন্টায় -৫-৬০কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথা বলা হয়েছে। গতকালও দিন রাপতে দক্ষিণাঞ্চলে দমকা হাওয়া সহ দায় দফায় বষ্টি হয়েছে। সাগর উপক’ল কিছুটা উত্তাল রয়েছে। মওশুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে ।
আসন্ন ঈদ উল আজহাতে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ সারা দেশ থেকে অন্তত ১০লাখ যাত্রী দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। এলক্ষে বেসরকারী অন্তত ৩৫টি নৌযান ৩০আগষ্ট থেকেই প্রতিদিন ডবল ট্রিপে ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-ভোলা ও ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে চলাচল করবে। ফলে প্রতি ২৪ঘন্টায় এসব নৌপথে অšতত ৭০টি নৌযানে দেড় লাখ যাত্রী পরিবহন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এর বাইরেও আরো শতাধীক নৌযান ঢাকা থেকে দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহন করবে।
এঅবস্থাতেই সরকারী নৌ পরিবহন সংস্থাটি ঈদের আগে ৩০আগস্ট ও ৩১আগস্ট তার নিয়মিত রকেট স্টিমারের পাশাপাশি মাত্র ১টি করে নৌযান ঢাকা থেকে ছাড়বে। অথচ সংস্থাটির হাতে যাত্রীবাহী ৬টি নৌযান রয়েছে। তবে এসব বিশেষ স্টিমার ঢাকা থেকে সন্ধা ৭টায় ছাড়ার কথা বলা হয়েছে। নিয়মিত রকেট স্টিমার ছাড়বে সন্ধা সাড়ে ৬টায়। অথচ এসময়ের মধ্যে বেশীরভাগ যাত্রীই যানযট ও ভীড় সামাল দিয়ে ঢাকার সদর ঘাটেই পৌছতে পারবে না। এমনকি ঈদের আগের দিন ঢাকা থেকে কোন নিয়মিত রকেট স্টিমার থাকছে না। বিআইডব্লিউটিসি’র ‘এমভি মধুমতি’ নামের ১টিমাত্র নৌযান ঐদিন ঢাকা থেকে চাঁদপুর-বরিশাল, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর হয়ে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ পর্যন্ত চালানোর কথা জানিয়েছে। যার যাত্রী ধারন ক্ষমতা ১হাজারেরও কম।
তবে সংস্থাটির দায়িত্বশীল মহল এর চেয়েও উদ্বেজনক উদাশীণতার পরিচয় দিচ্ছে ঈদের পরে। কান্ডজ্ঞানহীনভাবে সংস্থাটি ঈদের পরদিনই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে ‘এমভি মধুমতি’ ও ‘পিএস লেপচা’ নামের ২টি নৌযান ঢাকায় পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে। আর ৪সেপ্টেম্বর নিয়মিত রকেট স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’এর পাশাপাশি ‘পিএস টার্ণ’ নামের আরো একটি প্যডেল জাহাজ ঢাকায় পাঠিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করছে। ৫সেপ্টেম্বর থেকে রাষ্টীয় মালিকানাধীন এ নৌ-বাণিজ্য সংস্থাটি দক্ষিণাঞ্চল থেকে কর্মস্থলমুখি মানুষের নিরাপদ ভ্রমণে আর কোন ব্যবস্থাই রাখছে না। অথচ ঈদ পরবর্তি কর্মস্থলমুখি কর্মজবী ও শ্রমজীবী মানুষের ভীড় শুরু হবে ৫সেপ্টেম্বর থেকে। যার মূল শ্রোত অব্যাহত থাকবে ৯সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেখানে বিআইডব্লিউটিসি ৪সেপ্টেম্বরের পরেই হাত গোটাচ্ছে।
এসব ব্যপারে গতকাল সংস্থাটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. জহান রঞ্জন শীল-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন। যাত্রী চাহিদার দিকে লক্ষ রেখে সংস্থার পক্ষ থেকে সম্ভব সবকিছু করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ থেকে গতকালের বুলেটিনে ভারতের উপক’লীয় উরিশ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ অবস্থানের কথা জানিয়ে মওশুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্র স্থল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যঞ্চল হয়ে উত্তরে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে বলে জানিয়েছে। বরিশাল ও খুলনা ছাড়াও উপক’লীয় এলাকায় অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বজ্র বৃষ্টির সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে। সেসাথে কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ভরি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা সহ আজ সকালের পরবর্তি ৪৮ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবনতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরকে ১নম্বর সতর্ক সংকেতও দেখাতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন